Advertisement
E-Paper

ব্যবসায়ীকে ধরার প্রতিবাদে অবরোধ, অশান্তি

এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে অবরোধ করা হয়েছিল জি টি রোড। ব্যবসায়ীদের সেই অবরোধ তুলতে লাঠি চালাল পুলিশ। বুধবার বিকেলে এই ঘটনার জেরে প্রায় দেড় ঘণ্টা বর্ধমান শহরের পুরনো জি টি রোড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকে। অবরোধকারীদের মধ্যে পাঁচ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বর্ধমান জেলা ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতির প্রাক্তন সম্পাদক রণধীর সিংহ ভুতোরিয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৪ ০০:৪৩
জি টি রোডে অবরোধ তুলতে লাঠি পুলিশের। বুধবার বিকেলে ছবিটি তুলেছেন উদিত সিংহ।

জি টি রোডে অবরোধ তুলতে লাঠি পুলিশের। বুধবার বিকেলে ছবিটি তুলেছেন উদিত সিংহ।

এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে অবরোধ করা হয়েছিল জি টি রোড। ব্যবসায়ীদের সেই অবরোধ তুলতে লাঠি চালাল পুলিশ। বুধবার বিকেলে এই ঘটনার জেরে প্রায় দেড় ঘণ্টা বর্ধমান শহরের পুরনো জি টি রোড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকে। অবরোধকারীদের মধ্যে পাঁচ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বর্ধমান জেলা ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতির প্রাক্তন সম্পাদক রণধীর সিংহ ভুতোরিয়া।

পুলিশ অবশ্য লাঠি চালানোর কথা মানেনি। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার বিকেল থেকে দীর্ঘক্ষণ দোকান বন্ধ রাখেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতির দাবি, সন্ধ্যায় পুলিশ জোর করে কিছু দোকান খুলিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত এ দিন সকালে। শহরের বি সি রোডের বিজয়তোরণ লাগোয়া এলাকায় বস্ত্র ব্যবসায়ী রাইচাঁদ সুরানার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়, তিনি দোকানে আসা এক ক্রেতাকে মারধর করেছেন। ওই ক্রেতা, শহরের বাজেপ্রতাপপুরের এক বাসিন্দা এ দিন দোকানে গিয়েছিলেন কয়েক দিন আগে কেনা দু’টি কাপড়ের মধ্যে একটি পাল্টাতে। সেটি মাঝামাঝি কাটা ছিল। কিন্তু সেটিকে পাল্টাতে না চাওয়ায় রাইচাঁদবাবুর সঙ্গে তাঁর বচসা বাধে। তা এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে বিসি রোডে লোক জড়ো হয়ে যায়। থানায় খবর দেন সিভিক পুলিশের এক কর্মী।

পুলিশ রাইচাঁদবাবুকে থানায় ডেকে পাঠায়। এ দিকে তাঁর মারধরে আহত হয়ে ওই ক্রেতা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন বলে অভিযোগ। ডেকে পাঠানো ব্যবসায়ীকে পুলিশ থানায় বসিয়ে রাখে। তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে এই আশঙ্কায় শহরের ব্যবসায়ীরা প্রথমে থানায় জড়ো হন। তাঁরা ওই ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানালেও পুলিশ তাতে রাজি হয়নি। শেষে বিকেলে ব্যবসায়ীরা জি টি রোড অবরোধ করেন।

অবরোধে ঘণ্টাখানেক শহরের জি টি রোড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে গাড়ির লম্বা সারি। বারবার পুলিশ ওই অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করলেও তা শোনেননি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা দাবি, করতে শুরু থাকেন, অবিলম্বে রাইচাঁদবাবুকে ছেড়ে দিতে হবে। এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ এবং বর্ধমান থানার আইসি আব্দুুল গফ্ফর শেষে অবরোধ তোলার জন্য ১০ মিনিট সময় দিলেও তাতে কর্ণপাত করেননি ব্যবসায়ীরা। তখন লাঠি হাতে অবরোধকারীদের বি সি রোডের রানিগঞ্জ বাজার পর্যন্ত তাড়া করে পুলিশ। কয়েক জনের উপরে লাঠি চালানো হয় বলেও অভিযোগ। উল্টো দিক থেকেও পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছোড়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করে ওই পাঁচ ব্যবসায়ীকে।

ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতির সম্পাদক শীর্ষেন্দু সাধু জানান, সকালে এক ক্রেতার সঙ্গে রাইচাঁদবাবুর গোলমাল বাধে। এর পরে রাইচাঁদবাবুকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য থানায় যখন সমিতির নেতাদের সঙ্গে পুলিশের আলোচনা চলছিল, তখনই কিছু ব্যবসায়ী জি টি রোড অবরোধ করেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, ক্রেতা ওই প্রবীণ ব্যবসায়ীর সঙ্গে রীতিমতো দুর্বব্যহার করেছেন। তাতেই দোকানের কর্মচারীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারই জেরে ওই ক্রেতাকে গালিগালাজ করা হয়। তবে মারধর করা হয়নি।

বর্ধমান থানার তরফে জানানো হয়েছে, অবরোধস্থল থেকে ধৃত ওই চার বাবসায়ীর নাম রণধীর সিংহ ভুতোরিয়া, শৌভিক কোনার, পিন্টু মেহতা ও কালীপ্রসাদ সরকার। পুলিশের লাঠি চালানোর কথা অস্বীকার করে পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “ওই ক্রেতা রাইচাঁদবাবুর দোকানে আগে কেনা একটি জিনিস পাল্টাতে গেলে তাঁকে লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। চড়-ঘুষিও মারা হয়। তাই ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আজ, বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে। পরে তাঁর গ্রেফতারের প্রতিবাদে দীর্ঘক্ষণ এক দল লোক জি টি রোড অবরোধ করেন। পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। ওই চার জন ধৃতের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়েছে।”

arrest of businessman protest g.t road blockade burdwan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy