‘স্বাধীন দেশের ভোটার মোরা, নির্ভয়ে দেব ভোট। ভোটে থাকবে প্যারামিলিটারি, সুযোগ পাবে না কেউ পাকাতে ঘোট।’-সাধারণ মানুষকে ভোটদানে উৎসাহ দিতে এ ভাবেই সরাসরি প্রচার শুরু করল জেলা প্রশাসন।
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “ভোটের দিনের ৪৮ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত গোটা জেলা জুড়ে এ ধরনের অসংখ্য ট্যাবলো ঘুরে বেড়াবে। জেলা প্রশাসন ছাড়াও মহকুমা ও ব্লক থেকেও ট্যাবলো বের করা হবে। ভোটারেরা যাতে ভোটদানে বিশেষ আগ্রহী হন, তার জন্যই এই ব্যবস্থা।”
বুধবার জেলাশাসকের বাংলো থেকে ছড়া, পোস্টারে সাজানো একটি ট্যাবলো বের করা হয়। তাতে ভোটদানের প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে এ বারের ভোটে নতুন কী কী সুবিধা রয়েছে সবই ছবি দিয়ে লেখা রয়েছে। যে মোটরভ্যানে ট্যবলোটি রয়েছে সেখানে বুথের ভেতর ও বাইরের নানা সচিত্র মুহূর্ত তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া নকল ভোট বাক্স, ইভিএম মেশিন, ঠাণ্ডা জলের কুঁজো সাজিয়ে ভোট দেওয়ার মহড়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনও এ দিন ভোটদানের মহড়া দেন।
ট্যাবলো উদ্বোধনের পরে জেলাশাসকের বাংলো চত্বরে একটি পথনাটিকাও হয় এ দিন। নাটকে দেখা যায় ভোট দেওয়ার নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করছে একটি পরিবার। পরিবারের বাবা, মা ও বোন নানা অসুবিধের কথা বলে ভোট দিতে যেতে নারাজ। কিন্তু বাড়ির ছেলেটি প্রত্যেকটা অসুবিধে মেটাতে প্রশাসনের পদক্ষেপ জানাচ্ছে তাঁদের। যেমন, ১৫ মিনিটের ওই নাটকে মা বলছেন, “আমি বাবা বাতের রোগি। বুথে এতক্ষণ দাঁড়াতে পারব না।” ছেলে বলছে, “অশক্ত, অক্ষমদের সঙ্গে সঙ্গে ভোট দিয়ে বের হয়ে আসার সুবিধা দেওয়া হয়েছে এই বার। তোমার অসুবিধা হবে না।” বোন বলছে, “বাপরে, বাপ! সে বার ভোট দিতে গিয়ে পড়ে গেলাম বোমাবাজির ফাঁকে। ভয়ে তো প্রাণ উড়েই গিয়েছিল। বোমাবাজি থামলো তো, বুথে তান্ডব চালাতে শুরু করল গুন্ডারা। অত ঝামেলা করে প্রাণ হাতে নিয়ে ভোট দিতে যেতে পারব না। ” দাদার আশ্বাস, “এ বার কোনও চিন্তা নেই। প্রতি বুথে নির্বিঘ্নে ভোটদান করাতে প্রচুর বন্দুকধারী পুলিশ থাকবে। গুন্ডা তো দূরের কথা রাজনৈতিক দলের লোকদেরও ঘেঁষবার উপায় নেই। তুই নির্ভয়ে ভোট দিয়ে আয়।”
জেলাশাসক জানান, এই পথনাটিকাও জেলার নানা মহকুমায় ঘুরবে। এটি মঞ্চস্থ করেছেন বর্ধমানের সরকারি কর্মচারিরাই। বেশির ভাগ জায়গাতে তাঁরাই অভিনয় করবেন, যাতে মানুষ ভোট দিতে যেতে ভরসা পান। তবে দরকার হলে দু’একজন পেশাদার অভিনেতাকে ডাকা হতে পারে।