Advertisement
E-Paper

ভোটের হার কিছুটা কম, শান্তিপূর্ণ ভোট ৮ বুথে

দু’একটা হুমকির অভিযোগ ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভাবেই পুনর্নির্বাচন হয়ে গেল জেলার আটটি বুথে। ভোট পড়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ। তার মধ্যে জামালপুরের চৌবিড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতকরা ৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচন আধিকারিক সৌমিত্র মোহন বলেন, “শান্তিপূর্ন ভোট হয়েছে ওই আটটি বুথে। শুধু মঙ্গলকোটের ৫৩ নম্বর বুথে স্বামী-স্ত্রী মিলে একসঙ্গে ইভিএমের সামনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার জন্য ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৪ ০১:১১
ভাতারের সেরুয়া গ্রামে চলছে ভোট।

ভাতারের সেরুয়া গ্রামে চলছে ভোট।

দু’একটা হুমকির অভিযোগ ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভাবেই পুনর্নির্বাচন হয়ে গেল জেলার আটটি বুথে। ভোট পড়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ। তার মধ্যে জামালপুরের চৌবিড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতকরা ৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচন আধিকারিক সৌমিত্র মোহন বলেন, “শান্তিপূর্ন ভোট হয়েছে ওই আটটি বুথে। শুধু মঙ্গলকোটের ৫৩ নম্বর বুথে স্বামী-স্ত্রী মিলে একসঙ্গে ইভিএমের সামনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার জন্য ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

মঙ্গলবার ভাতারের সেরুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম দু’ঘন্টাতেই ৮৬২ এর মধ্যে ১৫৫টি ভোট পড়ে গিয়েছে। চড়া রোদেও ঠায় লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন অনেকে। বেশিরভাগই বেশ বিস্মিত। লাইনে দাঁড়িয়েই রাজীব ভট্টাচার্য ও সুনীল ঘোষ বলেন, “৩০ তারিখ একবার ভোট দিলাম। আবার এ দিন। কিন্তু গতবার গোলমাল তো কিছু হয়নি। তাহলে পুনর্নির্বাচন কেন হল তা বুঝতে পারলাম না।” লাইন থেকে বের হয়ে আরও দুই ভোটার নীরদ দাড়ি ও রামকৃষ্ণ ঘোষ বলেন, “ফের ভোট দিয়ে ভালই লাগছে। ৩০ এপ্রিল এই স্কুলের দুটি বুথে ভোট হয়েছিল। তার একটিতে নতুন করে ভোট হল, অন্যটিতে হল না। কেন ফের ভোট হল তা জানতে পারলে ভাল হত।” ভাতারের বিডিও প্রলয় মণ্ডলও বলেন, “কেন নতুন করে ভোট নেওয়া হয়েছে, তা বলতে পারব না। সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের চিঠি পাই, ১২৬ নম্বর বুথে ফের ভোট নিতে হবে। সঙ্গেসঙ্গে ঢোকঢোল পিটিয়ে প্রচার করিয়েছি। তবে গত বার ওই বুথ নিয়ে কোনও খারাপ রিপোর্ট জমা পড়েনি।”

মঙ্গলকোটের চাকদহের একটি বুথে ঢোকা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথাকাটাকাটি।

গতবার এই বুথে ৮৬২জন ভোটারের মধ্যে ৮২০জন ভোট দিয়েছিলেন। শতকরা ৯৫ ভাগের বেশি ভোট পড়েছিল। ব্লক প্রশাসন ও পুলিশের একাংশের ধারনা সেই কারনেই নতুন করে ভোট নেওয়া হয়েছে মঙ্গলবার। তবে এ দিনও ওই বুথে সিপিএমের কোনও এজেন্ট ছিল না। জামালপুরের চৌবেড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোট পড়েছে শতকরা ৯৫ ভাগ। বুথের ভেতরে সংবাদমাধ্যমের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

এ দিন কোনও বুথেই অবশ্য কেন্দ্রীয় বাহিনী বিশেষ দেখা যায়নি। জলপাই রংয়ের পোষাকে বুথ সামলাতে দেখা গিয়েছে রাজ্য পুলিশকেই। তবে বুথে বুথে পুলিশের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। বর্ধমানের এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ বলেন, “ভাতারের ওই বুথে আগেও গোলমাল ছিল না। আজও হয়নি।” অবশ্য সিপিএম-সহ সমস্ত দলের এজেন্ট ওই বুথে ছিল বলে তাঁর দাবি।

কাঁকসার বেলডাঙার ২৮ নম্বর বুথে অবশ্য শাসকদলের হুমকিতে এজেন্ট দিতে পারেনি বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তথা কাঁকসা জোনাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক বীরেশ্বর মণ্ডলের অভিযোগ, “সোমবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে লাগাতার হুমকি দেওয়া হয় যে এজেন্ট দেওয়া হলে ভয়াবহ পরিণতি হবে।” কংগ্রেসেরও অভিযোগ, তৃণমূলের হুমকিতে এলাকার কাউকে এজেন্ট দাঁড় করানো যায়নি। তাই পানাগড় থেকে এজেন্ট নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। তবে ভোট শুরুর সময় তাঁকেও বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রিসাইডিং অফিসার মানস ঘোষ অবশ্য জানান, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম, এজেন্টকে সংশ্লিষ্ট বুথ বা তার পাশের বুথের বাসিন্দা হতে হবে। তা না হওয়ায় কংগ্রেসের এজেন্টকে সরে যেতে হয়। তবে অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের কাঁকসা ব্লক যুব সভাপতি পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কাউকে কোনও হুমকি দেওয়া হয়নি। এজেন্ট বসতে বাধা দেওয়ার কথা উঠছে কেন? সবাই নিজের ভোট নিজে দিয়েছেন।” তাঁর দাবি, বাকি দলগুলির সাংগঠনিক ক্ষমতা নেই। তাই এজেন্ট দিতে পারেনি।

কাঁকসার বুথে লাইন।—নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলকোট, আউশগ্রামেও কোথাও আধা সামরিক বাহিনী দেখা যায়নি। মঙ্গলকোটের ১৪ নম্বর বুথ দেবগ্রামে শান্তিতেই ভোট হয়। গ্রামে সিপিএমের পতাকা দেখা গেলেও বুথে কোনও এজেন্ট ছিল না। গ্রামের বাইরে বর্ধমান-শান্তিনিকেতন রোডে কয়েকজন কেন্দ্রীয় বাহিনী দেখা গেলেও তাঁরা গাড়ির মধ্যেই বসেছিল। গত ৩০ এপ্রিলের নির্বাচনে সকাল ৯টার মধ্যে যে বুথে ৮৫ শতাংশ ভোট পড়েছিল এ দিন সেখানে ওই সময়ে ২৫ শতাংশ ভোট পড়ে। ওই বুথে ভোট পড়েছে ৮০.৭১ শতাংশ। চাকদহ বুথে ভোট পড়েছে ৮৯.৭১ শতাংশ। আউশগ্রামের ২৮ নম্বর বুথে ভোট পড়েছে ৮৩.৩৯ শতাংশ।

তবে জেলার আটটি বুথে কেন পুননির্বাচন হল, তা নিয়ে জেলা নির্বাচন দফতরও বেশ বিভ্রান্তিতে। ওই দফতরের এক কর্তা বলেন, “এর চেয়ে খারাপ পরিস্থিতি জেলার অনেক বুথেই ছিল। সেগুলি কেন বাদ গেল, আর এই আটটিতেই বা কেন নতুন করে ভোট নেওয়া হলো, তা স্পষ্ট নয়।”

বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী অবশ্য এ দিন স্ট্রং রুমের সিল খুলে তার মধ্যে পুনর্নির্বাচনের ইভিএম রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর দাবি, পুরনো স্ট্রং রুমের সিল খুলে আবার ইভিএম রাখার সময় ভোট লুঠ হয়ে যেতে পারে। তবে জেলাশাসকের বক্তব্য, “এ বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সিইওকে জিজ্ঞাসা করুন। আমরা গত ৩০ তারিখে সিল করা ওই স্ট্রংরুমের সিল খুলে চারটি ইভিএম রাখব, এমনই নির্দেশ রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।”

kaksa mangolkot bhatar lok sabha election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy