Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বারবার বৈঠকই সার, স্কুল ক্রীড়া বন্ধ তিন বছর

তৈরি হয়েছে নতুন কমিটি। কিন্তু তিন বছর কেটে গেলেও দুর্গাপুরে এখনও বন্ধ মহকুমা স্তরের স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা’র উদাসীনতায় পড়ুয়াদের মধ্যে খেলাধুলোয় আগ্রহ তৈরি হচ্ছে না। এমনই অভিযোগ পড়ুয়া, অভিভাবক এবং বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের। তবে দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, “নতুন কমিটি তৈরি করে ইতিমধ্যেই একবার বৈঠক হয়েছে। দ্রুত যাতে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যায় তার ব্যবস্থা করা হবে।”

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৪ ০১:৩১
Share: Save:

তৈরি হয়েছে নতুন কমিটি। কিন্তু তিন বছর কেটে গেলেও দুর্গাপুরে এখনও বন্ধ মহকুমা স্তরের স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।

মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা’র উদাসীনতায় পড়ুয়াদের মধ্যে খেলাধুলোয় আগ্রহ তৈরি হচ্ছে না। এমনই অভিযোগ পড়ুয়া, অভিভাবক এবং বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের। তবে দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, “নতুন কমিটি তৈরি করে ইতিমধ্যেই একবার বৈঠক হয়েছে। দ্রুত যাতে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যায় তার ব্যবস্থা করা হবে।”

দীর্ঘদিন ধরে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা না হওয়ায় বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়া থেকে শিক্ষক সকলেই ক্ষুব্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাঁকসার একটি হাইস্কুলের পড়ুয়া জানান, আগে তাদের স্কুল কবাডিতে মহকুমা স্তরে ভাল ফল করত। ব্যক্তিগত ইভেন্টেও অনেকে মহকুমায় সেরা হত। ফলে, স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যেও খেলাধুলোয় যোগ দেওয়ার উৎসাহ ছিল। কিন্তু সামনে কোনও প্রতিযোগিতা না থাকায় তা আর হচ্ছে না। অন্ডাল হাইস্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক সুবীর মজুমদার বলেন, “পড়াশোনার সঙ্গে খেলাধুলো, শরীরচর্চা করলে পড়ুয়াদের মানসিক বিকাশ ভাল ভাবে ঘটতে পারে। কিন্তু এখন খেলার মাঠে যাওয়ার বদলে মোবাইল ফোন, ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়ছে পড়ুয়ারা। দ্রুত যাতে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, সেই দাবিই জানাচ্ছি।” কাঁকসার সিলামপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পালও বলেন, “খেলাধুলোর ফলে সহনশীলতা ও মনসংযোগ বাড়ে পড়ুয়াদের।”

স্কুলগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, তিন বছর আগে পর্যন্ত প্রতি বছর মহকুমা স্কুল ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতো। মহকুমার সব স্কুলগুলিকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হত আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা। সেই প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়নরা আন্তঃ মহকুমা স্তরের খেলায় যোগ দেওয়ার সুযোগ পেত।

স্কুলগুলির অভিযোগ, আগে এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের দায়িত্বে থাকা ক্রীড়া সংস্থা চালাতেন মূলত বিভিন্ন স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষকেরা। কিন্তু রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতি বদলে যায়। ক্রীড়া শিক্ষকদের অনেককেই সরিয়ে কমিটিতে এমন অনেককেই জায়গা দেওয়া হয়, যাঁদের সঙ্গে সঙ্গে খেলাধুলোর কোনও সম্পর্ক নেই। যদিও নতুন কমিটিও বেশ কয়েকবার বৈঠকও করে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৈঠকের কোনও সিদ্ধান্তই কার্যকর হয়নি। এবিটিএ-র দুর্গাপুর জোনের সম্পাদক তথা ভারতী হিন্দি হাইস্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক সিদ্ধার্থ বসু অভিযোগ, “২০১১ সালের পর থেকে আর কোনও মহকুমা স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়নি। একাধিক বার শুধু বৈঠকই হয়েছে।”

সম্প্রতি নতুন কমিটি আবার বৈঠকে বসেছিল। সেখানে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, দুর্গাপুর মহকুমাকে তিনটি জোনে ভাগ করে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। দ্রুত মহকুমা স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের আশ্বাস দিয়েছেন দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত। যদিও তৃণমূল শিক্ষক সেলের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অদ্বৈত কোনারের অভিযোগ, “কমিটি তৈরি হওয়ার পরেও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা না হওয়ার কারণ মহকুমা আধিকারিকদের দীর্ঘসূত্রিতা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

school sports arpita mazumder durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE