Advertisement
E-Paper

পিকনিকে নেশা করে মৃত দুই, অসুস্থ ১৭

পিকনিকে গিয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল দুই যুবকের। তবে পুলিশের অনুমান, মদের সঙ্গে নেশার কোনও ট্যাবলেট মিশিয়ে খাওয়াতেই ওই ঘটনা ঘটেছে। পিকনিকে আসা বাকিরাও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পুলিশ জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার কেতুগ্রামের কোপা গ্রাম থেকে ২৪ জনের একটি দল পাশের রসুই গ্রামে অজয় নদের তীরে পিকনিক করতে যায়। স্থানীয়দের দাবি, সেখানে অজয়ের জল ফুটিয়ে তাঁর মধ্যে মাদক জাতীয় ট্যাবলেট মিশিয়ে নেশা করেন ওই দলের প্রায় সকলেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৩২
শোকার্ত পরিবার। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে তোলা নিজস্ব চিত্র।

শোকার্ত পরিবার। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে তোলা নিজস্ব চিত্র।

পিকনিকে গিয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল দুই যুবকের। তবে পুলিশের অনুমান, মদের সঙ্গে নেশার কোনও ট্যাবলেট মিশিয়ে খাওয়াতেই ওই ঘটনা ঘটেছে। পিকনিকে আসা বাকিরাও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

পুলিশ জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার কেতুগ্রামের কোপা গ্রাম থেকে ২৪ জনের একটি দল পাশের রসুই গ্রামে অজয় নদের তীরে পিকনিক করতে যায়। স্থানীয়দের দাবি, সেখানে অজয়ের জল ফুটিয়ে তাঁর মধ্যে মাদক জাতীয় ট্যাবলেট মিশিয়ে নেশা করেন ওই দলের প্রায় সকলেই। বাড়ি ফেরার পরে রাত থেকেই বমি-পায়খানা শুরু হয় অনেকের। বুধবার বিকেল গড়িয়ে গেলেও বমি না কমায় কেতুগ্রামের বিপিএইচসি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া তাঁদের। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। চিকিৎসকেরা জানান, অসুস্থদের মধ্যে পূর্ণ দাস (৩৭) ও অরুণ দাস (৩০) নামে ওই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। পূর্ণ দাস ওই গ্রামেরই বাসিন্দা হলেও অরুণবাবুর বাড়ি মুর্শিদাবাদের সালার থানার দক্ষিণখণ্ড গ্রামে। পরে বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, “অসুস্থদের মধ্যে ১৭ জন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ও তিন জন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।”

কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি ওই গ্রামের রাহুল থান্ডার, উজ্জ্বল দাসেরা বলেন, “পূর্ণদা ওই নেশার দ্রব্য তৈরি করে আমাদের মগে করে খেতে দেয়। মদের মতো গন্ধও ছিল না, আবার খেতেও মিষ্টি ছিল।” কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। অনেককে জীবনদায়ী ওষুধ পর্যন্ত দিতে হয়েছে। তবে এখন তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল। মৃত পূর্ণ দাসের স্ত্রী পরিদেবী হাসপাতালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, “মঙ্গলবার রাতে একবার বমি ও পায়খানা হয়। বুধবার বেলা ১১টা থেকে আমার স্বামী ও বেশ কয়েকজনের বারবার বমি হতে থাকে। বিকেলের দিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”

কেতুগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি তৃণমূলের দেবাশিস মণ্ডলও হাজির ছিলেন হাসপাতালে। তাঁর দাবি, “হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই দু’জন মারা যান। বাকিদের জোর করে বাড়ি থেকে তুলে এনে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।” গ্রামে গিয়েছে মেডিক্যাল টিমও। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে রসুই গ্রামের অজয় নদের ধারে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন কেতুগ্রাম থানার আইসি বিজয় ঘোষ ও কাটোয়া আবগারি দফতরের ওসি সরজিৎ পালিত। তবে ঘটনাস্থলে ট্যাবলেট জাতীয় কোনও বস্তুর নমুনা সংগ্রহ করতে পারেননি তাঁরা। তাঁরা জানান, মৃত পূর্ণ দাসের বাড়ি তল্লাশি করে ওই ট্যাবলেট পাওয়া যায় কি না দেখতে হবে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এই ঘটনায় মদের যোগ মেলে নি বলে জানালেও বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানিয়েছেন, বেশি নেশা করার জন্য মদের সঙ্গে ট্যাবলেট জাতীয় কিছু মিশিয়ে খেয়েছিল মৃত ও অসুস্থরা।

আর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের ধারণা, স্থানীয় ভাবে তৈরি মদ খাওয়ার ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে মৃতদের ময়না-তদন্ত হয়। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য ভিসেরা ফরেন্সিক দফতরে পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।

picnic tablet ketugram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy