বিরোধী দলের সমর্থকদের কাজ দেওয়া হচ্ছে না পঞ্চায়েতের কোনও প্রকল্পে। বেসরকারি ক্ষেত্রেও কাজের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, ছাঁটাই করে দেওয়া হচ্ছে। এমনই নানা অভিযোগ তুলে বুধবার তিন ঘণ্টা পাণ্ডবেশ্বরের কেন্দ্রা পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে ঘেরাও করে নকশাল ও সিপিএম নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখালেন পাণ্ডবেশ্বরের কেন্দ্রার কিছু বাসিন্দা।
পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ দাবি আদায়ের নামে কিছু লোকজন উপপ্রধানকে ঘেরাও করে দরজা বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত দুপুর ২টো নাগাদ পুলিশের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ থামে। বিক্ষোভে সামিল ঝাঝরার বাসিন্দা শেখ নুরে আলম, শেখ সেলিম, সিপিএম সমর্থক শেখ গফ্ফর, শেখ ওসমানদের দাবি, পাঁচ বছর ধরে খোলামুখ খনিতে তাঁরা কাজ করতেন। লোকসভা ভোটের জন্য সিপিএম প্রার্থীর নাম ঘোষণা হওয়ার পরে তাঁরা প্রার্থীর সঙ্গে একটি প্রচার মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন। তার ঠিক পরের দিন, ১৩ এপ্রিল তাঁরা নিজেদের কর্মস্থলে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁদের আর কাজে রাখা হবে না। কারণ, তাঁরা তৃণমূলের বিরোধী শিবিরে আছেন।
একই বক্তব্য ছত্তিশগণ্ডা গ্রামের ধরম বাদ্যকর, বিলপাহাড়ির সন্তোষ বাউরিদেরও। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা ছত্তিশগণ্ডায় একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। কর্তৃপক্ষকে তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের ছাঁটাই করার জন্য হুমকি দিয়ে গিয়েছে। ওই দিনই কর্মচ্যুত হওয়ার পরে ওই ঠিকাকর্মীরা এক সঙ্গে পাণ্ডবেশ্বর থানায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ জানান। পুলিশে জানিয়েও দীর্ঘদিন প্রতিকার না মেলায় বুধবার সিপিএম ও নকশালদের নেতৃত্বে উপপ্রধানকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন বলে তাঁদের দাবি।
কর্মী-সমর্থকদের কাজ হারানোর প্রসঙ্গে এলাকার নকশাল নেতা মদন বাউড়ি বলেন, “তৃণমূল পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই বিরোধীরা একশো দিনের কাজ পাচ্ছে না। প্রয়োজনীয় শংসাপত্র আনতেও বিডিও-র শরনাপন্ন হতে হচ্ছে।” পাণ্ডবেশ্বর থানার ওসি বিকাশ দত্ত বলেন, ঠিকাকর্মীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।
পুলিশের হস্তক্ষেপে এ দিন বিক্ষোভ থামলেও ঠিকাকর্মীরা উপপ্রধানকে হুঁশিয়ারি দেন, দাবি না মিটলে তাঁরা ফের আন্দোলন করবেন। ওই ইটভাটার মালিক সমরেশ মণ্ডল অভিযোগ করেন, “তৃণমূলের একদল সর্মথক আমার কাছে এসে বলেছিল, যদি ধরমদের চাকরি থেকে ছাঁটাই না করি, তা হলে ওদের ৫০ জনকে চাকরি দিতে হবে। তাই বাধ্য হয়েছি ওদের কাজ থেকে সরিয়ে দিতে।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নরেন চক্রবর্তী অবশ্য দাবি করেন, এ দিন কোনও বিক্ষোভ হয়নি। গ্রামবাসীরা উপপ্রধানের সঙ্গে তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন। কাজ থেকে ছাঁটাইয়ের জন্য কোনও হুমকির কথা তিনি মানেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy