Advertisement
০৩ অক্টোবর ২০২৪
Barrackpore

ব্যারাকপুরে বন্দুকরাজ! বোমা-গুলি-খুন-ডাকাতির এক বছরের খতিয়ান নিল আনন্দবাজার অনলাইন

ব্যারাকপুর স্টেশনের কাছেই একটি সোনার দোকানে গত বুধবার সন্ধ্যায় ক্রেতা সেজে হানা দিয়েছিল ডাকাতরা। তাদের বাধা দিতে গিয়ে খুন হন দোকান মালিক নীলরতন সিংহের পুত্র।

Barrackpore Murder: People of the area are in fear after this incident

ব্যারাকপুর হত্যাকাণ্ডে আতঙ্কের পরিস্থিতি এলাকায়। প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২৩ ১৮:৩৫
Share: Save:

ব্যারাকপুর স্টেশনের কাছেই একটি সোনার দোকানে গত বুধবার সন্ধ্যায় ক্রেতা সেজে হানা দিয়েছিল ডাকাতরা। তাদের বাধা দিতে গিয়ে খুন হন দোকান মালিক নীলরতন সিংহের পুত্র। হাড় হিম করা সেই ঘটনার পর এখনও থমথমে আনন্দপুরী এলাকা। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের গত এক বছরের অপরাধের খতিয়ানও স্থানীয়দের ‘স্বস্তি’ দিচ্ছে না। গত ২৪ মে-র এই ঘটনা তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করেছে।

সত্যিই কি বাড়ছে ব্যারাকপুরে অপরাধের সংখ্যা? সত্যিই কি অশান্ত হয়ে উঠছে ওই শিল্পাঞ্চল? কী বলছে গত এক বছরের অপরাধের পরিসংখ্যান?

Barrackpore Murder: People of the area are in fear after this incident

গত এক বছরে ব্যারাকপুর এলাকায় অপরাথের খতিয়ান। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রকাশ্যে খুন, বোমাবাজির মতো নানা অপরাধ জোরালো প্রভাব ফেলছে জনজীবনে। এই সূত্র ধরেই রাজ্যের শাসকদলকে বিঁধছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, তার জেরে মৃত্যু, বোমাবাজি, গুলি, খুন এই সব নিয়ে তৈরি হচ্ছে ভয়ের পরিবেশ। ব্যারাকপুর যেন সেই ছবিরই খণ্ডাংশ। ব্যারাকপুরের বিজেপি নেত্রী ফাল্গুনী পাত্র যেমন অভিযোগ করলেন, ‘‘ব্যারাকপুরের মানুষজন গুলি বোমা, পিস্তল এবং অস্ত্রের উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কোথাও কোন নিরাপত্তা নেই।’’

বিজেপির সুর বিরোধী সিপিএমের গলাতেও। ব্যারাকপুরের সিপিএম নেত্রী গার্গী চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ব্যারাকপুর এখন অপরাধীদের মুক্তাঞ্চল। বিরোধীদের মিটিং-মিছিলে কড়াকড়ি থাকলেও অপরাধে লাগাম পরাতে পারছে না প্রশাসন। পুলিশ আধিকারিকরা বদলি হলেও দুষ্কৃতীর দৌরাত্ম্য কমেনি।’’

Barrackpore Murder: People of the area are in fear after this incident

এই সেই গয়নার দোকান যেখানে হানা দিয়েছিল ডাকাতরা। — নিজস্ব চিত্র।

বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তরে ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাসের সাফাই, ‘‘আগের তুলনায় ব্যারাকপুর অনেক শান্ত। গঙ্গা পেরিয়ে নদীর ও পার থেকে অনেক দুষ্কৃতী এ পারে এসে আশ্রয় নেয়। সেই কারণে অনেক সময় কিছু অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে। কিন্তু পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয়।’’ তাঁর দাবি, শান্তিপূর্ণ ভাবে ব্যবসা করছেন ব্যবসায়ীরাও। তবে উত্তমের উল্টো সুর শোনা গেল ব্যারাকপুরের ব্যবসায়ী গোবিন্দ পালের মুখে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যে ভাবে একের পর এক ঘটনা ঘটছে তাতে আমরা ব্যবসায়ীরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’’

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল এলাকায় দুষ্কৃতীদের দাপটের ইতিহাস যে দীর্ঘ, উপরের পরিসংখ্যানেই তা স্পষ্ট। যদিও ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশারেটের কমিশনার অলোক রাজোরিয়ার বক্তব্য, ‘‘তুলনামূলক ভাবে গত এক বছরে অপরাধ কমেছে। যতগুলি ঘটনা ঘটেছে সব ক্ষেত্রেই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। যাতে স্থানীয় বাসিন্দারা আগামী দিনে শান্তিপূর্ণ ভাবে থাকতে পারেন সে জন্য পুলিশি যথেষ্ট উদ্যোগী।’’

সিপির এই আশ্বাস বরাভয় জোগাতে পারছে না সাধারণ মানুষকে। আনন্দপুরী এলাকার ব্যবসায়ী রুপম সেন যেমন বলছেন, ‘‘দীর্ঘ চার দশক ধরে ব্যবসা করছি এখানে। কিন্তু ইদানীং যেন বোমা-গুলির ঘটনা অত্যধিক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Barrackpore Murder Industrial belt Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE