লোকসভা ভোটে দলের বিপর্যয়ের জন্য সম্প্রতি রাজ্য কমিটির বৈঠকে নতুন নেতৃত্ব তুলে আনার দাবি তুলেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেই বার্তা যাতে কোনও ভাবে দলের এই পরিস্থিতিতে কর্মীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানালেন সিপিএম নেতা মানব মুখোপাধ্যায় ও অমল হালদার। সোমবার আসানসোলে প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপ সরকারের প্রথম মৃত্যুবার্ষীকির স্মরণসভায় এই বার্তা দিলেন তাঁরা।
লোকসভা ভোটে রাজ্য জুড়ে দলের বিপর্যয়ের কারণ খুঁজে বের করতে সিপিএমের শাখা স্তর থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। রাজ্যের অন্য প্রান্তের সঙ্গে এই আলোচনা শুরু হয়েছে আসানসোল শিল্পাঞ্চলেও। বিজেপি-র কাছে হেরে আসানসো কেন্দ্র শুধু হাতছাড়া করা নয়, এ বার এখানে তিন নম্বর স্থান পেয়েছে সিপিএম। সিপিএম সূত্রে খবর, দলের জোনাল স্তর পর্যন্ত আলোচনায় সদস্যেরা এই বিপর্যয়কে মূলত নেতৃত্বের একঘেয়েমিকে দায়ী করেছেন। সদস্যদের বেশির ভাগই মনে করছেন, জামুড়িয়া, পাণ্ডবেশ্বর ও বারাবনির কিছু অংশ বাদ দিলে বেশির ভাগ জায়গাতেই সন্ত্রাসের অভিযোগ সে ভাবে খাটে না। সে কারণে ভোটে বিপর্যয়ের পরে কিছু এলাকায় নেতৃত্বে পরিবর্তনের দাবিও উঠেছে। কিছু কিছু জায়গায় শাখা ও লোকাল কমিটির সভায় নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে সদস্যদের একাংশ আলোচনাতেও যোগ দেননি।
শাখা থেকে জোনাল স্তর পর্যন্ত সদস্যদের এই আলোচনার নির্যাস আগামি শনিবার বর্ধমান জেলা কমিটির সভাতেও আলোচনা হওয়ার কথা। নেতৃত্বের আশঙ্কা, বহু সদস্যের এই দাবির প্রেক্ষিতে দলের সঙ্কট আরও বাড়বে। তাই প্রয়াত বিধায়কের প্রথম মৃত্যুবার্ষীকির স্মরণসভায় সদস্যদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান নেতারা। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য মানববাবু গত তিন বছরে কী ভাবে দলীয় কর্মী-সদস্যদের উপরে সন্ত্রাস হয়েছে, তা বর্ণনা করে ঐক্যবদ্ধ ভাবে মোকাবিলার আবেদন করেন। তিনি বলেন, “দু’দিন আগেই ভোটে আমাদের বিপর্যয় হয়েছে। কেন এই বিপর্যয়, আমাদের মধ্যে সেই পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেই আমরা তা বোঝার চেষ্টা করছি। আমাদের মধ্যে বিরোধ থাকবে, তর্ক-বিতর্ক হবে। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করে আমাদের এগোতে হবে।” দলের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “ভোট পরবর্তী সময়ে কর্মীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন আছে। নানা বিভ্রান্তি। কী হবে ভবিষ্যৎ। এই সবই আলোচনায় আনতে হবে।”
গত বছর ৯ জুন বার্নপুরে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে গুলিতে খুন হন বারাবনির প্রাক্তন বিধায়ক তথা শ্রমিক নেতা দিলীপ সরকার। ঘটনার তদন্ত করছে সিআইডি। যদিও এক বছর পেরিয়ে গেলেও আততায়ীরা ধরা পড়েনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy