Advertisement
E-Paper

বিরোধী দলের সাংসদকে স্বীকৃতি না দেওয়ায় ক্ষোভ

সিপিএম আমলের সাংসদ তহবিলের টাকায় শহরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী প্রতীক্ষালয় গড়ছে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা। নির্মাণ শেষে নিজেদের কৃতিত্ব দিয়ে বোর্ডও ঝোলাচ্ছে, অথচ স্বীকৃতি নেই প্রাক্তন সাংসদের এমনই অভিযোগ তুলল সিপিএম। তাদের দাবি, তৃণমূল সংসদীয় আইন ভেঙে রাজনীতি করছে। জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:১৭
ফলকে নাম নেই সিপিএম সাংসদের। দুর্গাপুরে ডিপিএল গেটের সামনে। —নিজস্ব চিত্র।

ফলকে নাম নেই সিপিএম সাংসদের। দুর্গাপুরে ডিপিএল গেটের সামনে। —নিজস্ব চিত্র।

সিপিএম আমলের সাংসদ তহবিলের টাকায় শহরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী প্রতীক্ষালয় গড়ছে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা। নির্মাণ শেষে নিজেদের কৃতিত্ব দিয়ে বোর্ডও ঝোলাচ্ছে, অথচ স্বীকৃতি নেই প্রাক্তন সাংসদের এমনই অভিযোগ তুলল সিপিএম। তাদের দাবি, তৃণমূল সংসদীয় আইন ভেঙে রাজনীতি করছে। জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

শিল্পশহর দুর্গাপুর যখন গড়ে উঠেছিল তখন তা ছিল একবারেই দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা (ডিএসপি) কেন্দ্রিক। বাসিন্দাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ডিএসপি বেশ কিছু প্রতীক্ষালয় গড়ে তোলে। সেগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণও করে। পরে শহরের অবয়ব বাড়লে তত্‌কালীন দুর্গাপুর নোটিফায়েড এরিয়া ও দুর্গাপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বেশ কিছু নতুন প্রতীক্ষালয় গড়ে তোলে ইস্পাতনগরীর বাইরের এলাকাগুলিতে। শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেই সব যাত্রী প্রতীক্ষালয়গুলি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। কোথাও মাথার ছাদ ভেঙে পড়েছে, কোথাও দেওয়াল ধসে গিয়েছে, কোথাও বা মেঝের কংক্রিট উঠে গিয়েছে। আবার কোনও প্রতীক্ষালয় এতটাই নোংরা যে বসা তো দূর দাঁড়ানোরও উপায় থাকে না। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, এই সব যাত্রী প্রতীক্ষালয় কোনও কাজে লাগে না। গত কয়েক বছরে দুর্গাপুর শহর অনেক আধুনিক হয়েছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যাত্রী প্রতীক্ষালয়গুলির সংস্কার করা দরকার।

বাসিন্দাদের অভিযোগের কথা জেনে তত্‌কালীন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সিপিএম সাংসদ সাইদুল হক ২০১৩ সালের অক্টোবরে ঘোষণা করেন, সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে শহরের সাতটি যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের সংস্কারের জন্য মোট ৩৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সংস্কার কাজ সম্পন্ন করবে পুরসভা। মনীষীদের নামে প্রতীক্ষালয়গুলির নামকরণ করা হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, সাতটির মধ্যে অন্তত তিনটি প্রতীক্ষালয়ের সংস্কারের কাজ শেষ। তার মধ্যে ডিপিএলে দুটি এবং বিধাননগরের হাডকো মোড়ের একটি যাত্রী প্রতীক্ষালয় চালুও করে দিয়েছে পুরসভা। বোর্ডও লাগানো হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় ও মেয়র পারিষদ (পূর্ত) প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে যাত্রী প্রতীক্ষালয়টি চালু করা হল। তবে অমরাবতী, ফুলঝোড়, পিসিবিএল রোটারি ও পাম্পহাউস মোড়ের যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের সংস্কার কাজ এখনও শেষ হয়নি।

প্রাক্তন সাংসদ সাইদুল হক বলেন, “সাংসদ কোটার অর্থে উন্নয়নমূলক কাজ হলে পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডিং রুল অনুযায়ী তার উল্লেখ জরুরি। কিন্তু ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে তৃণমূল পরিচালিত দুর্গাপুর পুরসভা তা মানেনি। জেলাশাসকের কাছে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত লিখিত অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” সিপিএমের দাবি, রাজনৈতিক সৌজন্য বজায় রাখতে বিরোধী পরিচালিত পুরসভার মাধ্যমেই উন্নয়নের কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রাক্তন সাংসদ। কিন্তু কাজ করানোর আগে প্রকল্প নিয়ে সাংসদ বা সাংসদ প্রতিনিধির সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করেনি পুরসভা। সিপিএমের দুর্গাপুর পূর্ব জোনাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “এর আগেও আমাদের প্রাক্তন সাংসদের অর্থে উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে রাজনীতি করেছিল তৃণমূল। যাত্রী প্রতীক্ষালয় নিয়েও সেই ধারাই বজায় থাকল। পুরসভার উন্নয়নমূলক কাজ শহরবাসীর নজরে আসছে না। তাই প্রাক্তন সিপিএম সাংসদের সাংসদ কোটার অর্থে সংস্কার হওয়া যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের কৃতিত্ব নিতে হচ্ছে তৃণমূলকে।”

তবে অভিযোগ নস্যাত্‌ করে পুরসভার মেয়র তথা দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই ধরনের অভিযোগের কথা আমার জানা নেই। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সবদিক খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।”

durgapur oppositon cpm
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy