Advertisement
০৪ জুন ২০২৪

হোমে ছাত্রকে মারধর কালনায়

হোমের এক ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠল এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে, কালনা ২ ব্লকের পূর্ব সাতগাছিয়ার একটি সরকারি হোমে। রঞ্জিত মাল নামে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রকে শুক্রবার বিকেলে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটির নিন্দা করেছে হোম কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

মারের চিহ্ন। নিজস্ব চিত্র।

মারের চিহ্ন। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০৩:২০
Share: Save:

হোমের এক ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠল এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে, কালনা ২ ব্লকের পূর্ব সাতগাছিয়ার একটি সরকারি হোমে। রঞ্জিত মাল নামে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রকে শুক্রবার বিকেলে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটির নিন্দা করেছে হোম কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ বলেন, “এই ঘটনাটি নিয়ে কালনা ২ ব্লকের বিডিওকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু বছর ধরে সরকারি হোমটি এই এলাকায় রয়েছে। সাধারণত এলাকার গরীব পরিবারের ছেলেরা এই আবাসিক হোমটিতে থেকে স্থানীয় পূর্ব সাতগাছিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তাদের দেখভাল করেন হোমের শিক্ষক-সহ অন্যান্য কর্মীরা। হোমের আবাসিক ছাত্রদের অভিযোগ, পূর্ব সাতগাছিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেনির ছাত্র রঞ্জিত মঙ্গলবার বেশি রাত অবধি পড়াশোনা করার কারণে বুধবার সকালে হোমের কোচিং ক্লাসে যেতে পারেনি। সে দিনের ওই ক্লাসে হোমের এক শিক্ষক ছাত্রদের জীবনবিজ্ঞানের পরীক্ষা নেন। রঞ্জিতকে ক্লাসে দেখতে না পেয়ে তিনি ক্লাস শেষে ছুটির পরে বেত নিয়ে এসে তাকে বেধরক মারধর করেন। মার খাওয়ার পরে টানা দু’দিন নিজের ঘরেই অসুস্থ হয়ে কাটায় রঞ্জিত। শুক্রবার ওই ছাত্রের কয়েক জন সহপাঠী কাছের পূর্ব সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতে গিয়ে ঘটনাটি লিখিত আকারে জানিয়ে রঞ্জিতের চিকিৎসার আবেদন করেন।

অভিযোগ পাওয়ার পরেই ওই পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণা প্রামাণিক কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে ওই হোম পরিদর্শনে যান। কৃষ্ণদেবী বলেন, “ভিতরে গিয়ে দেখি ছেলেটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। তার পিঠ দিয়ে রক্ত ও রস গড়াচ্ছে। অথচ এরপরেও বরফ দেওয়া ছাড়া হোম কর্তৃপক্ষ কোনও চিকিৎসার ব্যবস্থাই করেনি। আমরা ওই ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।” পঞ্চায়েত প্রধানের ক্ষোভ, “এক জন শিক্ষক যে এ ভাবে কোনও ছাত্রকে মারধর করতে পারে সেটা ভাবাই যায় না। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো হবে।”

শুক্রবার হাসপাতালে শুয়ে রঞ্জিত জানায়, বুধবার সাড়ে আটটা নাগাদ তাঁর হোমের কোচিং ক্লাসে পড়তে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত পড়াশোনা করার কারণে ওই দিন সকালে উঠতে সাড়ে ন’টা বেজে যায়। তাঁর দাবি, “স্যারকে এ কথা জানালেও উনি শুনতে চাননি।” হোমের আর এক ছাত্র চন্দন মুর্মুও জানান, মঙ্গলবার রাতে রঞ্জিত বেশি রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিল।

ঘটনার নিন্দা করে হোমের সুপার নীনা মুখোপাধ্যায় বলেন, “মায়ের অসুস্থতার কারণে আমি দিন তিনেকের ছুটি নিয়েছি। তবে ঘটনা শোনার পরই ছাত্রটিকে দেখতে যাই। হোম কর্তৃপক্ষ এই কাজের তীব্র নিন্দা করছে।” তিনি জানান, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

student ragging home
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE