থানায় বিক্ষোভ দেখিয়ে ফেরার পথে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। লাউদোহায় এই ঘটনা নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে ফেরার পথে আবার দলের এক নেতাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ বিজেপি-র।
তৃণমূল যদিও অভিযোগ মানতে চায়নি। তাদের পাল্টা দাবি, তাদেরই একটি পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। দু’পক্ষই পুলিশে অভিযোগ করেছে। পুলিশ জানায়, গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
সন্দেশখালিতে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাজ্য জুড়ে থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে বিজেপ। সেই মতো ফরিদপুর (লাউদোহা) থানাতেও বিক্ষোভ দেখান দলের স্থানীয় কর্মীরা বিজেপি-র দুর্গাপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অখিল মণ্ডল অভিযোগ করেন, বিক্ষোভ শেষে একটি বাসে করে তাঁদের বেশ কিছু কর্মী থানা থেকে ফিরছিলেন। কিছুটা যাওয়ার পরেই এমআইসি মোড়ের কাছে বাসটি আটকায় ৫০-৬০ জন তৃণমূল সমর্থক। লাঠি, রড নিয়ে বাসটিতে ভাঙচুর চালানো হয়। কয়েক জন বিজেপি কর্মী আহত হন। তাঁদের ব্লক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছে বলে অখিলবাবু জানান। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ব্লক হাসপাতালেও তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দেয় তৃণমূলের কিছু লোকজন। ভয়ে তাঁরা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।
বিজেপি নেতাদের আরও অভিযোগ, বাসে হামলার ঘটনার পরে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান স্থানীয় বিজেপি নেতা আশিস গড়াই। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার পরে তাঁকেও তৃণমূলের লোকজন মারধর করে। আশিসবাবুকে ব্লক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। বিজেপি নেতা অখিলবাবু অভিযোগ করেন, আশিসবাবু বাড়িতে যাওয়ার পরেও তৃণমূলের লোকেরা হুমকি দিচ্ছেন। হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁদের দলের অন্য কর্মীদেরও। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এ সব হচ্ছে বলে অখিলবাবুর দাবি।
বিজেপি নেতাদের দাবি, ফরিদপুর-লাউদোহা এলাকায় জগন্নাথপুর, বড়গোড়িয়ার মতো গ্রামে বহু বিজেপি সদস্য-সমর্থককে ঘরবন্দি করে রেখেছে তৃণমূল। লবণাপাড়ায় তৃণমূলের লোকজন বিজেপি-র সমর্থকদের উপরে হামলা চালিয়েছে। হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। অখিলবাবু দাবি করেন, দলে দলে লোক বিজেপি-তে যোগ দেওয়ায় তৃণমূল ভয় পাচ্ছে। তাঁর কথায়, “এমনিতেই এই বিধানসভা এলাকা সিপিএমের দখলে। বিজেপি-র সংগঠন বাড়ছে দেখে তৃণমূল ভয় পেয়ে এ সব কাণ্ড ঘটাচ্ছে।” বিজেপি-র আসানসোল জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকার বলেন, “আমরা পুলিশকে এই সব ঘটনার কথা জানিয়েছি। পুলিশ কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সে দিকে নজর রেখেছি। রাজনৈতিক ভাবে সব কিছুর মোকাবিলা করা হবে।” তাঁরও দাবি, দলের অনেক কর্মীই এখন আতঙ্কে ভুগছন।
হামলা, হুমকি বা বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকদের ঘরবন্দি করে রাখার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, সিপিএমের লোকজন বিজেপি-র পতাকা নিয়ে তাঁদের পার্টি অফিস চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায়। সেই সময়ে তাঁদের দলের সমর্থকদের সঙ্গে ওই লোকজনের বচসা হয়। তবে কোনও মারধর করা হয়নি। সুজিতবাবু বলেন, “বিজেপি রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করুক। মিথ্যা অভিযোগ করে এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি করা হচ্ছে।”
এ দিন জেলার প্রায় সব থানার সামনেই বিজেপি-র তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তবে লাউদোহা ছাড়া কোথাও কোনও গোলমাল-গণ্ডগোল হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।