Advertisement
E-Paper

নতুন অভিযোগে নাম চার সিপিএম নেতার

খুনের রাতেই ছ’জনের নামে অভিযোগ করেছিলেন বোন। তবে তাতে কোনও সিপিএম নেতার নাম ছিল না। সোমবার রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ আব্দুল আলিম খুনের প্রত্যক্ষদর্শী হালিম রায়নার সিপিএম বিধায়ক বাসুদেব খাঁ-সহ চার জনের প্রত্যক্ষ মদতে খুন করা হয়েছে বলে ফের অভিযোগ করলেন। হালিম এ দিন মাধবডিহি থানায় ১৫ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। ইতিমধ্যেই ন’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৫ ০১:৫৩
নিহতের বাড়িতে সুব্রত বক্সী ও স্বপন দেবনাথ। —নিজস্ব চিত্র।

নিহতের বাড়িতে সুব্রত বক্সী ও স্বপন দেবনাথ। —নিজস্ব চিত্র।

খুনের রাতেই ছ’জনের নামে অভিযোগ করেছিলেন বোন। তবে তাতে কোনও সিপিএম নেতার নাম ছিল না। সোমবার রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ আব্দুল আলিম খুনের প্রত্যক্ষদর্শী হালিম রায়নার সিপিএম বিধায়ক বাসুদেব খাঁ-সহ চার জনের প্রত্যক্ষ মদতে খুন করা হয়েছে বলে ফের অভিযোগ করলেন।

হালিম এ দিন মাধবডিহি থানায় ১৫ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। ইতিমধ্যেই ন’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “দুটি অভিযোগকে একত্র করে একটি এফআইআর করে মামলা রুজু করা হয়েছে।” মঙ্গলবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে সৈয়দ কলিমুদ্দিন, সৈয়দ কুতুবউদ্দিন ও শেখ আব্দুল সেলিমের ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত ও বাকিদের ১৪ দিন জেল হেফাজত হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের এক জনের বাড়ি হুগলির গোঘাটায়।

মঙ্গলবার বেলা একটা নাগাদ আলমপুর গ্রামে নিহতের বাড়ি যান তৃণমূলের অন্যতম সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী। সঙ্গে ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ, জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু, বর্ধমানের কাউন্সিলর খোকন দাস প্রমুখ। বাড়িতে ঢোকার মুখেই নিহতের ছবিতে মালা দেন সুব্রতবাবু। পরে আলিমের মা নূর বানু, বাবা শেখ বুনি আলম, স্ত্রী রুনা লায়লার সঙ্গে কথা বলেন। রুনাদেবী তাঁকে বলেন, ‘‘আমার স্বামীর প্রাণ যারা কেড়ে নিল, তারা যেন শাস্তি পায়।” একই কথা তাঁর পরিবারের বাকি লোকেদেরও। নিহতের এক পরিজন বলেন, “দাদা রাজনীতি করতে গিয়ে পরিবারকে সময় দেননি। সবসময় উন্নয়নের করার কথা ভাবত। অভিযুক্তরা যেন শাস্তি পায় দেখবেন।” সুব্রতবাবু তাঁদের আশ্বস্ত করে বলেন, “আমরাও চাই দুষ্কৃতীরা শাস্তি পাক। পাশাপাশি আপনাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেটাও দেখব।”

ঘটনার দিন থেকেই নিহতের স্বজনেরা অভিযোগ তুলছিলেন, দামোদর ও দ্বারকেশ্বর লাগোয়া বালি খাদানগুলি থেকে শেখ আব্দুলে আলিমের নাম করে ১৬ লক্ষ টাকা তোলা আদায় করেছিল শেখ কলিমুদ্দিন ওরফে বাপ্পা। ‘বন্ধু’র কীর্তি ফাঁস হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন আলিম। মাধবডিহির ওসি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের উপস্থতি একটি বৈঠকও হয়, কিন্তু কোনও মীমাংসা হয়নি। আলিমের বাড়ির লোকের দাবি, এরপর থেকে বাপ্পার রোষের মুখে পড়েন তিনি। তবে বালি খাদান নিয়ে তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই যে খুনের কারণ, নিহতের পরিবারের পাশাপাশি সে দাবি করছিল তৃণমূল একাংশ নেতা ও পুলিশও। তবে এ দিন সে তত্ত্ব মানতে চাননি সুব্রতবাবু। তিনি বলেন, “গত ৩০ বছরের রাজনৈতিক পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে সিপিএম খুন-খারাপি করে। এই ঘটনাও তার ব্যতিক্রম নয়।”

তবে সিপিএম বিধায়ক-সহ চার জনের মদতে যে ১৫ জন এই খুনে অভিযুক্ত বলে অভিযোগ করেছেন হালিম, সেই ১৫ জনই এলাকায় তৃণমূল বলে পরিচিত। সিপিএমেরও দাবি, যে চারজনের প্রত্যক্ষ মদতে খুন বলে অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে বিধায়ক নিজে পুলিশ রক্ষী নিয়ে ঘুরে বেড়ান। এলাকায় থাকতেও পারেন না তিনি। আর একজন কাইতির রমেন সরকার। ৭৭ বছরের এই বৃদ্ধ বাইপাস সার্জারি করে বাড়িতেই থাকেন। গত চার-পাঁচ বছর দলের সঙ্গেই তাঁর যোগাযোগ নেই। সিপিএম নেতাদের অভিযোগ, দোষীদের আড়াল করতেই মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। জেলার প্রাক্তন সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে এই রকম মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। এর ফলে মানুষের মনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।”

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy