চুরি, ইভটিজিং, ভয় দেখানো থেকে ক্যাম্পাসে ঢুকে অবাধ মাতলামি—সবই চলছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাম্পাসে, এমনই অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষার কাছে ও বর্ধমান থানায় স্মারকলিপি জমা দিলেন ছাত্রেরা। তাঁদের দাবি, বারবার বলা সত্বেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
অধ্যক্ষা মঞ্জুশ্রী রায় বলেন, “স্মারকলিপি পেয়েছি। আমাদের তরফে তদন্ত করে দেখা হবে। যদি দেখা যায়, ছাত্রদের অভিযোগ সত্যি তাহলে আমরাও পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলব।” বর্ধমান থানাও অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা নাগাদ কলেজের ১ নম্বর বয়েজ হস্টেলে রাজু মহাজন নামে এক অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের হাউসস্টাফের ল্যাপটপ চুরির অভিযোগ ওঠে। রাজু তখন নিজের ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, “বাইরের যে সব লোকেরা কলেজের ক্যান্টিনে খেতে আসে, তাদেরই কেউ এই কাজ করেছে।” ছাত্রদের অভিযোগ, তিন মাসের মধ্যে এ নিয়ে পরপর তিনটি ল্যাপটপ, কয়েকটি সাইকেল ও মোবাইল চুরি গিয়েছে বিভিন্ন হস্টেল থেকে। মাসখানেক আগে হস্টেলের সিসিটিভিতে ধরা পড়ে এক ব্যক্তি ২ নম্বর বয়েজ হস্টেলের সুখেন্দু পাইক নামে চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রের ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ অবশ্য ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। সে বর্তমানে জেলে রয়েছে। তবে তিন মাস আগে আর এক ছাত্র তন্ময় সরকারের ল্যাপটপ চুরির এখনও কোনও কিনারা হয়নি। মোবাইল, সাইকেলও বারবার চুরি যাচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ আটকাতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের।
ছাত্রদের আরও অভিযোগ, মেডিক্যালের ছাত্রীদের উদ্দেশে প্রায়ই নানা ধরনের খারাপ মন্তব্য করে একদল বহিরাগত। ঘটনার প্রতিবাদ করলে ক্যাম্পাসের বাইরে বেরোলেই মারধরের হুমকি দেয়। এছাড়া প্রতিদিনই কলেজ ক্যাম্পাসে অবাধে মাতলামি করে একদল লোক। অভিযোগ জানিয়েও তাদের ঠেকানো যাচ্ছে না। এমনকী ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা তিনটি ক্যান্টিনে প্রতিদিনই বেশ কিছু বহিরাগত খেতে আসে। ফলে মুশকিলে পড়েন ছাত্রছাত্রীরা। মঞ্জুশ্রীদেবীর দাবি, “ এটা একটা সময় আমরা বন্ধ করেছিলাম। ফের তা শুরু হয়েছে। দেখতে হবে।”
টিএমসিপির দখলে থাকা ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, “কয়েক বছর ধরেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে। থানাকে জানালে কয়েকদিন ক্যাম্পাসের ভেতর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তারপরে পাহারা উঠে গেলেই আবার আগের অবস্থা ফিরে আসে ক্যাম্পাসে। এ বার কর্তৃপক্ষ ও থানা কী ব্যবস্থা নেয় দেখে আমরা আন্দোলনে নামব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy