সন্ধ্যা নামতেই শহরের কিছু অন্ধকার গলিতে বসে ঢুলতে দেখা যায় একল যুবককে। হাতে কাগজের পুরিয়া। বাসিন্দাদের দাবি, দেখলেই বোঝা যায় ওরা নেশা করছে। যাতায়াত করতেও ভয় লাগে। ওই এলাকাগুলি থেকে নিয়মিত সাইকেল, জানালার রড ইত্যাদি চুরির ঘটনাও বাড়ছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। কালনা শহরের একটা বড় এলাকা জুড়ে এ দৃশ্য রোজকার ঘটনা। কিন্তু নেশাড়ুদের বিরুদ্ধে পুলিশে বহুবার অভিযোগ জানিয়েও অবস্থার বদল হয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
শহরের পুরনো ও নতুন বাসস্ট্যাণ্ড, বৈদ্যপুর মোড়, কলেজ চত্বর, ডাঙাপাড়া প্রভৃতি এলাকায় নেশাড়ুদের উপস্থিতি বেশি বলে জানা গিয়েছে। ডেনড্রাইট, চোলাই থেকে হেরোইন- সবই রয়েছে মাদক দ্রব্যের তালিকায়। তবে হেরোইনের চলই সবচেয়ে বেশি।
কিন্তু শহরে কীভাবে ঢুকছে হেরোইন? জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সমুদ্রগড় স্টেশন লাগোয়া ডাঙাপাড়া এলাকায় হেরোইনের রমরমা ব্যবসা চলছে। মূলত ৫-৬ জনের একটি দল ওই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। দলে এক মহিলাও রয়েছেন। কয়েকজন নেশাড়ুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জিআরপি জানতে পেরেছে হেরোইনের পুরিয়া লেনদেনের সময় ওই মহিলাই লাল শাড়ি পরে খরিদ্দারদের সঙ্কেত দেন। জিআরপির এক আধিকারিক বলেন, “ওই মহিলার কাছে এক একবারে ৭-৮টি পুরিয়া থাকে। ওর খোঁজে জিআরপি বেশ কয়েকবার অভিযান চালালেও প্রতিবারই সে গা-ঢাকা দিয়েছে।” সম্প্রতি ডাঙাপাড়া এলাকার কয়েকটি গুমটি থেকেও মিলছে হেরোইন। কয়েকজন নেশাড়ুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে দু’ধরণের হেরোইন পুরিয়া রয়েছে। এগুলির দাম ৪০ ও ৯০ টাকা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য ব্যবসার আড়ালেও চলছে হেরোইনের কারবার। নদিয়া থেকেও জলপথে হেরোইন ঢুকছে। হেরোইনের জাল কালনা হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। কয়েকমাস আগে, কালনা জিআরপি এক স্কুল ছাত্রকে হেরোইন বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার করে জানতে পারে, সে কটোয়া থেকে হাওড়া ‘লাইন’ পর্যন্ত হেরোইন বিক্রি করত।
হেরোইনের পাশাপাশি চলছে চোলাইয়ের কারবার। এমনকি, ফোনে অর্ডার দিলেও বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে চোলাই। বিকেলের পর থেকে শহরের অলিগলিতে চোলাই বিক্রেতাদের ঠেক বসছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা পরিমল চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “নেশাড়ুদের ভয়ে সন্ধ্যার পর থেকে বেশ কয়েকটি রাস্তা এড়িয়ে চলতে হয়।” এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, নেশার দ্রব্য কিনতে পকেটে টান পড়ায় এলাকায় চুরির ঘটনা বাড়ছে। প্রায়ই সাইকেল, জানলার রড জাতীয় জিনিস চুরি যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
যদিও মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “নেশা বা চিুরর অভিযোগ তেমন নেই। তবে জিআরপি বে-আইনি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালালে, আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy