Advertisement
E-Paper

আদর্শ গ্রাম হলে বাড়বে কর্মসংস্থান, আশায় গ্রাম

এক দিকে পাহাড় ও ঘন জঙ্গল। অন্য দিকে দামোদর। মাঝখানে ছোট গ্রাম সালানপুরের সিদাবাড়ি। এই গ্রামটিকেই দত্তক নিয়ে আদর্শ গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। সোমবার বাবুল যখন ওই গ্রামটি দেখতে গিয়েছিলেন, তখনও বাসিন্দারা জানতেন না, তাঁদের গ্রামটি নিয়ে মন্ত্রীর এমন পরিকল্পনা রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সেই খবর শোনার পরেই খুশির হাওয়া গ্রামে।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৪৭
যোগাযোগ থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা, সবেই উন্নতি চান গ্রামবাসীরা। ছবি: শৈলেন সরকার।

যোগাযোগ থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা, সবেই উন্নতি চান গ্রামবাসীরা। ছবি: শৈলেন সরকার।

এক দিকে পাহাড় ও ঘন জঙ্গল। অন্য দিকে দামোদর। মাঝখানে ছোট গ্রাম সালানপুরের সিদাবাড়ি। এই গ্রামটিকেই দত্তক নিয়ে আদর্শ গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।

সোমবার বাবুল যখন ওই গ্রামটি দেখতে গিয়েছিলেন, তখনও বাসিন্দারা জানতেন না, তাঁদের গ্রামটি নিয়ে মন্ত্রীর এমন পরিকল্পনা রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সেই খবর শোনার পরেই খুশির হাওয়া গ্রামে। বাসিন্দারা মনে করছেন, এলাকার উন্নয়নের ব্যাপারে অন্যান্য গ্রামের তুলনায় কিছুটা বেশি সুযোগ হয়তো তাঁরা এ বার পাবেন। তবে আদর্শ গ্রাম হলে স্থানীয় মানুষের কর্ম সংস্থানের সুযোগ বাড়বে কি না, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে কি না, এ সব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তাঁদের মধ্যে।

এই গ্রামটিকেই কেন বেছে নিলেন? বাবুল সুপ্রিয় জানান, এখানে একটা অদ্ভূদ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের কাছে শুনেছেন, প্রতি বছর বহু মানুষ বেড়াতে আসেন। তাই এই গ্রামটিকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারলে, এক দিকে যেমন পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করা যাবে, তেমনই প্রধানমন্ত্রীর গ্রামোন্নয়নের বার্তা সহজে দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরা যাবে। বাবুল বলেন, “আমি দেখেছি এই গ্রামে মিলেমিশে বাস করছেন নানা ধর্মের মানুষ। রয়েছে মাদার টেরিজার ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’। সব মিলিয়ে এই গ্রামটিই আমার পছন্দ হয়েছে।” আদর্শ গ্রামের জন্য খসড়া প্রকল্পও তৈরি করতে শুরু করেছেন বলে জানান তিনি।

এই গ্রামের পুরনো বাসিন্দা মণীন্দ্রনাথ সেন জানান, সোমবার মন্ত্রী এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে গিয়েছেন। অনেক কথা জেনেছেন। কিন্তু তখনও গ্রামের কেউ বোঝেননি, এই এলাকাই তাঁর প্রথম পছন্দ। মণীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “আমাদের গ্রামে সমস্যা অনেক। সেগুলির হাল করতে পারলেই আদর্শ গ্রাম হিসেবে তৈরির সার্থকতা মিলবে।”

গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ খারাপ। গ্রামের মানুষকে বাইরে যেতে তিনি কিলোমিটার পথ হেঁটে গ্রামের বাইরে থেকে বাস ধরতে হয়। এমনকী, ছাত্র-ছাত্রীদেরও হেঁটে দূরের স্কুলে যেতে হয়। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র বিক্রম মণ্ডল বলেন, “আমরা রোজ আট কিলোমিটার হেঁটে চিত্তরঞ্জনে পড়তে যাই।” প্রায় দশ হাজার বাসিন্দার এই গ্রামে কোনও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত নেই। পাঁচ কিলোমিটার দূরে পিঠাইকেয়রি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হয় রোগীদের।

এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, গ্রামের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের বিশেষ উপায় নেই। ফলে, অনেকেই রুটিরুজির টানে বেআইনি খাদানে কয়লা কাটার কাজ করে। কিন্তু, এই কাজে ঝুঁকি বেশি। প্রায়ই কয়লার চাঁই চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা অশোক হাঁসদা বলেন, “আদর্শ গ্রাম তৈরির অঙ্গ হিসেবে এখানে পর্যটন শিল্পের উন্নতি করতে পারলে সারা বছর আরও অনেক ভ্রমণার্থী আসবেন। তাতে এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। স্থানীয় যুবকেরা বিকল্প আয়ের পথ খুঁজে নেবেন।”

এই গ্রামটিকে যে আদর্শ গ্রাম হিসেবে তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল, তা অবশ্য তাঁদের জানা নেই বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের হাতে থাকা সালানপুরের পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্যামল মজুমদারের দাবি, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করলে আরও ভাল গ্রামের সন্ধান দিতে পারতেন। বাবুল অবশ্য বলছেন, “উন্নয়নের কাজে কোনও রাজনৈতিক রং দেখছি না। সামগ্রিক ভাবে উন্নয়ন করতে চাই। পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করব।”

sidabari salanpur susanta banik babul supriyo
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy