Advertisement
E-Paper

ধর্ষণে অভিযুক্ত নেতার ভাই, ভাঙচুর-আগুন

এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ দুর্গাপুরের এক তৃণমূল নেতার ভাইকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে শহরের সিটি সেন্টারে ননকোম্পানি লাগোয়া এলাকায়। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার কয়েক জন অভিযুক্ত এবং তার দাদাকে মারধর করে। পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। অভিযুক্ত যুবক এবং ওই নাবালিকাকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৪ ০১:২৯
স্থানীয় বাসিন্দাদের মার অভিযুক্তকে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মার অভিযুক্তকে।

এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ দুর্গাপুরের এক তৃণমূল নেতার ভাইকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে শহরের সিটি সেন্টারে ননকোম্পানি লাগোয়া এলাকায়। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার কয়েক জন অভিযুক্ত এবং তার দাদাকে মারধর করে। পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। অভিযুক্ত যুবক এবং ওই নাবালিকাকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্তকে সন্ধ্যায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ অভিযুক্ত ভোলা মণ্ডল ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীটিকে রাস্তার ধারের ঝুপড়িতে ডেকে তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। বাধা দেওয়ায় ওই কিশোরীকে সে মারধর করে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। এলাকার এক জন তা জানতে পেরে বাকিদের খবর দেন। উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তকে মারধর করেন। রেহাই পাননি তার দাদা তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাপ্পা মণ্ডলও। তিনি লাগোয়া একটি ঘরে তৃণমূলের অফিস চালান। সেখানে জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়। নেতার মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ গেলে প্রাথমিক ভাবে বাধার মুখে পড়ে। পরে বড় বাহিনী গিয়ে দু’জনকে উদ্ধার করে। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব জানান, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নাবালিকা ও অভিযুক্তদু’জনই বর্তমানে হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন।

পোড়ানো হল নেতার মোটরবাইক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিএমইআরআই আবাসন লাগোয়া বস্তি উচ্ছেদের জন্য কেন্দ্রীয় ‘জহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন’ (জেএনএনইউআরএম)-এর আওতায় কয়েক বছর আগে ‘সোনার তরী’ আবাসন প্রকল্প গড়া হয়। সেখানে চারশো পরিবার থাকে। বাপ্পা এবং ভোলার আবাসন রয়েছে সেখানে। অভিযোগ, তা সত্ত্বেও ঝুপড়ি খালি করা হয়নি। একটিতে পুজো করে ভোলা। পাশেরটিতে তৃণমূলের অফিস চালান বাপ্পা। এ দিন সেখান থেকে তৃণমূলের পতাকা, স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের সই করা ফাঁকা শংসাপত্রের প্যাড মিলেছে। তবে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তাপস মণ্ডলের দাবি, “বাপ্পার বিরুদ্ধে প্রতারণা-সহ নানা অভিযোগ ওঠায় বছরখানেক আগে তাকে দলের কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়।” তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এমএএমসি এলাকার এক নেতার মদতে বাপ্পা অফিসটি চালাতেন। ওই নেতা এলাকায় গিয়ে অনুষ্ঠান করে বাপ্পাকে ওয়ার্ডের তৃণমূল সেবাদলের সভাপতি বলেও ঘোষণা করেন। তার পর থেকেই স্থানীয় নেতাদের এড়িয়ে বাপ্পাবাবু এলাকায় কর্তৃত্ব ফলানোর চেষ্টা করতেন বলে দাবি তাপসবাবুর।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ভোলার বিরুদ্ধে এর আগেও দুষ্কর্মের অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশে অভিযোগ হয়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ওই নাবালিকার এক আত্মীয়ের আসার কথা ছিল। তাই বাসস্ট্যান্ডে গিয়েছিল সে। অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করেও আত্মীয় না আসায় সে ফিরে আসে। সেই সময় রাস্তার পাশের ঝুপড়ি থেকে তাকে ডাকে ভোলা। ধর্ষণের অভিযোগে জনতা ভোলাকে মারধোর শুরু করলে পৌঁছন তার দাদা বাপ্পা। তাঁকেও মারধর করা হয়। বাপ্পা পুলিশের কাছে তাঁকে ও তাঁর ভাইকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন। বাপ্পা বলেন, “ঘটনার সময়ে আমি বাইরে ছিলাম। ফিরে দেখি, ভাইকে মারধর করছে। আমাকেও মারল, মোটরবাইক পুড়িয়ে দিল। আমি তো কিছুই বুঝতে পারিনি। যে সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা মিথ্যা।”

ননকোম্পানি এলাকার বাসিন্দা তথা আইএনটিটিইউসি নেতা শান্তনু সোম বলেন, “দলীয় কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার পরেও দলের নাম ভাঁড়িয়ে এলাকায় দাপট দেখাচ্ছেন ওই ব্যক্তি। তাঁকে যাঁরা প্রশ্রয় দিচ্ছেন, তাঁদের সতর্ক থাকা উচিত।” স্থানীয় ২২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক পরিমল অগস্তি বলেন, “আমরা চাই, অভিযুক্তের উপযুক্ত শাস্তি হোক।” মেয়র অপূর্ববাবু বলেন, “অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। পুলিশ ব্যবস্থা নিক।” তাঁর সই করা প্যাড মেলা প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, “দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী মানুষের চিকিত্‌সার জন্য পুরসভা থেকে একটি করে শংসাপত্র দিতে হয়। নির্দিষ্ট কয়েক জায়গায় কয়েক জনকে এই রকম বয়না লেখা ও আমার সই করা প্যাড দেওয়া আছে, যাতে প্রয়োজন মতো মানুষ পেতে পারেন। ওই ব্যক্তির কাছে সেই প্যাড কী ভাবে গেল, জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।”

—নিজস্ব চিত্র।

rape accused tmc leader kin durgapur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy