এই হাই টেনশন লাইনের জন্যই কাজ বন্ধ ছিল।—নিজস্ব চিত্র।
অবশেষে জমিজট কাটল। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে রানওয়ের উপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের হাই টেনশন লাইন সরানোর কাজ। সব কিছু ঠিকঠাক চললে অন্ডালে দেশের প্রথম বেসরকারি বিমানবন্দরটি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই শুরু হবে বাণিজ্যিক উড়ান। বুধবার আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের অফিসে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিমান নগরী সংস্থা (বিএপিএল)-র বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রাজ্যের পরিবহণসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জমি নিয়ে কিছু জটিলতা ছিল, যাম মিটেছে। বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুতের লাইন সরানোর কাজ শুরু হয়ে যাবে।” বিএপিএল-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর পার্থ ঘোষ একই দাবি করে বলেন, “ছ’মাসের মধ্যেই বাণিজ্যিক ভাবে কাজ শুরু হবে বিমানবন্দরে।” পার্থবাবু এ জন্য রাজ্য সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাজী নজরুল ইসলামের নামে এই বিমানবন্দরের নাম রাখেন। সে দিন তিনি ঘোষণা করেন, বাংলা নববর্ষের দিন থেকেই এখানে উড়ান চালু হবে। কিন্তু রানওয়ে, যাত্রী টার্মিনাল, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ হলেও রানওয়ের উপর দিয়ে আড়াআড়ি বিদ্যুতের হাই টেনশন লাইন চলে যাওয়ায় ডাইরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) উড়ানের ছাড়পত্র দেয়নি।
বিএপিএল সূত্রের খবর, বিদ্যুতের লাইন ও টাওয়ার অন্যত্র সরাতে বেশ কয়েক একর জমি দরকার। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেয়েও এই জমি দিতে রাজি হচ্ছিলেন না জমির মালিকরা। জট কাটাতে গত বছরের ২ অক্টোবর সব পক্ষ বৈঠক বসে। তার পরেও জমির সমীক্ষা করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের বাধার মুখে পড়েন সংস্থার কর্মীরা। একই ঘটনা ঘটে গত ২৯ নভেম্বর। জমি-মালিকদের অভিযোগ ছিল, প্রকল্পের জন্য ২০০৭ সাল থেকে জমি দিয়ে এসেছেন তাঁরা। কিন্তু এখনও বিমানবন্দর চালু হয়নি। অথচ ‘রিয়েল এস্টেট’ ব্যবসা শুরু হয়ে গিয়েছে জোর কদমে। তা ছাড়া বিদ্যুতের লাইন ও টাওয়ার নিয়ে যেতে যে জায়গাটুকু প্রয়োজন, সেটুকুই শুধু কিনতে চায় বিএপিএল। এটা হলে আশপাশের জমিতে চাষের সমস্যা হবে। সমস্যা-সমাধানে ৯ ডিসেম্বর গ্রামবাসীদের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠক হয়। কিন্তু তার পরেও মীমাংসা হয়নি।
জট কাটাতে এ দিন উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন পরিবহনসচিব ছাড়া জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন, পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক কস্তুরি সেনগুপ্ত এবং দ১০ জন জমি-মালিক। প্রায় ঘণ্টা তিনেকের বৈঠক শেষে পরিবহনসচিব বলেন, “বিদ্যুতের তার সরানো ও একটি রাস্তা নিয়ে সমস্যা ছিল। জমি-মালিকরা সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছেন।” পার্থবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আগামী ছ’মাসের মধ্যে বিমান পরিষেবা চালু করার জন্য বলেছেন। এত দিন জমি-জটে তা হচ্ছিল না।” চাষিদের পক্ষে খোকন গড়াই বলেন, “বিদ্যুতের তারের লাইন ৩০ ফুট নয়, ৭০ ফুট উঁচু দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। তাতে চাষের সমস্যা হবে না। প্রকল্প এলাকার মধ্যে পাটশ্যাওড়া গ্রামের একটি রাস্তা ঢুকে যাওয়ায় মানুষজন অসুবিধায় পড়েন। এখন বিকল্প রাস্তা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি মিলেছে। আমরাও চাই বিমানবন্দর চালু হোক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy