Advertisement
E-Paper

জুয়ার ঠেকে হানা দিয়ে আক্রান্ত পুলিশ, ধৃত ৭

জুয়ার ঠেকে পুলিশি অভিযানকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়াল অন্ডালের কাজোড়া ডাঙপাড়ায়। ধৃতদের ছিনিয়ে নিতে পুলিশকে ঘিরে ধরে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। খবর পেয়ে র্যাফ ও পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে জনতার উপরে লাঠি চালায় ও তল্লাশির নামে বাড়ি-বাড়ি ঢুকে দুর্ব্যবহার করে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। পুলিশ তাদের একটি শাখা অফিস তছনছ করেছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। শনিবার রাতের এই ঘটনায় সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ০১:২২
ধৃতদের আদালতে তোলা হচ্ছে।

ধৃতদের আদালতে তোলা হচ্ছে।

জুয়ার ঠেকে পুলিশি অভিযানকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়াল অন্ডালের কাজোড়া ডাঙপাড়ায়। ধৃতদের ছিনিয়ে নিতে পুলিশকে ঘিরে ধরে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। খবর পেয়ে র্যাফ ও পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে জনতার উপরে লাঠি চালায় ও তল্লাশির নামে বাড়ি-বাড়ি ঢুকে দুর্ব্যবহার করে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। পুলিশ তাদের একটি শাখা অফিস তছনছ করেছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। শনিবার রাতের এই ঘটনায় সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব বলেন, “জুয়ার ঠেকে অভিযানে গিয়ে তিন জনকে ধরে ফেলে পুলিশের একটি পাহারাদার ভ্যান। কিন্তু কয়েক জন বাসিন্দা ঘিরে ধরে তাদের ছাড়িয়ে নেয়। আরও বড় বাহিনী এলাকায় গেলে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। তাতে কয়েক জন পুলিশকর্মী জখম হন। একটি ভ্যানও ভাঙচুর করা হয়।” ধৃত সাত জনকে রবিবার দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ অবশ্য কারও বাড়ি বা পার্টি অফিস তছনছের কথা মানেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ১০টা নাগাদ ডাঙপাড়ায় জুয়ার ঠেকের সন্ধানে যায় পুলিশ। গ্রামে পৌঁছতেই বেশ কিছু মহিলা ঘিরে ধরে পুলিশের গাড়ি। পুলিশের অনুমান, জুয়ার ঠেক থেকে দুষ্কৃতীদের পালানোর সুযোগ করে দিতেই তাদের আটকে দেওয়া হয়। কিছু ক্ষণের মধ্যে র্যাফ ও পুলিশের বড় বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছলে জনতার সঙ্গে বচসা শুরু হয়। পুলিশকে লক্ষ করে ঢিল-পাটকেল ছোড়া হয়। অভিযোগ, জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ পাল্টা লাঠি চালায়। পালানোর সময়ে কয়েক জন সিপিএমের স্থানীয় শাখা অফিসে ঢুকে পড়ে। ধাওয়া করে গিয়ে ওই অফিসঘর থেকে সাত জনকে ধরে পুলিশ। পরে গ্রামেও তল্লাশি চালানো হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালানোর নামে নিরীহ মানুষজনকে হেনস্থা করেছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ বাউরি, কিশোর বাউরিদের অভিযোগ, রাতে তাঁদের বাড়িতে ঢুকে রীতিমতো দুর্ব্যবহার করে পুলিশ। সিপিএমের দামোদর-অজয় জোনাল কমিটির সম্পাদক প্রবীর মণ্ডলের অভিযোগ, এই পাড়াটিতে তাঁদের দলের প্রভাব রয়েছে বলে তাণ্ডব চালিয়েছে পুলিশ। বাদ যায়নি তাঁদের পার্টি অফিসও। প্রবীরবাবুর অভিযোগ, “অন্ডাল খনি এলাকা জুড়ে কালীপুজোর সময়ে জুয়ার আসর বসে। পুলিশ অন্য কোথাও নজর না দিয়ে শাসক দলের কথামতো জুয়া খেলার ভুয়ো অভিযোগে সিপিএম প্রভাবিত এলাকায় এমন ঘটনা ঘটাল। গরিব মানুষদের ভয় দেখাতেই এই কাণ্ড করল তারা।”

তাদের এই শাখা অফিসটি পুলিশ তছনছ করেছে বলে সিপিএমের অভিযোগ।

সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ফরওয়ার্ড ব্লকের এক সদস্যকে দল ভাঙিয়ে কাজোড়া পঞ্চায়েতটি দখল করেছে তৃণমূল। কিন্তু তার পরেও এই পঞ্চায়েতে বামেদের জনসমর্থন বাড়ছে দেখে পুলিশকে দিয়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা চলছে। প্রবীরবাবুর অভিযোগ, “আমাদের যে কার্যালয়ে এত দিন তৃণমূল পর্যন্ত হামলা চালাতে পারেনি, পুলিশ সেই কাজ করল। সেখানে রীতিমতো ভাঙচুর চালিয়েছে পুলিশ। এ ভাবে আমাদের সমর্থকদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা হচ্ছে।”

তৃণমূলের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কাঞ্চন মিত্রের পাল্টা বক্তব্য, “পুলিশ নিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জুয়ার ঠেকে অভিযানে গিয়েছিল। সিপিএম গোটা ঘটনাটিতে রাজনৈতিক রং লাগাতে গিয়ে নিজেদের বিপদ ডেকে এনেছে। এখন চক্ষুলজ্জা ঢাকতে আমাদের দিকে দায়ী করছে এবং পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এলাকার মানুষ আসল ঘটনা জানেন।”

এলাকা বেছে বেছে অভিযান চালানোর কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ। কালীপুজোর আগে থেকে গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়েই এই ধরনের অভিযান চলছে বলে জানায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে রানিগঞ্জের শিশুবাগানেও একটি জুয়ার ঠেকে হানা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন তিন পুলিশকর্মী। পুলিশ জানায়, কাজোড়া ডাঙপাড়া থেকে ধৃতদের বিরুদ্ধে জুয়া খেলা, পুলিশের উপরে হামলা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে।

নিজস্ব চিত্র।

jua andal kajora dangpara gambling
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy