বোরো মরসুমে সারের কালোবাজারি রুখতে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। বুধবার অঙ্গীকার হলে জেলা পরিষদের বৈঠকে কর্মাধ্যক্ষেরা এ নিয়ে অভিযোগ করেন। সিদ্ধান্ত হয়, কোনও ডিলার সার নিয়ে কালোবাজারি করছেন প্রমাণিত হলে তাঁর ডিলারশিপ বাতিল করে দেওয়া হবে।
পরে জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলা জুড়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৪৮ জায়গায় অভিযান করা হয়েছে।” কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সারের কৃত্রিম অভাব তৈরির চেষ্টা করছেন বলেও তাঁর দাবি।
এ দিন কর্মাধ্যক্ষদের বিভিন্ন বিভাগীয় সমস্যা, উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয় ওই বৈঠকে। মঙ্গলকোটের জেলা পরিষদ সদস্য বিকাশ চৌধুরী বলেন, “শুধু মঙ্গলকোট নয় কাটোয়া মহকুমা জুড়ে চলতি বোরো মরসুমে সারের কালোবাজারি চলছে। এক ধরনের ব্যবসায়ি বেআইনি ভাবে সার মজুত করছেন। তার জেরে চাষিরা সার, বিশেষত ইউরিয়া পাচ্ছেন না।” তাঁর দাবি, যেখানে ইউরিয়ার বস্তা পিছু দাম ২৭০-২৭৫ টাকা, সেখানে খোলাবাজারে বস্তার দাম নেওয়া হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৪৮৫ টাকা। ফলে চাষিরা সার না পেয়ে অভিযোগ জানাচ্ছেন। ওই সভায় উপস্থিত কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ উত্তম চক্রবর্তীও বলেন, “বোরো চাষের গোড়ার দিক থেকেই কিছু ব্যবসায়ী বাজারে সারের ঘাটতি দেখাচ্ছেন। এখনও চাষের প্রায় ৬০ ভাগ বাকি রয়েছে। নজরদারি না বাড়ালে চাষিদের বিপদ বাড়বে।”
কালোবাজারি রুখতে আজ, বৃহস্পতিবার জেলার ৩১টি ব্লকের সমস্ত সহ-কৃষি অধিকর্তা বা এডিওদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে পঞ্চায়েতের সাহায্য নিয়ে বেআইনি ভাবে সার মজুত করা রুখতে তাঁদের তত্পর হতে বলা হবে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই অবশ্য প্রশাসন কাটোয়া, মেমারি, মন্তেশ্বর ও খণ্ডঘোষের চারজন সারের ডিলারকে শো-কজ করেছে বলেও জানা গিয়েছে।
এর সঙ্গেই জেলার গ্রামীণ স্তরে থাকা কৃষি সমবায়গুলির মাধ্যমে যাতে অধিকাংশ চাষি সার পান তার উদ্যোগ করা হচ্ছে। এই কাজে সমবায় দফতরের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জনিয়েছেন উত্তমবাবু। তবে যতটা অভাবের কথা বলা হচ্ছে, ততটা সারের অভাব এই মূহুর্তে বাজারে নেই বলে দাবি করেছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু। উত্তমবাবু বলেন, “জানুয়ারির ১৯ তারিখ থেকে বুধবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৮ হাজার ৪৮৭ মেট্রিক টন সার এসেছে। আরও দু’দিনের মধ্যে ২৬০০ মেট্রিক টন সার আসবে। কাজেই আপাতত চাহিদা মেটানোর মতো সার মজুত রয়েছে ।”
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার ১ লক্ষ ২১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। ফলে পরিস্থিতি না বদলালে চাষিরা প্রয়োজনয় সার পাবেন কি না সে প্রশ্ন রয়েই যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy