Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শ্রমিক-মৃত্যুতে সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন, কমিটি গড়ল ডিএসপি

ব্লাস্ট ফার্নেসে বিষাক্ত গ্যাসে দুই শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়ল দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট (ডিএসপি)। কী ভাবে ওই শ্রমিকদের মৃত্যু হল, কেন তাঁরা গ্যাস মুখোশ পরে কাজ করেননি, কেনই বা তা খেয়াল করেননি সংস্থার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা সবই ওই কমিটি খতিয়ে দেখবে। রবিবার সন্ধ্যায় ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্পাত সংস্থার ৩ নম্বর ব্লাস্ট ফার্নেস পরিষ্কার করতে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন দুই ঠিকা শ্রমিক সন্ন্যাসী গোপ (৩০) ও শ্যামাপদ বাউড়ি (৩৪)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:০৫
Share: Save:

ব্লাস্ট ফার্নেসে বিষাক্ত গ্যাসে দুই শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়ল দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট (ডিএসপি)। কী ভাবে ওই শ্রমিকদের মৃত্যু হল, কেন তাঁরা গ্যাস মুখোশ পরে কাজ করেননি, কেনই বা তা খেয়াল করেননি সংস্থার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা সবই ওই কমিটি খতিয়ে দেখবে।

রবিবার সন্ধ্যায় ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্পাত সংস্থার ৩ নম্বর ব্লাস্ট ফার্নেস পরিষ্কার করতে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন দুই ঠিকা শ্রমিক সন্ন্যাসী গোপ (৩০) ও শ্যামাপদ বাউড়ি (৩৪)। রাতে ডিএসপি হাসপাতালে তাঁদের মৃত্যু হয়। সোমবার সকালে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও নিকট আত্মীয়কে চাকরি দেওয়ার দাবিতে কারখানায় বিক্ষোভ দেখায় আইএনটিটিইউসি। কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বিক্ষোভ থামে।

ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লাস্ট ফার্নেস থেকে সব সময়েই সামান্য বিষাক্ত গ্যাস বেরোয়। তাই সেখানে কাজ করার সময়ে গ্যাস মুখোশ পরা নিয়ম। ওই দুই শ্রমিক তা পরেননি। তবে মৃতদের সহকর্মীদের অভিযোগ, আসলে গ্যাস নয়, ধুলো-বালি নিরোধক মুখোশ দেওয়া হয় তাঁদের। গ্যাসের মাত্রা মাপার যন্ত্রও দেওয়া হয় না। সে দিন ফার্নেস লিক করে বেশি গ্যাস বেরিয়েছিল কি না, তা জানতে ঘটনার পরেই সেখানকার বাতাস পরীক্ষা করানো হয়। প্রাথমিক ভাবে তাতে অস্বাভাবিক কিছু মেলেনি জানিয়ে কারখানার জনসংযোগ আধিকারিক বিভুরঞ্জন কানুনগো বলেন, “ঠিক কী কারণে দু’জনের মৃত্যু হল, তা খুঁজে বের করতে কমিটি গড়া হয়েছে।”

এ দিন বিক্ষোভের সময়ে ঠিকা শ্রমিকেরা দাবি করেন, ফার্নেস সাফ করতে যে সময় লাগে, তা পেরিয়ে গেলেও দুই কর্মী কেন ফিরছেন না, আধিকারিকেরা দীর্ঘ ক্ষণ তার খোঁজ করেননি। সময়ে খোঁজ নিলে হয়তো দু’জনকে বাঁচানো যেত। কারখানার সিটু নেতা সৌরভ দত্তের ক্ষোভ, “ব্লাস্ট ফার্নেস পরিষ্কারের সময় তা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছি বারবার। কিন্তু তা শোনা হয়নি।” আইএনটিটিইউসি নেতা হিমাংশু আশ, আইএনটিইউসি নেতা দেবাশিস চৌধুরীদেরও অভিযোগ, “নিরাপত্তা নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি মেলে। কিন্তু কাজের কাজ হয় না।”

ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সুরক্ষার ব্যাপারে কর্মীদের সচেতন করতে কারখানার তরফে সারা বছর নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়। শ্রমিকদের জন্য গ্যাস মুখোশ কেনার টাকা সংশ্লিষ্ট ঠিকা সংস্থাকে দেওয়া হয়। সেই সংস্থা শ্রমিকদের মুখোশ দিয়েছিল কি না, সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। সেই ঠিকা সংস্থার আধিকারিক সমীরকুমার দাশগুপ্ত আবার দাবি করেন, “আমি শুধু শ্রমিক সরবরাহ করি। সুরক্ষার দিকটি কারখানারই দেখা উচিত।” রবিবার রাতেই আবার কাঁকসার একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানায় ব্লাস্ট ফার্নেস থেকে বিষাক্ত গ্যাস লিক করে জনা পনেরো কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের প্রথমে ইএসআই হাসপাতালে, পরে পাঁচ জনকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে এ দিন সন্ধ্যায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে কারখানা সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE