Advertisement
E-Paper

ট্যাঙ্কার সরবরাহ নিয়ে দ্বন্দ্ব, অশান্তি রাজবাঁধে

রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে আসা ট্যাঙ্কারকে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘রাজবাঁধ ট্যাঙ্কার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে ওই তেল সংস্থার রাজবাঁধ টার্মিনালের সামনে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি বেধে যায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত জানান, বিশদ জানার জন্য দু’পক্ষকেই ডাকা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৫ ০২:২৪
চলছে বাকবিতণ্ডা। —নিজস্ব চিত্র।

চলছে বাকবিতণ্ডা। —নিজস্ব চিত্র।

রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে আসা ট্যাঙ্কারকে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘রাজবাঁধ ট্যাঙ্কার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে ওই তেল সংস্থার রাজবাঁধ টার্মিনালের সামনে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি বেধে যায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত জানান, বিশদ জানার জন্য দু’পক্ষকেই ডাকা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজবাঁধের ওই তেল সংস্থার টার্মিনাল থেকে বেশ কয়েকটি জেলায় জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়ামজাত সামগ্রী সরবরাহ করা হয়। তেল সংস্থা দরপত্রের মাধ্যমে ট্যাঙ্কার চায়। দীর্ঘদিন ধরেই ‘রাজবাঁধ ট্যাঙ্কার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ এই বরাত পেয়ে আসছে। এ বছর ই-টেন্ডারের মাধ্যমে স্থানীয় গোপালপুরের একটি সংস্থাও ট্যাঙ্কার সরবরাহের জন্য নির্বাচিত হয়। পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে শুক্রবার সংস্থার পক্ষ থেকে ২১টি ট্যাঙ্কার নিয়ে যাওয়া হয় টার্মিনালে। সেই সময় ‘রাজবাঁধ ট্যাঙ্কার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর লোকজন সেগুলি আটকে দেয় বলে অভিযোগ। দিনভর সেগুলি জাতীয় সড়কের পাশে টার্মিনালের কাছে দাঁড়িয়েছিল। নতুন ট্যাঙ্কারগুলির মালিক ও কর্মীরা প্রতিবাদ জানালে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়।

রাজবাঁধের ট্যাঙ্কার্স মালিকদের সংগঠনটির সম্পাদক সুনীল শ্যাম জানান, তাঁদের ২৪০টি ট্যাঙ্কার তেল সংস্থায় খাটছে। এর মধ্যে ১৮৮টি ছ’চাকার এবং ৫২টি দশ চাকার ট্যাঙ্কার। এ ছাড়াও তাঁদের ৩৬টি ট্যাঙ্কার রয়েছে। সুনীলবাবু দাবি করেন, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সব ট্যাঙ্কারই যাতে সুযোগ পায়, তা দেখা হয়। কিন্তু এর পরে বাইরে থেকে আরও ২১টি ট্যাঙ্কার এলে সমস্যা আরও বাড়বে। বহু ট্যাঙ্কারই কাজ পাবে না। তাঁর বক্তব্য, “আগে আমাদের ট্যাঙ্কার ঢুকবে। তার পরে প্রয়োজন পড়লে তখন বাইরের ট্যাঙ্কার ঢুকতে দেওয়া হবে।” কিন্তু বাইরের ট্যাঙ্কারগুলির কাছেও তো বৈধ কাগজপত্র রয়েছে? সুনীলবাবুর সাফ কথা, “সে সব আমরা জানি না।”

বাইরের ট্যাঙ্কারগুলি যে সংস্থার, তার অন্যতম অংশীদার পার্থসারথি শ্যাম জানান, প্রাথমিক ভাবে তিন বছরের জন্য তাঁদের বরাত দেওয়া হয়েছে। ১ এপ্রিল থেকে কাজ করার কথা। তবে তার আগে গাড়ির প্রয়োজনীয় পরীক্ষা জরুরি। সে জন্যই এ দিন ট্যাঙ্কারগুলিকে টার্মিনালে ঢোকানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তিনি দাবি করেন, “কিন্তু রাজবাঁধের ওই অ্যাসোসিয়েশনের বাধায় আমরা এ দিন ট্যাঙ্কার ঢোকাতে পারিনি। তবে আমরাও শেষ দেখে ছাড়ব।”

রাজবাঁধের অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদে রয়েছেন কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূল নেতা চিন্ময় মণ্ডল। এ দিনের ঘটনায় অভিযোগের তির তাঁর দিকেই। তিনি অবশ্য বলেন, “নতুন সংস্থার বেশ কিছু ট্যাঙ্কার রাজবাঁধ ট্যাঙ্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে চলছে। সেগুলি নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কয়েকটি নতুন ট্যাঙ্কার যোগ হওয়া নিয়েই শুধু আমাদের আপত্তি। সেক্ষেত্রে কাজ হারাবেন পুরনো কয়েক জন।” পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা কাঁকসার আর এক তৃণমূল নেতা পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “আশা করি প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।”

মহকুমাশাসক কস্তুরীদেবী জানান, কাঁকসা থানা থেকে তাঁকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সমস্যা মেটাতে তিনি দু’পক্ষকে ডেকে পাঠিয়ে সবিস্তারে জানতে চেয়েছেন। মহকুমাশাসক বলেন, “সমস্যার সুরাহা করতে দু’পক্ষকেই ডাকা হয়েছে।” তেল সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, ঘটনা ঘটেছে টার্মিনালের বাইরে। ভিতরের কাজে তার কোনও প্রভাব পড়েনি। অন্য দিনের মতো স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে।

tanker
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy