গত সপ্তাহে আত্মঘাতী কাঁকসার ৩ নম্বর কলোনির বাসিন্দা বিপ্লব সমাদ্দারের পরিবারের সদস্যের এক জনকে চাকরি ও এককালীন আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিজেপি-র তরফে সোমবার বর্ধমানের জেলাশাসকের কাছে একটি দাবিপত্র দেওয়া হয়। বিপ্লববাবুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় উপযুক্ত তদন্তেরও দাবি জানায় বিজেপি।
৪ ডিসেম্বর ভোরে বিপ্লব সমাদ্দারের ঝুলন্ত দেহ মেলে। মৃতের ছেলে অরিন্দম সমাদ্দার পুলিশে অভিযোগে জানান, পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার জন্য তার বাবা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। একশো দিনের কাজের বকেয়াও মেলেনি। তাই বিপ্লববাবু আত্মঘাতী হন বলে অভিযোগ। যদিও প্রশাসনের তরফে সেই তা অস্বীকার করে জানানো হয় ওই পরিবারটিকে ব্লক প্রশাসনের তরফে ত্রাণ দেওয়া হয়। এর পর থেকে শুরু হয় চাপানউতোর। বিজেপি-র দাবি, ওই ব্যক্তি চলতি অর্থবর্ষে মাত্র তিন দিন একশো দিনের কাজ করেছেন। তার টাকাও পেয়েছিলেন। অথচ, অরিন্দবাবুর অভিযোগ ছিল, একশো দিনের কাজের বকেয়া না পাওয়ায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর বিজেপি-র একটি প্রতিনিধি দল বিপ্লববাবুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। ওই দিন বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার অভিযোগ করেন, আর্থিক অনটনের কথা জানার পরেও স্থানীয় পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি কোনও পদক্ষেপ করেনি।
বিজেপি-র তরফে সোমবার অভিযোগ করা হয়, একশো দিনের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য ওই ব্যক্তি আত্মঘাতী হন নি। বিপ্লববাবু জবকার্ড অনুযায়ী মাত্র তিনদিন কাজ পান। গত সপ্তাহের শুক্রবার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সুভাষবাবু আরও অভিযোগ ছিল, পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি একশো দিনের কাজ করাতে পারছে না। সোমবার জেলাশাসকের কাছে দাবিপত্র পেশ করার পর বিজেপি-র অভিযোগ, একশো দিনের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে ওই ব্যক্তি ব্যবসার জন্য ঋণের আবেদন করলেও পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসন তা দিতে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ। বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নরেশ কোনার জানান, মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে বারবার প্রশাসনের দারস্থ হয়েও সামান্য কিছু টাকা ছাড়া আর কিছুই মেলেনি।
বিজেপি নেতা নরেশ কোনারের দাবি, বিপ্লববাবুর একমাত্র ছেলে মাধ্যমিক পরিক্ষার্থী। কাজেই তাঁর পরিবার যাতে অনাহারে ও আর্থিক কষ্টে না থাকে তার জন্য জেলা প্রশাসনের তরফে পরিবারের একজনকে চাকরি ও এককালীন ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। নরেশবাবুর বলেন, “বর্ধমানের মতো কৃষি প্রধান জেলাতে এ ভাবে অনাহারে মৃত্যু লজ্জা জনক। এমন ঘটনা যাতে আর না হয় সেদিকে নজর দেওয়া দরকার।” যাদের উদাসীনতায় বিপ্লববাবুর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধেও উপযুক্ত তদন্ত করে শাস্তির দাবি জানানো হয় এ দিন। বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্রমোহন বলেন, “বিজেপি-র দাবিপত্র পেয়েছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy