দুর্গাপুরের বিধাননগরে এক বেসরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সামনে এই হাল রাস্তার। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
কোথাও বড় গর্ত, আবার কোথাও উঠে গিয়েছে পিচ।
দুর্গাপুরের অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত বিধাননগরের বিভিন্ন রাস্তার ছবি এই রকমই। বেহাল রাস্তায় যাতাযাত করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। অভিযোগ, পুরসভার কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি। মঙ্গলবার ফের উঠল রাস্তা সংস্কারের দাবি।
এ দিন দুর্গাপুর পুরসভায় গিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলারের কাছে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে স্মারকলিপি দিলেন সিপিএমের জেমুয়া-বিধাননগর লোকাল কমিটির সদস্যরা। যদিও স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর প্রমোদ সরকারের দাবি, “সিপিএম নিজেদের প্রচারের জন্যই এই স্মারকলিপি দিয়েছে। বিধাননগর এলাকায় বিভিন্ন রাস্তা সংস্কারের দরপত্র হয়ে গিয়েছে।”
দুর্গাপুর পুরসভার প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত বিধাননগর এলাকাটি পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। এখানে রয়েছে একাধিক বেসরকারি কলেজ, বেসরকারি ও সরকারি হাসপাতাল, হোটেল ও আবাসন ও অফিস। কিন্তু সেই অভিজাত এলাকার বিভিন্ন রাস্তার অবস্থা এখন প্রায় যাতায়াতের অযোগ্য। সামান্য বৃষ্টিতেই জমছে জল। অথচ রাস্তাগুলি দিয়ে সারা দিনই যাতায়াত করে যাত্রীবোঝাই মিনিবাস ও অটো। তার পরেও রাস্তা সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেয়নি পুরসভা, এমনই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা ইমন কল্যাণ সরণীর পাশেই রয়েছে একটি বেসরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। প্রত্যেক দিন দেশ-বিদেশ থেকে রোগীরা আসেন সেখানে চিকিৎসা করাতে। অনেকে হৃদযন্ত্রের নানা সমস্যা নিয়ে সেখানে আসেন। ওই রাস্তাটির অবস্থা এতই খারাপ যে রোগীকে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে অ্যাম্বুল্যান্স চালক ও রোগীর পরিজনদের। দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে রোগীদের। এই হাসপাতালে বোলপুর থেকে আসা এক রোগীর আত্মীয় স্বরাজ পাল বলেন, “অনেকেই হার্টের জটিল রোগ নিয়ে এখানে চিকিৎসার জন্য আসেন। কিন্তু এই রাস্তা দিয়ে তাঁদের নিয়ে যাওয়া রীতিমতো ঝুঁকির হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”
ওই ওয়ার্ডের অন্য রাস্তাগুলির প্রায় এক। বিধাননগরের পাম্প হাউসের পাশ দিয়ে আর্মস্ট্রং অ্যাভিনিউয়ের পিছনের রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। স্থানীয় বাসিন্দা স্বদেশ সাহার অভিযোগ, “রাস্তাটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে একটু অন্ধকার হয়ে গেলেই মোটরবাইক করে যেতে ভয় হয়।” বিধাননগর এলাকার শহিদ সুকুমার ব্যানার্জী সরণীর অবস্থাও বেহাল। ওই এলাকার বাসিন্দা কেয়া ভট্টাচার্যের আশঙ্কা, “সামনেই পুজো। তখন রাস্তায় ভিড় অনেকটাই বেড়ে যাবে। রাস্তাগুলি এখনই সংস্কার করা না হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
সিপিএমের জেমুয়া-বিধাননগর লোকাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকারের দাবি, “গত বছর পুজোর আগে রাস্তাগুলি সংস্কার না হওয়ায় পুজোর সময় দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তৃণমূল পুরসভার ক্ষমতায় আসার পরে কোথাও কোথাও সামান্য পিচ দিয়ে গর্ত বোজানো হলেও বিধাননগর এলাকার রাস্তায় পিচ পড়েনি।”
যদিও কাজ না করার অভিযোগ মানেননি দুর্গাপুর পুরসভার পূর্ত দফতরের মেয়র পারিষদ প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “বিধাননগর এলাকার বিভিন্ন রাস্তা সারাইয়ের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির কারণেই কাজ শুরু করা যায়নি। দ্রুত কাজ শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy