Advertisement
E-Paper

ঝাড়ফুঁকে নষ্ট সময়, সর্পদষ্ট মহিলার মৃত্যু

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ডলি মালিক(৪২) নামে ওই মহিলা বুধবার সন্ধ্যায় মাটির বাড়িতে উনুনের কাছে বসে রুটি তৈরি করছিলেন। সেই সময়ে একটি সাপ তাঁর ডান হাতের কব্জিতে ছোবল দেয়। তার পরেই তাঁকে একটি ভ্যানে করে কুলেপাড়া লাগোয়া গোয়ালবাটী গ্রামে এক ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৮ ০৩:১০
ডলি মালিক।

ডলি মালিক।

সাপে ছোবল দেওয়ায় ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মহিলাকে। ঝাড়ফুঁক করে, জড়িবুটি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন ওঝা। কিন্তু তার পরে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মহিলাকে। কিন্তু, বাঁচানো গেল না তাঁকে। কালনার কল্যাণপুর পঞ্চায়েতের ঝেড়জামিরতলা এলাকার ওই মহিলাকে ঘণ্টাখানেক আগে নিয়ে আসা হলে হয়তো বাঁচানো যেত, মনে করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ডলি মালিক(৪২) নামে ওই মহিলা বুধবার সন্ধ্যায় মাটির বাড়িতে উনুনের কাছে বসে রুটি তৈরি করছিলেন। সেই সময়ে একটি সাপ তাঁর ডান হাতের কব্জিতে ছোবল দেয়। তার পরেই তাঁকে একটি ভ্যানে করে কুলেপাড়া লাগোয়া গোয়ালবাটী গ্রামে এক ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঘণ্টাদেড়েক ধরে চলে ঝাড়ফুঁক। তার পরে কিছু জড়িবুটি খাইয়ে ওঝা তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাড়ি পৌঁছনোর পরে রাতে ডলিদেবী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তাঁকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিজনেরা। আধ ঘণ্টা পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতার জামাই কার্তিক মালিক বলেন, ‘‘সাপে ছোবল দিলে তো এলাকার অনেকেই ওঝার বাড়িতে যান। তাই শাশুড়িকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলাম। এ বাবে তিনি মারা যাবেন ভাবিনি!’’

কালনা মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, যখন মহিলাকে নিয়ে আসা হয় তখন আর চিকিৎসার সুযোগ প্রায় ছিল না। হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘ঘণ্টাখানেক আগেও যদি ওঁকে হাসপাতালে আনা হত, হয়তো বাঁচানো যেত।’’ তিনি জানান, সাপে কাটার পরে দ্রুত যাঁদের হাসপাতালে আনা হয়, তাঁদের বাঁচানো সম্ভব হয়। সাপে ছোবল দিলে কী কী করণীয় তা জানাতে সম্প্রতি ধাত্রীগ্রাম এলাকায় একটি শিবিরও করা হয়। সম্প্রতি এলাকার মানুষকে সচেতন করার জন্য পূর্বস্থলী ১ ব্লকের উদ্যোগেও একটি আলোচনাসভার আয়োজন হয়। বিডিও পুষ্পেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাপে ছোবল দিলে তার পরে দু’ঘণ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যত দ্রুত সম্ভব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছতে হবে।’’

বিজ্ঞানমঞ্চের কালনা শাখার সদস্য তথা শিক্ষক তাপস কার্ফা জানান, তাঁরা নানা জায়গায় এ ব্যাপারে সচেতনেতামূলক শিবির করে থাকেন। তবে এখনও অনেক এলাকার মানুষ কুসংস্কারের বশে ওঝার উপরেই ভরসা রাখেন। তাঁর দাবি, তা বন্ধ করতে হলে পঞ্চায়েত সদস্যদেরও নিজেদের এলাকায় সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে আইন করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

Sanke Bite Woman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy