গত দু’বছরে মোটরবাইকে টাকা নিয়ে যাওয়ার সময়ে চালকল মালিকদের উপর একাধিকবার হামলা হয়েছে। পুলিশের পরামর্শ অনুযায়ী তারপর থেকে গাড়িতে করে টাকা নিয়ে যাতায়াত শুরু করেন তাঁরা। কিন্তু শনিবার গাড়ির কাঁচ ভেঙে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ফের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন চালকল মালিকেরা।
সোমবার সেহারাবাজারের মিলন ভবনে দক্ষিণ দামোদর এলাকার চালকল মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন বর্ধমানের এসডিপিও অমালনকুসুম ঘোষ। সেখানেই ওই মালিকেরা প্রশ্ন তোলেন, ভরদুপুরে গাড়ির কাঁচ ভেঙে, রিভলবার দেখিয়ে ছিনতাই হলে নিরাপত্তা কোথায়? এমনটা চললে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবেন বলেও জানান তাঁরা। বৈঠকে হাজির ছিলেন বর্ধমানের চালকল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি জয়দেব বেতাল। তিনি বলেন, “এসপি সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার উপর আমাদের যথেষ্ট আস্থা আছে। তিনিই আমাদের ভরসা দিয়েছিলেন যে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না। তারপরেও এমনটা হওয়ায় খারাপ লাগছে।” গত শনিবার কার্যত ভরদুপুরে কৃষক সেতুর উপর সেহারাবাজারের এক চালকল মালিকের গাড়িতে হামলা চালায় পাঁচ-সাত জন দুষ্কৃতীর এক দল। গাড়ির সামনের ও পিছনের কাঁচ ভেঙে পিছনের সিটে থাকা প্রায় ১০ লক্ষ টাকার একটি ব্যাগ ছিনতাই করে তারা। পলেমপুর পুলিশ ক্যাম্প থেকে ২০০ গজ দূরের এ ঘটনায় আতঙ্কিত চালকল মালিকেরা। তাঁদের প্রশ্ন, রাস্তায় পুলিশের পাহারা থাকা কী করে ওই ঘটনা ঘটল?
বৈঠকে এ হেন প্রশ্নের মুখে পড়ে এসডিপিও বলেন, “এতটাই অভিনব উপায়ে ওই টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে যে কেউ কিছুই বুঝতে পারেননি। কারণ ওই পথে আগে কোনওদিন চালকল মালিকদের কাছ থেকে টাকা কেড়ে নেওয়া হয় নি। ফলে সকলেই ভেবেছিলেন, রাস্তায় কোনও গোলমালে জড়িয়ে পড়েছেন ওই গাড়ির যাত্রীরা।”
চালকল মালিকেরা আরও জানান, শনিবার ওই গাড়ির পিছনের সিটে বেশ কয়েকটি একই রকম দেখতে ব্যাগ রাখা ছিল। কিন্তু ছিনতাইকারীরা অন্য কোনও ব্যাগে হাত না দিয়ে টাকার ব্যাগটিই কেড়ে নিল কীভাবে? তাঁদের সন্দেহ, যে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলা হয়েছিল, তার আশপাশ থেকেই কেউ খবর দিয়েছে। জেলা পুলিশের এক অংশেরও দাবি, ওই সূত্রটিকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হতেই পারে ব্যাঙ্কের আশপাশ থেকে কেউ টাকার খবর দিয়েছিল।
চালকল মালিকদের দাবি, গত কয়েক বছরে বর্ধমান শহর থেকে স্বল্প দূরত্বে রায়না, খণ্ডঘোষ, মাধবডিহি, জামালপুর নিয়ে গঠিত দক্ষিণ দামোদর এলাকায় প্রচুর চালকল গড়ে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্য তো বটেই বিদেশেও চাল যায় সেখান থেকে। কিন্তু গত দুই বছরে ওই এলাকায় প্রায় ১৫টি চালকলের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ দায়ের করা হয়নি এমন ঘটনাও রয়েছে বেশ কিছু। ফলে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করা গেলে ব্যবসা করা মুশকিল হয়ে উঠছে বলেও জানান তাঁরা। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে ভাবনার আশ্বাস দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy