Advertisement
১৮ মে ২০২৪

পাণ্ডবেশ্বরে বাড়িতে বোমা, ভাঙচুর বারাবনি-সালানপুরে

ভোটপর্ব মিটতেই অশান্তি বাধল আসানসোলের বারাবনি ও সালানপুরে। দু’টি এলাকাতেই বাড়ি ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগ উঠেছে যুব তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই সব এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। যদিও যুব তৃণমূল কোনও হামলার কথা মানেনি। বুধবার রাতে পাণ্ডবেশ্বরের রেলপাড় এলাকায় ৪৫ নম্বর বুথের তৃণমূলের এজেন্ট তাপস দাসের বাড়িতে বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে সিপিএমের লোকজনের বিরুদ্ধে।

জামুড়িয়ার সত্তর গ্রামে পুলিশি টহল। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

জামুড়িয়ার সত্তর গ্রামে পুলিশি টহল। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল ও জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৪ ০১:১৭
Share: Save:

ভোটপর্ব মিটতেই অশান্তি বাধল আসানসোলের বারাবনি ও সালানপুরে। দু’টি এলাকাতেই বাড়ি ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগ উঠেছে যুব তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই সব এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। যদিও যুব তৃণমূল কোনও হামলার কথা মানেনি।

বুধবার রাতে পাণ্ডবেশ্বরের রেলপাড় এলাকায় ৪৫ নম্বর বুথের তৃণমূলের এজেন্ট তাপস দাসের বাড়িতে বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে সিপিএমের লোকজনের বিরুদ্ধে। পুলিশের কাছে তাপসবাবু অভিযোগ করেন, রাত ১০টা নাগাদ দুষ্কৃতীরা যখন বোমা ছোড়ে, তিনি বাড়িতে ছিলেন না। বোমার আঘাতে তাঁর স্ত্রী ও ন’মাসের শিশুকন্যা জখম হয়ে দুর্গাপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় সিপিএম নেতা তুফান মণ্ডলের যদিও দাবি, ভোটের দিন নানা এলাকায় বুথ দখলের পরে এখন মানুষের সহনাভূতি আদায়ের জন্য ভুয়ো অভিযোগ করছে তৃণমূল।

ওই রাতেই সালানপুরের কল্যা গ্রামে কংগ্রেসের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য উত্তম রায়ের বাড়িতে কিছু দুষ্কৃতী হামলা চালায়। আসানসোলের কংগ্রেস প্রার্থী ইন্দ্রাণী মিশ্র অভিযোগ করেন, ভোটের দিন গ্রামের বুথ থেকে তাঁদের এজেন্টকে বের করে দিয়ে তৃণমূল আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতী ছাপ্পা ভোট দেওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে ওই বুথে যান উত্তমবাবু। তিনি প্রতিবাদ করলে বচসা শুরু হয়। পুলিশ তখনকার মতো দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়। ইন্দ্রাণীর অভিযোগ, “তখনই তৃণমূলের ওই সব লোকজন শাসিয়েছিল, রাতে হামলা চালাবে।” উত্তমবাবু জানান, ভোটের কাজকর্ম সেরে তাঁর বাড়ি ফিরতে রাত হয়েছিল। তার পরেই ওই দুষ্কৃতীরা চড়াও হয় তাঁর বাড়িতে। বাড়ির টালির চাল ভাঙচুর করা হয়।

ওই গ্রামে সিপিএমের এক এজেন্টের বাড়িতেও হামলা হয় বলে অভিযোগ। সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের জগদীশ মালাকার অভিযোগ করেন, হামলার খবর পেয়ে তিনি গ্রামে যান। দলের কর্মী-সমর্থকদের খোঁজ-খবর নেন। সে জন্য তৃণমূলের লোকজন তাঁকেও হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে রাতেই গ্রামে যায় পুলিশ।

ছাপ্পা ভোট আটকানোর ‘অপরাধে’ বারাবনির পানুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোটকোড়া গ্রামেও বুধবার রাতে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। সেখানেও অভিযুক্ত যুব তৃণমূলের কর্মী-সদস্যেরা। সিপিএমের বারাবনি লোকাল সম্পাদক শ্রীধর রাউথ অভিযোগ করেন, অশান্তির সূত্রপাত বুধবার দুপুরে। তৃণমূল আশ্রিত এক দল দুষ্কৃতী সিপিএম সমর্থক ভোটারদের বুথে ঢুকতে বাধা দেয়। সিপিএম সমর্থকদের সঙ্গে তাদের বচসা থেকে হাতাহাতি বাধে। পুলিশের হস্তক্ষেপে বিষয়টি তখন মিটলেও রাতে ফের তাঁদের দলের দুই কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ শ্রীধরবাবুর। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। বারাবনি ব্লকের যুব তৃণমূল নেতা পাপ্পু উপাধ্যায় অবশ্য কোথাও কোনও হামলায় তাঁদের দলের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি। আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস জানান, ভোটের পরে দু’টি জায়গা থেকে গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।

জামুড়িয়ার মণ্ডলপুরে আবার বৃহস্পতিবার রাতে সিপিএমের পার্টি অফিসে তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সত্তর গ্রামে বুধবার সন্ধ্যা থেকেই গোলমাল চলছিল। প্রথমে তৃণমূলের দুই কর্মীকে মারধর, পরে সিপিএম এবং বিজেপি-র দুই এজেন্টের বাড়িতে পাল্টা হামলার অভিযোগ উঠেছিল সেখানে। ওই গ্রামে পুলিশি টহল চলছিল। বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামের সিপিএম নেতা ক্ষীরোদ বাউড়ির গরুর খাবার রাখার ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের যদিও দাবি, নিজেরাই এ সব করে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছে সিপিএম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pandabeswar clash salanpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE