শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে আরও ১৩ জন শিক্ষককে বরখাস্ত করলেন দুর্গাপুরের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে গত দু’দিনে মোট ৩৫ জন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হল ওই কলেজে। কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে বৃহস্পতিবারও গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষকদের একাংশ। যোগ দেন বেশ কিছু পড়ুয়াও।
জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে দুর্গাপুরের বিধাননগরের ওই কলেজে গোলমাল শুরু হয়েছে। স্টেশন থেকে তাঁদের পড়ুয়া ধরে আনতে পাঠাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ, এই অভিযোগ তুলে তখন বেশ কয়েক জন শিক্ষক একযোগে পদত্যাগ করেন। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিষয়টি মিটিয়ে নিলেও মঙ্গলবার থেকে বেশ কিছু শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী ফের বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, ছুটির দিনেও ক্লাস নিতে বাধ্য করা হয়, মাসের নির্দিষ্ট সময়ে বেতনও মেলে না। এর পরেই মঙ্গলবার রাতে ২২ জন শিক্ষককে বরখাস্ত করেন কর্তৃপক্ষ। বুধবারও দিনভর বিক্ষোভ দেখান ওই শিক্ষকেরা। সেই রাতে আরও ১৩ জনকে বরখাস্ত করা হয়।
বৃহস্পতিবার কলেজের সামনে শিক্ষকেরা ফের বিক্ষোভ শুরু করেন। কলেজে পরিকাঠামোর অভাব, চাকরির বন্দোবস্ত না করার অভিযোগ তুলে কিছু পড়ুয়াও বিক্ষোভে সামিল হন। কলেজ থেকে কিছুটা দূরে মঞ্চ বেঁধে বিক্ষোভের প্রস্তুতিও চলছিল। কিন্তু পুলিশের অনুমতি না নেওয়ায় পরিকল্পনা বাতিল করেন শিক্ষকেরা। তবে তাঁদের দাবি, কর্তৃপক্ষ যত ক্ষণ না তাঁদের অভিযোগ সহানুভূতির সঙ্গে দেখবেন, তত ক্ষণ আন্দোলন চলবে।
পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, শিক্ষকদের সঙ্গে বিক্ষোভে সামিল হওয়ায় কর্তৃপক্ষের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৬০ জন শিক্ষকের মধ্যে ১০৫ জন বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। আরও ১৩ জনকে বরখাস্ত করার ফলে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইনফরমেশন টেকনোলজিএই দুই বিভাগে ২৬ জনের মধ্যে মাত্র ৫ জন শিক্ষক রইলেন। এখন কী ভাবে এই বিভাগ দু’টি চলবে, সে প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের ম্যানেজার (প্রশাসন) বিপ্লব বসুঠাকুর শুধু বলেন, “শিক্ষক ও পড়ুয়াদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কমিটি গড়া হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমিটি রিপোর্ট দেবে। শিক্ষকদের অবিলম্বে কাজে যোগ দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা অনড় থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”