Advertisement
০৭ মে ২০২৪

গান-নাটক-আড্ডায় মেতে পঁচিশে পা মহিলা মহলের

শুরুটা হয়েছিল আড়াই দশক আগে। দুর্গাপুর ইস্পাতনগরীর মাঝে একদল মহিলা চাইলেন শহরের সাংস্কৃতিক পরিবেশকে নতুন করে সাজিয়ে তুলতে। সেই উদ্দেশ্যেই তৈরি হয় ‘মহিলা মহল’। মহলের আড্ডায় ঢুঁ মারলে হঠাত্‌ মনে পড়ে যেতেই পারে নবনীতা দেবসেনের ‘সই’ সংগঠনটির কথা। সম্প্রতি ‘মহিলা মহল’-এর ২৫ বছর পূর্তি উত্‌সব হয়ে গেল দুর্গাপুরে।

মহিলা মহলের নাটক।—নিজস্ব চিত্র।

মহিলা মহলের নাটক।—নিজস্ব চিত্র।

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৫
Share: Save:

শুরুটা হয়েছিল আড়াই দশক আগে। দুর্গাপুর ইস্পাতনগরীর মাঝে একদল মহিলা চাইলেন শহরের সাংস্কৃতিক পরিবেশকে নতুন করে সাজিয়ে তুলতে। সেই উদ্দেশ্যেই তৈরি হয় ‘মহিলা মহল’। মহলের আড্ডায় ঢুঁ মারলে হঠাত্‌ মনে পড়ে যেতেই পারে নবনীতা দেবসেনের ‘সই’ সংগঠনটির কথা। সম্প্রতি ‘মহিলা মহল’-এর ২৫ বছর পূর্তি উত্‌সব হয়ে গেল দুর্গাপুরে।

উত্‌সব উপলক্ষে গান, নাটক পরিবেশন করেন সংগঠনের সদস্যরা। সঙ্গে ছিল জমাটি আড্ডাও। আড্ডায় গৃহিনীদের পাশাপাশি যোগ দেন স্বামীরাও। সংগঠনের সদস্য মীনা মজুমদার জানান, নিয়ম করে প্রতি বুধবার সবাই মিলিত হন। ‘সপ্তর্ষি’ নামের একটি ৭ সদস্যের কমিটি রয়েছে ‘মহিলা মহলে’র কাজকর্ম পরিচালনার জন্য। কমিটির বর্তমান সম্পাদক প্রণতি মজুমদার বলেন, “সব প্রজন্মের মহিলাদের যোগদানের ফলে সংগঠনের কাজকর্মে ভাটা পড়ে না।” সংগঠনের তরফে নিয়মিত প্রকাশ করা হয় বার্ষিক পত্রিকা ‘সেঁজুতি’ ও হাতে লেখা মাসিক পত্রিকা ‘আনন্দবার্তা’। নববর্ষ, রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী, রথযাত্রা, বিজয়া সম্মিলনী উপলক্ষে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সারা বছর ধরে চলে নাটক, বিতর্ক, রান্না-সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আসর। নাটকের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কুমকুম রায়ের যদিও আক্ষেপ, “শহরে নাট্যচর্চার ঐতিহ্য ক্রমশ ফিকে হয়ে আসছে। তবু আমরা চেষ্টা করি।”

পঁচিশের আড্ডায় এসে শহরের কাউন্সিলর অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, “আমার মায়েরা একটি এরকম সংগঠন চালাতেন। সেখানে আড্ডা, গল্প, সংস্কৃতি চর্চা হত। আমাদের জন্য তখন সেখানে মূল আকর্ষণ ছিল নারকেল দেওয়া ঘুগনি আর মাছের চপ।”

সংগঠনের শুরুর দিন থেকে থাকা সবিতা আচার্য, কল্পনা মিত্র, দীপ্তি বিশ্বাস, ছবি চক্রবর্তী, অনিমা মুখোপাধ্যায়দের আড্ডায় বারবার করে উঠে এল মহিলা মহলের শুরুর দিনগুলোর কথা। ১৯৯০ সালের এক বুধবার সংগঠনের পথ চলা শুরু। শহরের নন-কোম্পানি এলাকা তখন সবে গড়ে উঠছে। সিটি সেন্টার এলাকাতেও তেমন বসতি গড়ে ওঠেনি। দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা তখন ধুঁকছে। চারদিকে হতাশার মধ্যেই একদল মহিলা তৈরি করলেন ‘মহিলা মহল’। সংগঠনের সদস্যদের কেউ স্কুল শিক্ষিকা, কেউ বেতার শিল্পী, কেউ বা আবার ঘরকন্না সামলান।

সংগঠনের বর্তমান সদস্য প্রীতি ঘোষ হাজরা, মৌ ভট্টাচার্য, মৌসুমী চক্রবর্তীরা জানান, বধূ থেকে চাকরিজীবী সকলের জীবনের একঘেঁয়েমি কাটাতেই মহিলা মহলের আড্ডার আয়োজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE