এনটিপিসিকে জমি কেনার ‘ছাড়পত্র’ দেওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করল সরকার। বৃহস্পতিবার দুপুরে কাটোয়া মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে (এসডিএলএলআরও) একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ২ জুলাই থেকে ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের নেতৃত্বে এনটিপিসি যে সব জমি কিনতে চায়, তা খতিয়ে দেখে সরকারের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়া হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক এনটিপিসিকে বাড়তি জমি কেনার অনুমতি দেবেন।
এ দিনের বৈঠকে আরও ঠিক হয় যে জমি খতিয়ে দেখার সময় রেকর্ড নিয়ে কোনও গোলমাল চোখে পড়লে, তা তত্ক্ষণাত্ সংশোধন করে দেওয়া হবে।
এসডিএলএলআরও দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বর্ধমানে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এনটিপিসি তাপবিদ্যুত্ প্রকল্পের জন্য যে বাড়তি জমি কেনার আবেদন করেছে, তা খতিয়ে দেখে দ্রুত রিপোর্ট তৈরি করে সরকারের কাছে পাঠাতে হবে। কাটোয়ার ভারপ্রাপ্ত এসডিএলএলআরও শশধর রাউত বলেন, জমির রেকর্ড ঠিক করে ৮ জুলাই থেকে কৃষকদের হাতে তা তুলে দিতে হবে। এ দিনের বৈঠকে কাটোয়া ১ ও কেতুগ্রাম ২ -এর বিএলএলআরও, শ্রীখণ্ড, কোশীগ্রাম, গোয়াই পঞ্চায়েত প্রধান ও এনটিপিসির কর্মীরা হাজির ছিলেন।
এনটিপিসি সূত্রে জানা যায়, প্রায় দু’বছর আগে জমি কেনার ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ সরকারের কাছে আবেদন করে। তারপর ভাগীরথী দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। এনটিপিসি কাটোয়াতে ৬৬০ মেগাওয়েটের দুটি ইউনিট গড়ার জন্য জমির পরিমাণ কমিয়ে আনে। বর্তমানে এনটিপিসির বাড়তি ২২০ একর জমি দরকার। সে জন্য মাসখানেক আগে জমি আইনের ১৪ (ওয়াই) ধারার ৭সি ফর্ম নতুন করে পূরণ করে এনটিপিসি জেলা ভূমি ও ভূমি অধিগ্রহণ দফতরে আবেদন করে। এনটিপিসির এক কর্তা বলেন, “ওই ফর্ম পূরণ করার পরেও জেলা ভূমি ও ভূমি অধিগ্রহণ দফতর আরও অনেক তথ্য চেয়েছে। এখনও আমরা সেই তথ্য জমা দিতে পারিনি। তা সত্ত্বেও সরকার জমি কেনার প্রস্তাব খতিয়ে দেখতে এগিয়ে আসছে।” প্রসঙ্গত, অধিগৃহীত ৫৫৬ একর জমি ছাড়াও এনটিপিসি সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ২২০ একর জমি কিনবে। এর বাইরে রাজ্য সরকার বিভিন্ন দফতরের হাতে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ১০০ একর জমি এনটিপিসির হাতে তুলে দিতে চলেছে।
এসডিএলএলআরও দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাইপ লাইনের জন্য ভাগীরথীর দুই পাড়ে সিতাহাটি, কাটোয়া মৌজা, অজয় তীরবর্তী কেতুগ্রামের নবগ্রাম, বেগুনকোলা, কাটোয়ার বান্দরা, গোয়াই, সুড্ডো মৌজা ছাড়াও প্রকল্পের জন্য চূড়পুনী, কোশীগ্রাম ও শ্রীখণ্ড মৌজার ২০২.৬৫ একর জমি ২ জুলাই সরেজমিন খতিয়ে দেখবে বিএলএলআরও-র নেতৃত্বাধীন দুটি দল। কেননা ভূমি সংস্কার আইন অনুযায়ী রাজ্যে বলবত্ ঊর্দ্ধসীমার (২৪ একর ২১ শতক) বেশি জমি কিনতে হলে রাজ্যের অনুমতি লাগে। দফতরের এক কর্তার কথায়, “সরকারের যা চাপ আছে, তাতে কয়েক দিনের মধ্যে জমি কেনার ছাড়পত্র পেয়ে যাবে এনটিপিসি। আর ওই ছাড়পত্র পেয়ে গেলেই এনটিপিসির জমি কেনায় কোনও বাধা থাকবে না।” ১৪ জুন কাটোয়া তাপবিদ্যুত্ প্রকল্পের এলাকা দেখতে এসে সংস্থার চেয়ারম্যান অরূপ রায়চৌধুরীও বলেছিলেন, “আমরা খুব দ্রুত জমি কিনতে মাঠে নামব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy