আরবান হাট তৈরি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে মেমারি পুরসভায়। পুরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলরের দাবি, পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী ওই প্রকল্প নিয়ে তাঁদের কিছুই জানাননি। শুক্রবার ১১ জন কাউন্সিলর জেলাশাসক ও বর্ধমানের মহকুমাশাসকের (দক্ষিণ) কাছে এ নিয়ে অভিযোগও জানিয়েছেন।
ওই কাউন্সিলরদের দবি, পুরপ্রধান দুর্নীতি করেই চলেছেন। অবিলম্বে তা বন্ধ করতে হবে। পুরনির্বাচনের পরে, ১৬টি আসনের সবকটির দখল নেওয়া সত্ত্বেও বোর্ডগঠন নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা গিয়েছিল। কয়েকজন তৃণমূল কাউন্সিলার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে নানা বিষয় নিয়ে ‘জেহাদ’ও ঘোষনা করেন। এ দিন জেলাশাসক ও মহকুমাশাসকের কাছে যে অভিযোগ জমা পড়েছে তাতে সই রয়েছে উপ-পুরপ্রধান হোসেনারা আলিরও।
মেমারি নতুন বাসস্ট্যান্ডে প্রায় তিন কোটি টাকা তিন তলা ওই আরবান হাট তৈরি হচ্ছে। একটি তলা থাকবে মাটির নিচে। অন্য দুটি উপরে। ১০০টি ঘর হবে সেখানে। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার অতনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই হাট তৈরির জন্য আমরা সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে নির্মানকারী খুঁজেছিলাম। পরে পুরসভার পক্ষ থেকেই কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নিই। কাজটি শুরুও হয়ে গিয়েছে।”
কিন্তু এই কাজ শুরুর আগে বা পরে মেমারি পুরসভার কাউন্সিলারদের সঙ্গে চেয়ারম্যান কোনও আলোচনা করেননি বলে ওই কাউন্সিলারের অভিযোগ। অভিযোগকারীদের অন্যতম আট নম্বর ওয়ার্ডের স্বপন ঘোষলের দাবি, “ওই কাজে দুর্নীতি ও স্বজনপোষন ঢাকা দিতেই চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করছেন না। আমরা শুধু জেলাশাসক বা মহকুমাশাসকই নন, রাজ্য মিউনিসিপ্যাল অ্যাফেয়ার্স দফতরকেও অভিযোগ জানিয়েছি।” তাঁর দাবি, “কার্যত কোনও উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েই চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেন না। বোর্ড মিটিয়েংও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না। মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন, একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে নয়।”
মেমারি পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন বিষয়ী অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার আমলে যা কাজ হয়েছে, সমস্ত আইন মেনেই হয়েছে। কয়েকজন কাউন্সিলার শুধু ঘোঁট পাকিয়ে শহরের উন্নয়ন আটকে দিতে চাইছেন।”
নতুন বাসস্ট্যান্ড চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, আরবান হাট তৈরির জন্য মাটি খোঁড়ার কাজ চলছে। কাউন্সিলরদের দাবি, এই মাটি শহরের নিচু এলাকা, বিশেষত একটি নির্মিয়মান গার্লস স্কুলে ফেলার কথা ছিল। কিন্তু তার বদলে মাটির বড় অংশ ফেলা হয়েছে স্থানীয় ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইছাপুরের একটি পুকুরে। ওভাবে ওই পুকুরটি ভরাট করার চেষ্টা চলছে বলেও কাউন্সিলরদের অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে পুকুর ভরাট সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়ে তা পুরপ্রধানের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সামসুল হক মির্জা। তিনি বলেন, “যে লোকটিকে মেমারি বাসস্ট্যান্ডের মাটি অন্যত্র সরানোর বরাত দেওয়া হয়েছে, তারই বিরুদ্ধে ওই পুকুরে ৫৫-৬০ ট্রাক্টর মাটি ফেলার অভিযোগ উঠেছে। লোকটি কবুল করেছে, সে ১০-১৫ ট্রাক্টর মাটি ফেলেছে। পুরপ্রধানকে ওই লোকটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “আমি ওই ১১ জন কাউন্সিলারের অভিযোগ পেয়েছি। রাজ্য মিউনিসিপ্যাল অ্যাফেয়ার্স দফতরকে ঘটনাটি খতিয়ে দেখতো বলব।” মহকুমাশাসক (দক্ষিণ) অরুণ রায় বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। সেটা না খতিয়ে দেখে কিছু বলতে পারব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy