Advertisement
E-Paper

বাধা পেলেন শোভনদেব, কাঠগড়ায় দোলা-গোষ্ঠী

আইএনটিটিইউসি-র শোভন বনাম দোলা গোষ্ঠীর আকচাআকচি থামাতে বার্তা দিতে হয়েছে খোদ তৃণমূল নেত্রীকে। বলে দেওয়া হয়েছে, ‘এক কারখানা এক ইউনিয়ন’ নীতি মেনেই চলতে হবে। এর অন্যথা করা চলবে না। তার জন্য শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি ‘কোর কমিটি’ও গড়ে দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০৬
কারখানায় যেতে বাধা পেলেও পরে দুর্গাপুরে তৃণমূলের মিছিলে পা মেলালেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

কারখানায় যেতে বাধা পেলেও পরে দুর্গাপুরে তৃণমূলের মিছিলে পা মেলালেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

আইএনটিটিইউসি-র শোভন বনাম দোলা গোষ্ঠীর আকচাআকচি থামাতে বার্তা দিতে হয়েছে খোদ তৃণমূল নেত্রীকে। বলে দেওয়া হয়েছে, ‘এক কারখানা এক ইউনিয়ন’ নীতি মেনেই চলতে হবে। এর অন্যথা করা চলবে না। তার জন্য শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি ‘কোর কমিটি’ও গড়ে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু গোষ্ঠীবাজিতে অভ্যস্ত নেতা-কর্মীরা তাতে শুধরোনোর নয়। বুধবারও বিরোধী গোষ্ঠীর বাধার মুখে পড়ে দুর্গাপুরের কার্বন ও গ্রাফাইটজাত সামগ্রী উৎপাদনের এক বেসরকারি কারখানার কাছ থেকে ফিরে যেতে বাধ্য হলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, “একটি কারখানায় আইএনটিটিইউসি-র একটি ইউনিয়নই থাকবে, দলনেত্রীর এই বার্তা দিতেই আমি ওখানে গিয়েছিলাম। কয়েক জন যুবক আমার গাড়ি আটকে দেয়।”

সগড়ভাঙার ওই কারখানা সূত্রের খবর, সেখানে আইএনটিটিইউসি-র দু’টি ইউনিয়ন রয়েছে। একটি দোলা সেন অনুগামী শ্রমিক সঙ্ঘ। অন্যটি শোভনদেব অনুগামী শ্রমিক ইউনিয়ন। দুই সংগঠনে মাঝে-মধ্যেই অশান্তি বাধে এবং তার জেরে কারখানার কাজকর্ম ব্যাহত হয় বলে অভিযোগ। শ্রমিক সঙ্ঘের লোকেরাই এ দিন শোভনদেবকে বাধা দেন বলে অভিযোগ। পরে শোভনবাবু অবশ্য দাবি করেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে সমস্যা হয়েছিল। পরে মিটে যায়। দোলা অবশ্য বলেন, “সংগঠনের কোনও ব্যাপারে আমি সংবাদমাধ্যমের কাছে একটি কথাও বলব না।”

কারখানা সূত্রে জানা যায়, ইদানীং শ্রমিকদের বেতনবৃদ্ধি সংক্রান্ত দাবি-দাওয়া নিয়ে শ্রমিক সংঘের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের আলোচনা চলছে। শ্রমিক ইউনিয়ন সেখানে ডাক পায়নি। তা নিয়ে দু’পক্ষের ঠান্ডা লড়াই চলছিল। এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ শোভনদেব কারখানার সামনে পৌঁছন। শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ ধীবরের দাবি, শোভনবাবু তাঁদের ইউনিয়নের কাজকর্ম নিয়ে পরামর্শ দিতে এসেছিলেন। কিন্তু স্থানীয় গোলপার্কের কাছে শ্রমিক সঙ্ঘের লোকজন পথ আটকানোয় তিনি ফিরে যেতে বাধ্য হন।

গাড়ি আটকানো হল কেন? শোভনদেবের মতে, “ওরা বোধহয় ভেবেছিল, ওখানে আমি আরও একটি ইউনিয়ন খুলতে গিয়েছি। পরে ভুল বুঝতে পেরে সরে যায়।” তারা কারা? শোভনদেবের জবাব, “কে ছিল কী করে বলব? আমি কি সবাইকে চিনি? পরে তো আবার ওরাই আমার নামে স্লোগান দিচ্ছিল!” তবে দিলীপবাবুর অভিযোগ, “শ্রমিক সঙ্ঘের লোকজন এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে।” তাঁর কথায়, “আমরা কারখানার ভিতরে ছিলাম। হঠাৎ শুনি, কয়েক জন শোভনবাবুর গাড়ি আটকে দিয়েছে। সঙ্গে-সঙ্গে ছুটে যাই। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে হতাশ হয়ে উনি চলে যান।”

আইএনটিটিইউসি-র বর্ধমান জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ই শ্রমিক সঙ্ঘের সভাপতি। তাঁর দাবি, “কী হয়েছে, আমি জানি না। শোভনবাবু আমাদের শ্রদ্ধেয় শ্রমিক নেতা। ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ হলে ঠিক কী হয়েছে তা জানার চেষ্টা করব।” তবে একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ওই কারখানায় তাঁদের একটিই ইউনিয়ন রয়েছে। শ্রমিক সঙ্ঘের কোষাধ্যক্ষ সুমিত সেনগুপ্ত অবশ্য দাবি করেন, “সিপিএম ছেড়ে আসা কয়েক জন মিলে আইএনটিটিইউসি-র নাম দিয়ে একটি ইউনিয়ন গড়েছে। তারাই এই ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের অপদস্থ করার চক্রান্ত করেছে। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত গিয়ে শোভনবাবুর সঙ্গে দেখা করে খোঁজখবর নিয়েছি।” তৃণমূলের ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি সুনীল চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “ দুঃখজনক ঘটনা। উনি যে আসবেন সে খবর আমাদের কাছে ছিল না। তা হলে এমন ঘটনা এড়ানো যেত।”

shovandeb chattopadhyay dola sen inttuc tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy