Advertisement
E-Paper

পাড়ায় ঢুকে মাদুরে বসে নানা দাবি শুনলেন প্রার্থী

রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে হঠাত্‌ গাড়ি দাঁড় করিয়ে নেমে পড়েছিলেন প্রার্থী। হেঁটে পৌঁছে গেলেন কাছাকাছি একটি বাড়ির দরজায়। লোকসভা ভোটের প্রার্থী তাঁদের দোরে, এমনটা আগে তেমন দেখেননি।

বিপ্লব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৪৯
দেবশালায় অনুপম হাজরা।—নিজস্ব চিত্র।

দেবশালায় অনুপম হাজরা।—নিজস্ব চিত্র।

রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে হঠাত্‌ গাড়ি দাঁড় করিয়ে নেমে পড়েছিলেন প্রার্থী। হেঁটে পৌঁছে গেলেন কাছাকাছি একটি বাড়ির দরজায়। লোকসভা ভোটের প্রার্থী তাঁদের দোরে, এমনটা আগে তেমন দেখেননি। তাই শুরুতে খানিকটা হতচকিত হয়ে পড়লেও তড়িঘড়ি বসতে দেওয়ার জন্য প্রার্থীর দিকে মোড়া এগিয়ে দিলেন মহিলারা। দেখেশুনে প্রার্থী বললেন, “তালাই বা মাদুর আনুন না। বসে কথা বলতে সুবিধা হবে।” পরের বেশ খানিকটা সময় নানা সমস্যা-দাবির কথা শুনে প্রার্থী চলে যাওয়ার পরে পাড়ার এক মহিলা বললেন, “এ যেন ঘরের ছেলের সঙ্গেই কথা হল!”

আউশগ্রাম ২ ব্লকের দেবশালা গ্রামে প্রচারে এসেছিলেন বোলপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অনুপম হাজরা। ২০০৯ সালে এলাকা পুনর্বিন্যাসের পরে দেবশালা পঞ্চায়েত এলাকাটি পড়েছে বোলপুর লোকসভার মধ্যে। তার আগে এই এলাকার কিছুটা দুর্গাপুর, বাকিটা বোলপুর কেন্দ্রের মধ্যে। জঙ্গল ঘেরা এই প্রত্যন্ত এলাকায় কোনও দলের প্রার্থীরাই প্রচারে আসেন না বলে ক্ষোভ রয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে। শনিবার তৃণমূল প্রার্থীকে সামনে পেয়ে তাই দাবি-দাওয়া উগরে দিলেন তাঁরা।

দেবশালার বাসিন্দা চিন্তা হাজরা, পিরু হাজরা, রুমা হাজরাদের অভিযোগ, বিদায়ী সাংসদকে এক বারও এলাকায় দেখেননি। তাই তাঁদের সমস্যা জানানোর লোকও পাননি। প্রার্থীকে সামনে পেয়ে তাঁরা প্রশ্ন করলেন, “জিতলে আমাদের কথা ভাববেন তো!” প্রার্থী অনুপমবাবুর উত্তর, “আমি আপনাদেরই ঘরের লোক। তাই আপানারা ছাড়া আমার কোনও গতি নেই।” তিনি আরও জানান, তিনি সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক। সাংসদ হলে সরাসরি সমাজসেবায় যোগ দিতে পারবেন।

প্রার্থী এলাকায় এসেছেন জেনে ভিড় করেন আশপাশের মহিলা-পুরুষেরা। অনেকে এলাকায় ভাল রাস্তার দাবি জানালেন। কেউ আবার এলাকায় একটি কলেজে গড়ে দেওয়ার দাবিও জানালেন। সে সব শুনে অনুপমবাবু বলেন, “জিতে আপনাদের দাবিগুলি পূরণের চেষ্টা করব।” কী ভাবে তাঁকে ভোট দিতে হবে, ইভিএম নিয়ে তা বোঝান তিনি। বেশ কিছু ক্ষণ কাটানোর পরে অন্য এলাকায় যাওয়ার জন্য উঠে পড়লেন প্রার্থী। গাড়িতে ওঠার সময়ে কয়েক জন যুবক তাঁর হাত ধরে বললেন, “এখানে একটি মাদ্রাসা দরকার। বহু সংখ্যালঘু ছেলেমেয়ে পড়তে চায়। কিন্তু কোনও মাদ্রাসা না থাকায় তা সম্ভব হয় না।” অনুপমবাবুর আশ্বাস, “সাংসদ হলে এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা করব।”

এর পরে প্রার্থীর গাড়ি ছোটে কোটা, চণ্ডীপুর, সোঁয়াই-সহ নানা এলাকায়। কোথাও বাঁশের মাচার উপরে বসে থাকা মানুষজনের সঙ্গে আলাপ, কোথাও এলাকার লোকজনের এগিয়ে দেওয়া ডাব খেলেন প্রার্থী, শুনলেন অভাব-অভিযোগও। শেষে অনুপমবাবুর দাবি, এখানে মানুষের প্রাথমিক চাহিদাগুলিই পূরণ হয়নি। কোনও উন্নয়ন হয়নি এই এলাকায়। তিনি বলেন, “আমি যদি ভোটে জিতি তবে এই এলাকার মানুষের জন্য উন্নয়ন করেই ছাড়ব।”

বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারের সিপিএম প্রার্থী রামচন্দ্র ডোম অবশ্য এই এলাকায় অনুন্নয়নের কথা মানতে চাননি। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় না যাওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি। তাঁর পাল্টা দাবি, “আগে বহু বার ওই এলাকায় আমি গিয়েছি। কিন্তু শাসকদলের বাধার জন্যই গত তিন বছর যেতে পারিনি।”

bolpur constituency tmc anupam hazra budbud biplab bhattacharya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy