কোথাও মাঠ ভর্তি দর্শক, কোথাও আবার ফাঁকা মাঠ। নিজস্ব চিত্র।
এএসপি মাঠে চলছে মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল লিগ। দর্শক মেরেকেটে জনা ২০।
দুর্গাপুর শহরের একটু ভিতরে কমলপুরে চলছে একটি ক্লাব আয়োজিত নকআউট ফুটবল প্রতিযোগিতা। সেখানে মাঠ উপচে পড়ছে দর্শকে। চিৎকারে পুরো মাঠ গমগম করছে। খেলা ঘিরে রীতিমতো উত্তেজনা।
দুর্গাপুরে নানা ফুটবল ম্যাচে দেখা যায় এ রকমই ভিন্ন চিত্র। মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা ফুটবলের মরসুমে সুপার ডিভিশন, প্রথম ডিভিশন, অনূর্ধ্ব ১৪-সহ বিভিন্ন ফুটবল লিগের আয়োজন করে। শহরের বিভিন্ন মাঠে চলে সে সব খেলা। কিন্তু দর্শক প্রায় হয় না বললেই চলে। কোথাও দর্শকাসনে শুধু দু’টি ক্লাবের কর্মকর্তারা। আবার কোথাও পথচলতি মানুষ দু’এক মিনিট দেখে চলে যাচ্ছেন। অথচ, বিভিন্ন ক্লাব আয়োজিত ফুটবল প্রতিযোগিতায় ভিড় উপচে পড়ছে।
কেন এই অবস্থা? নানা মহলের সঙ্গে কথা বলে মূল যে কারণের কথা জানা যায় তা হল, প্রচারের অভাব। মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার তরফে তাদের নানা প্রতিযোগিতা সে ভাবে প্রচার করা হয় না। ফলে, অনেক ফুটবলপ্রেমী জানতেও পারেন না, কোথায় খেলা আছে। ক্রীড়া সংস্থার দাবি, তাদের প্রতিযোগিতাগুলি দীর্ঘমেয়াদি। খেলা হয় দুর্গাপুরের বিভিন্ন মাঠে। সে কারণে অনেক সময়ে প্রচারের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হয়। যার অন্যতম হল অর্থ। ক্রীড়া সংস্থার খেলার জন্য কোনও স্পনসর পাওয়া যায় না। মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক তাপস সরকার জানান, বিভিন্ন মহলের কাছে দরবার করলেও কোনও সাহায্য মেলে না। তাপসবাবু বলেন, “দুর্গাপুরে নানা সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা রয়েছে। কিন্তু কেউই হাত বাড়ায় না।”
তাহলে ক্লাব আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় দর্শক হয় কেন? তাপসবাবুর মতে, ওই প্রতিযোগিতা নির্দিষ্ট মাঠে হয়। আর খেলা হয় নকআউট পদ্ধতিতে। তাই উত্তেজনা থাকে। এ ছাড়া প্রতিযোগিতাও দ্রুত শেষ হয়। তাই এলাকাবাসীর আগ্রহ বেশি থাকে। ক্রীড়া সংস্থার কর্তাদের একাংশের আবার দাবি, বিভিন্ন ক্লাব সংস্থার লিগে নিজেদের খেলা থাকলে দর্শক আনতে যতটা সক্রিয় থাকে, নিজেরা প্রতিযোগিতা আয়োজন করলে তার থেকে বেশি উদ্যোগী হয়।
বিভিন্ন ক্লাবের কর্মকর্তাদের আবার দাবি, ক্লাবের প্রতিযোগিতায় জাঁকজমক অনেক বেশি থাকে, যা মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার খেলায় দেখা যায় না। যেমন। নকআউট প্রতিযোগিতায় কলকাতা ময়দান-সহ নানা জায়গা থেকে খেলোয়াড় আনা হয়। এমনকী, এখন বিদেশিদেরও খেলতে আসতে দেখা যায়। যা আলাদা আগ্রহ তৈরি করে। গ্যামন ব্রিজ ফ্রেন্ডস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুকুট নাহা বলেন, ”ক্রীড়া সংস্থার খেলা জনপ্রিয় করতে হলে বিভিন্ন ক্লাবকেও উদ্যোগী হতে হবে। লিফলেট বিলি করেও প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানানো যেতে পারে।”
মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল সম্পাদক বিধান মজুমদার জানান, সংস্থার নিজস্ব মাঠের সমস্যা রয়েছে। তাই নানা ক্লাবের মাঠ নেওয়া হয়। সেই ক্লাবের কোনও অনুষ্ঠান বা খেলা থাকলে খেলা বাতিল করতে হয়। আগে থেকে প্রচার করার ক্ষেত্রে এই সব সমস্যা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাঁর কথায়, “নিজেদের মাঠ থাকলে প্রচারও সে ভাবে করা যেত।” সংস্থার সাধারণ সম্পাদক তাপসবাবু বলেন, “কী ভাবে প্রতিযোগিতাগুলি আকর্ষণীয় করা যায়, সে নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy