পসরা সাজিয়ে বসলেও গ্রাহক নেই শক্তিগড়ে। —নিজস্ব চিত্র।
লকডাউনে দুশ্চিন্তার বোঝে চেপেছে মাথায়। তার উপর শাকের আঁটি ২১-এর শহিদ স্মরণ। যা-ও বা দু’পয়সা রোজগারের আশা ছিল, সব মাটি করে দিল করোনা। তাতেই মাথায় হাত শক্তিগড়ের মিষ্টি ব্যবসায়ীদের। অন্য বছর শহিদ দিবস ঘিরে উন্মাদনা থাকে তুঙ্গে। সমাবেশে যোগ দিতে জাতীয় সড়কের হয়ে কলকাতা রওনা দেয় ঝাঁকে ঝাঁকে গাড়ি। যাওয়া আসার পথে গাড়ি থামিয়ে ল্যাংচা, মিহিদানা, সীতাভোগ খেয়ে যান দলে দলে মানুষ। কিন্তু করোনার প্রকোপে গত বছর থেকে উধাও সেই উন্মাদনা, মানুষের ভিড়। খাঁ খাঁ রাস্তার দিকে শুধু শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই ব্যবসায়ীদের।
করোনার প্রকোপ না কাটায় গত বছর থেকে ২১-এর সমাবেশ হচ্ছে না। বরং শহিদ স্মরণ হচ্ছে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই। তাতেই হতাশ শক্তিগড়ের মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, প্রতি বছর ২১ জুলাই উপলক্ষে দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ-সহ উত্তরবঙ্গ থেকে হাজার হাজার মানুষ কলকাতা রওনা দিতেন। ২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দিয়েই ছুটত ঝাঁকে ঝাঁকে গাড়ি। পথে শক্তিগড়ে জিরিয়ে নেওয়ার জন্য নামতেন যাত্রারী। তাতেই রাস্তার পাশের দোকানগুলি কার্যত মেলার আকার নিত।
মিষ্টি ব্যবসায়ী কৌশিক ঘোষ বলেন, ‘‘সমাবেশে যাওয়ার সময় শক্তিগড়ে গাড়ি থামিয়ে টিফিন করতেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। ফেরার পথেও খাওয়া দাওয়া সারতেন। ল্যাংচা, সীতাভোগ, মিহিদানা বাড়িও নিয়ে যেতেন। কিন্তু করোনায় সব ওলটপালট হয়ে গেল।’’
স্থানীয় মিষ্টি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শহিদ দিবসে ল্যাংচার দোকানে ভিড় সামলাতে পুলিশ নামাতে হতো। দোকানে জায়গা না পেলে, রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েই খাওয়া-দাওয়া সারতেন দলে দলে মানুষ। শুধু তাই নয়, প্যাকেট ভরে বাড়ির লোকজন এবং আত্মীয় স্বজনদের জন্যও ল্যাংচা, মিহিদানা কিনে নিয়ে যেতেন সকলেই। তাই শক্তিগড়ের ল্যাংচা ব্যবসায়ীদের কাছে ২১-এর সমাবেশ ছিল উৎসবের মতো। এক মাস আগে থেকে শুরু হতো প্রস্তুতি। কিন্তু এ বারে সে সবের কিছুই নেই। তাই মন খারাপ শক্তিগড়ের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy