Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

খনির পরিত্যক্ত জল এ বার সেচের কাজে

ভূগর্ভস্থ খনির পরিত্যক্ত জল মাটির উপরে বয়ে যায় নালা দিয়ে। কোনও কাজে লাগে না। অথচ, খনির উপরিভাগের এলাকা অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকে সেচের অভাবে। বয়ে যাওয়া সেই জল সেচের কাজে লাগাতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৪ ০১:০৩
Share: Save:

ভূগর্ভস্থ খনির পরিত্যক্ত জল মাটির উপরে বয়ে যায় নালা দিয়ে। কোনও কাজে লাগে না। অথচ, খনির উপরিভাগের এলাকা অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকে সেচের অভাবে।

বয়ে যাওয়া সেই জল সেচের কাজে লাগাতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। একশো দিনের কাজ প্রকল্পে কাটা হচ্ছে পুকুর। খনি থেকে নালা কেটে জল আনা হচ্ছে পুকুরে। জমা জল লাগানো হবে সেচের কাজে। ইতিমধ্যে দুর্গাপুর মহকুমার অন্ডাল ও পান্ডবেশ্বর ব্লকের বিভিন্ন খনি এলাকায় এই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

ইসিএল সূত্রে জানা যায়, ভূগর্ভস্থ খনির ভিতরে জলের প্রয়োজন মিটে যাওয়ার পরে তা পাম্প দিয়ে উপরে তুলে ফেলে দেওয়া হয়। সেই জল সাধারণত কোনও কাজে আসে না। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জল সেচের কাজে লাগানোর উদ্যোগ হয়েছে।

জানা গিয়েছে, বিভিন্ন খনি থেকে নালা কেটে জল নিয়ে এসে ফেলা হবে বড় পুকুরে। এর পরে পুকুর থেকে জল তুলে তা সেচের কাজে লাগানো হবে। সেচের অভাবে খনি এলাকার বহু জমিতে চাষ হয় না। এই জল কাজে লাগিয়ে অনাবাদি জমি আবাদি করে তোলা হবে বলে পরিকল্পনা রয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক ভাবে ১৮টি খনি বেছে নেওয়া হয়েছে। অন্ডাল ও পাণ্ডবেশ্বরে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্ডালের চনচনি কোলিয়ারির চারটি পিট থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ নালা কাটা হয়েছে। চনচনির মাঝিপাড়ায় একটি পুকুর নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সেই পুকুরে ওই নালা দিয়ে জল এসে জমা হবে। এর ফলে প্রায় ৫০ একর জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়া পাণ্ডবেশ্বরে একটি পুকুর সংস্কার করা হয়েছে প্রায় দু’লক্ষ টাকা খরচ করে। নর্থ জামবাদ খনি থেকে জল এনে জমা করা হবে ওই পুকুরটিতে। এ ভাবে ধাপে ধাপে ওই সমস্ত এলাকায় এই প্রকল্পের বিস্তার ঘটানো হবে। পরে সেই ‘মডেল’ ব্যবহার করা হবে খনি এলাকার অন্যত্রও।

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, কোলিয়ারি এলাকায় খনি বাদে অন্য কিছুতে কর্মসংস্থানের সুযোগ কম। কিন্তু সকলে খনিতে কাজ পান না। ফলে, বাকিদের কাজের সুযোগের ব্যবস্থা করা বরাবরই মাথাব্যাথার কারণ প্রশাসনের কাছে। একশো দিনের কাজের মাধ্যমে খনির ভিতরের জল সেচের কাজে ব্যবহারের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সমস্যার কিছুটা সুরাহা হবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা। ওই আধিকারিক জানান, নালা কাটা, পুকুর সংস্কারের মাধ্যমে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ পাচ্ছেন এলাকার মানুষ। চাষের মাধ্যমে খনি এলাকার মানুষের কাছে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া অনাবাদি জমি আবাদি করে তোলার মাধ্যমে স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টিও হবে।

ওই আধিকারিক বলেন, “স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী গড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই সব জমিতে চাষাবাদ করে রোজগার করতে পারবেন। উপকৃত হবেন এলাকার মানুষ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mining durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE