Advertisement
১১ মে ২০২৪

পূর্বস্থলীতে খুন, নালিশ পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার

ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুলিশ ফাঁড়ি, তবুও গোষ্ঠী কোন্দলকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বোমাবাজি ও খুনের অভিযোগ উঠল পূর্বস্থলী ২ ব্লকের ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের ঘোষপাড়া এলাকায়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এত কিছুর পরেও পুলিশের দেখা মেলেনি। ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের এক সদস্যের দাবি, সোমবার রাত দশটা নাগাদ বোমাবাজি শুরু করে একদল যুবক। তাতে বাড়ির বাইরে এসে গ্রামেরই বুদ্ধদেব ঘোষ নামে এক ব্যক্তি ওই যুবকদের প্রশ্ন করেন, “তোদের দৌরাত্ম্য কবে বন্ধ হবে?”

শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র।

শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৪ ০১:১৯
Share: Save:

ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুলিশ ফাঁড়ি, তবুও গোষ্ঠী কোন্দলকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বোমাবাজি ও খুনের অভিযোগ উঠল পূর্বস্থলী ২ ব্লকের ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের ঘোষপাড়া এলাকায়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এত কিছুর পরেও পুলিশের দেখা মেলেনি।

ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের এক সদস্যের দাবি, সোমবার রাত দশটা নাগাদ বোমাবাজি শুরু করে একদল যুবক। তাতে বাড়ির বাইরে এসে গ্রামেরই বুদ্ধদেব ঘোষ নামে এক ব্যক্তি ওই যুবকদের প্রশ্ন করেন, “তোদের দৌরাত্ম্য কবে বন্ধ হবে?” এরপরই ওই যুবকেরা বুদ্ধদেববাবুর মাথায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপ মারে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বুদ্ধদেববাবুর স্ত্রী অপর্ণাদেবী (৫০)। তাঁকেও বেশ কয়েকবার ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপ মারে ওই যুবকেরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অপর্ণাদেবীর। এরপরেই ওই দলটি এলাকা ছেড়ে পালায় বলে জানা গিয়েছে। বছর সাতান্ন’র বুদ্ধদেববাবুকে প্রথমে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ও পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

কোনও অশান্তি হলে পূর্বস্থলী থানার পুলিশকে ঝাউডাঙা এলাকায় পৌঁছাতে হয় ভাগীরথী নদী পেরিয়ে। তাতে অনেকটা সময় চলে যায়। এই কারণেই এলাকার পঞ্চায়েত ভবনের একটি ঘরে তিন জন কনস্টেবলকে নিয়ে একটি পুলিশ ফাঁড়ি বসানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনাস্থলের ৪০০ মিটারের মধ্যে ফাঁড়ি থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের দেখা মেলে নি এ দিন।

বুদ্ধদেবাবুর ছেলে এ দিন গ্রামেরই ৭ যুবকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের নাম মিঠুন ঘোষ, বলাই ঘোষ, মন্টু ঘোষ, সুভাষ ঘোষ, কেবল ঘোষ, প্রসেন ঘোষ ও পার্থ ঘোষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বছর কালী পুজোর সময় ঝামেলা বেধেছিল গ্রামের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। তার আগেও নানা কারণে বিবাদ লেগেই থাকত। কালীপুজোর সময় কয়েকজন যুবক মদ্যপ অবস্থায় বুদ্ধদেববাবুর আত্মীয় সঞ্জয় ঘোষকে কোপ মারতে গেলে তিনি ওই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। গত ২৯ তারিখে পূর্বস্থলী থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়। অপর্ণাদেবীর পরিবারের দাবি, ওই অভিযোগে যাদের নাম ছিল, খুনের ঘটনাতেও তারাই যুক্ত। মঙ্গলবার বুদ্ধদেববাবুর আত্মীয় ছবি ঘোষ বলেন, “এ ভাবে একজন মানুষ খুন হয়ে যেতে পারে, ভাবা যায় না। কোনও আইন নেই গ্রামে।” আর এক বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ জানান, রাতে বোমার আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখি নিজের বাড়ির সামনে পড়ে রয়েছেন অপর্ণাদেবী। পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ সক্রিয় থাকলে এমন ঘটনা এড়ানো যেত।” মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, দোষীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

purbasthali murder police inactive complaint
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE