Advertisement
০৬ মে ২০২৪

তোলাবাজদের হানা, যুবক খুন তালিতে

গত ফেব্রুয়ারি থেকে তালিতের গুডস্ শেডে মালবাহী ট্রেন দাঁড়ায়। সেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ‘ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া’ (এফসিআই) এ রাজ্যের জন্য গম নিয়ে আসে। ওই গম ট্রেন থেকে খালাস করার কর্মী সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছেন মালদহের এক ঠিকাদার।

শোকার্ত: কান্নায় ভেঙে পড়েছে মৃত আলমগিরের পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

শোকার্ত: কান্নায় ভেঙে পড়েছে মৃত আলমগিরের পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০২:২৯
Share: Save:

ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে তোলাবাজদের ঝামেলার জেরে খুন হয়ে গেলেন এক যুবক। ঘটনায় নাম জড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের এক সদস্যেরও। শুক্রবার দুপুরে বর্ধমান শহর লাগোয়া তালিত রেলগেটের কাছে ঘটনাটি ঘটে। বর্ধমান থানার দাবি, ওই এলাকায় পুলিশ-পিকেট বসানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি বোমা উদ্ধার হয়েছে। তবে এ দিন রাত পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ হয়নি।

গত ফেব্রুয়ারি থেকে তালিতের গুডস্ শেডে মালবাহী ট্রেন দাঁড়ায়। সেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ‘ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া’ (এফসিআই) এ রাজ্যের জন্য গম নিয়ে আসে। ওই গম ট্রেন থেকে খালাস করার কর্মী সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছেন মালদহের এক ঠিকাদার। তাঁর সঙ্গে আবার স্থানীয় এক জনের শ্রমিক সরবরাহের চুক্তি রয়েছে। বর্তমানে ৫০৪ জন কর্মী ওই মাল খালাসের কাজ করেন। সেখানে সুপারভাইজার ছিলেন ওই এলাকারই শিবপুর-দিঘিরপাড়ের বাসিন্দা আলমগির শেখ (২২)।

নিহতের দাদা জাহাঙ্গির শেখ ওই শেডেই মাল খালাসের কাজ করেন। তাঁর অভিযোগ, এ দিন বেলা ১২ নাগাদ মাল খালাস করা চলছিল। সেই সময় জেলা পরিষদের এক সদস্যের অনুগামীরা সেখানে এসে গোলমাল পাকায়। জাহাঙ্গিরের দাবি, ‘‘আমি ছুটে একটা ঘরে ঢুকে পড়ি। কিন্তু ভাই পালাতে পারেনি। ওকে লাঠি, শাবল দিয়ে বেদম মারতে শুরু করে ওরা।’’ মাথায় গুরুতর চোট পাওয়া আলমগিরকে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। আধ ঘণ্টার মধ্যে মারা যান তিনি।

ওই ঠিকাদার গোষ্ঠীর কর্তা, মালদহের বাসিন্দা, রামচন্দ্র অগ্রবাল বলেন, “ওই এলাকার হালিম শেখের সঙ্গে শ্রমিক সরবরাহ করার চুক্তি রয়েছে আমাদের। আচমকা সুপারভাইজার খুনের খবর পাই।’’ হালিম শেখের অভিযোগ, “জেলা পরিষদের এক সদস্যের অনুগামীরা আমাদের থেকে নিয়মিত তোলা নেয়। তারা তোলা বাড়াতে বলছে। বাড়াতে পারিনি বলেই আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালানো হল!”

অনুগামীদের বিরুদ্ধে ওঠা তোলাবাজির অভিযোগ মানতে চাননি জেলা পরিষদের স্থানীয় সদস্য তথা এলাকার তৃণমূল নেতা নুরুল হাসান। তাঁর দাবি, ‘‘যতটুকু জানি, ঘটনাটা গোষ্ঠী-সংঘর্ষের জের। বোমা মেরে পালানোর সময় জনরোষের মুখে পড়ে ওই যুবক মারা গিয়েছেন।” ঘটনার পিছনে দলের কারও জড়িত থাকার কথা মানতে চাননি তৃণমূলের বর্ধমান ১ ব্লক সভানেত্রী কাকলি তা গুপ্তও। তিনি বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের মধ্যে তোলার ভাগ নিয়ে লড়াইয়ের জেরে ওই ঘটনা। এতে দলের কোনও ভুমিকা নেই।’’

যদিও আলমগির দুষ্কৃতী ছিলেন না বলে দাবি তাঁর পরিবারের।

এফসিআইয়ের আলমগঞ্জ গুদামের ম্যানেজার গোপাল মজুমদারের আক্ষেপ, “সুপারভাইজার খুনের এই গোলমালে কবে মাল খালাস হবে, কে জানে! ”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Burdwan Murder বর্ধমান
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE