দুর্ঘটনার পরে রাস্তার পাশে পড়ে ছেলের জুতো।
বিএসএফ জওয়ানদের গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে এক বালকের। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার নতুনগ্রামের পীরতলায় এসটিকেকে রোডের উপর। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও এক বালক। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মণিরুদ্দিন শেখ(১০)। সে স্থানীয় সুদপুর উচ্চবিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খাজুরডিহি গ্রামের পিসির বাড়ি থেকে সাইকেল চালিয়ে নতুনগ্রামে নিজের বাড়ি যাচ্ছিল মণিরুদ্দিন। সাইকেলের পিছনে ছিল তার পিসির ছেলে রবিউল শেখ। কাটোয়া শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে পীরতলার কাছে এসটিকেকে রোড ছেড়ে বাঁ দিকে গ্রামের রাস্তায় ঢোকার মুখে বিএসএফ জওয়ান ভর্তি একটি ট্রাক তাদের সাইকেলে ধাক্কা মারে। গুরুতর আহত অবস্থায় বিএসএফ জওয়ানেরাই তাদের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই মণিরুদ্দিনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। গুরুতর আহত রবিউলকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বিএসএফের ডিএসপি পদমর্যাদার এক আধিকারিক জানান, ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলায় নির্বাচনী কাজ করে তারা ট্রাকে করে হাওড়া যাচ্ছিলেন। সাইকেলটি হঠাত্ ট্রাকের সামনে চলে আসার পর চালক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি।
দুর্ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিএসএফ জওয়ানদের ঘিরে ধরে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানাতে থাকেন। তখন বিএসএফ জওয়ানেরা স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে ফোন নম্বর নিয়ে কাটোয়া থানায় ফোন করেন। তার পর নিজেদের ট্রাকে গুরুতর আহত দুই বালককে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে মনিরুদ্দিনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা।
কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিজনেরা।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সাইকেলটি ভেঙে-তুবড়ে রাস্তার একধারে পড়ে রয়েছে। পাশেই পড়ে রয়েছে ছেঁড়া জামাকাপড়। মণিরুদ্দিনের বাবা হাফিজুদ্দিন বর্তমানে কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর দুই পরিবারের সদস্যরা কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে যান।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, এসটিকেকে রোডের এক পাশে ধান-সহ নানা শস্য রোদে শুকোতে দেওয়া হয়। অন্য পাশ দিয়ে যান চলাচল করে। রাস্তা সর্ংকীণ হয়ে যাওয়ার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে। দিন কয়েক আগে, টিকরখাজি গ্রামে এসটিকেকে রোডের উপর বার বার দুর্ঘটনা ঘটার কারণে প্রায় তিন ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ দিনও ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীরা রাস্তা অবরোধের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। যদিও বিএসএফ কর্তারা আহত ও মৃত বালকের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত অবরোধ হয়নি।
নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy