ভাঙা টিভির কাচ।—নিজস্ব চিত্র।
দলেরই কাউন্সিলরের সঙ্গে পুরপ্রধানের গণ্ডগোলে ভাঙচুর চলল বর্ধমান পুরসভায়। তবে পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের দাবি, ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে কাজ না করার অভিযোগ রয়েছে। বুধবার সে কথা জানাতেই তাঁর ঘরে ভাঙচুর করে ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শঙ্করী ঘোষের অবশ্য পাল্টা দাবি, পুরপ্রধান তাঁকে অপমান করার খবর পেয়ে কিছু লোক এমনটা করেছে। তিনি কাউকে গণ্ডগোল পাকানোর কথা বলেননি।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের তাণ্ডবে পুরপ্রধানের ঘরের ভেতরে থাকা টিভি ভেঙেছে। পুরপ্রধানের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর একটি ছবি ছিল। সেটিকেও মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কাগজপত্র তছনছ করা হয়েছে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
শঙ্করীদেবী জানান, পুরপ্রধান নিজেই লিখিত ভাবে ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের কিছু নথিপত্রে সই করার অধিকার দিয়েছিলেন তাঁকে। প্রতিদিন পুরসভায় এসে সে কাজই করতেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, বুধবার কাজ শুরু করতেই পুরসভার এক বয়স্ক কর্মী তাঁকে বলেন, ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের কোনও ফাইল তাঁকে দিতে বারণ করেছেন পুরপ্রধান। এ কথা শুনে তিনি পুরপ্রধানের ঘরে ঢুকে কারণ জানতে চাইলে পুরপ্রধান তাঁকে অপমান করেন বলে তাঁর অভিযোগ। শঙ্করীদেবীর দাবি, স্বরূপবাবু তাঁকে বলেছেন, ‘আপনার মাঝেমধ্যে টাকা তছরুপের অভ্যাস রয়েছে।’ ওই সময়ে তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের দুই কর্মীও ছিলেন। তাঁরাও এইভাবে কাউন্সিলরকে অপমানের কারণ জানতে চাইলে স্বরূপবাবু তাঁদেরও ঘর থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ। শঙ্করীদেবীর দাবি, “আমি প্রতিদিন কাজে আসি। তাও চেয়ারম্যান বলছেন, আমি নাকি কাজ করি না। নিয়মিত পুরসভায় আসি না। আমাকে দেওয়া কাজের ভারও ফিরিয়ে নেন তিনি। প্রতিবাদ করে বোর্ডের সভা ডেকে দায়িত্ব ফিরিয়ে নেওয়ার কথা জানাতে বলতেই তিনি অপমান করেন। বলেন, আর কাজ করতে হবে না।”
তবে পুরপ্রধানের দাবি, “শঙ্করীদেবীর বিরুদ্ধে আমি প্রচুর অভিযোগ পাচ্ছিলাম। উনি নিয়মিত কাজ করেন না। যেটুকু করেন তা নিয়েও অসংখ্য অভিযোগ উঠছে। তাই আমি ওঁকে ট্রেড লাইসেন্স বিভাগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। লিখিত ভাবেই এ কথা জানিয়েও দিয়েছিলাম। তারপরেই দুপুরে ওঁর লোকেরা পুরসভায় এসে আমার ঘরে ঢুকে ভাঙচুর করে।” তিনি আরও বলেন, “ভাঙচুরের সময়ে আমি ঘরে একাই ছিলাম। তাই প্রতিরোধ করতে পারিনি।”
দলের লোকের হাতেই পুরভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য আইনূল হক বলে, “সারা রাজ্য জুড়েই তৃণমূলের মধ্যে মারপিট চলছে। স্বাভাবিক ভাবেই বর্ধমান পুরসভাতেও হচ্ছে। এটা নতুন কিছু নয়। লুটের ভাগ নিয়ে ওদের মধ্যে মারপিটের খবর তো পাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy