মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ফেস্টুনে সেজেছে শহর। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নাকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! কার সভা রয়েছে মেদিনীপুরে? হঠাৎ করে কেউ মেদিনীপুরে পৌঁছলে তৈরি হতে পারে ধোঁয়াশা।
মেদিনীপুর এখন তৃণমূলনেত্রীর কাটআউট, পোস্টার, হোর্ডিংয়ে ছয়লাপ। শীর্ষনেতৃত্বের নির্দেশ মেনে শহরকে ‘মমতাময়’ করে তুলতে চেষ্টার কসুর করছেন না নেতারা।
সোমবারই মেদিনীপুরে এসে এক সভা করে গিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। ২১ জুলাইয়ের সেই প্রস্তুতি সভায় সুব্রতবাবুকে বলতে শোনা যায়, প্রধানমন্ত্রী মেদিনীপুরে আসছেন। জেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এমন ভাবে উপস্থাপিত করুন যাতে বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে ওই রাজনৈতিক দল (বিজেপি) উপলব্ধি করে, বাংলায় তার বৃথা চেষ্টা।” নির্দেশ পালনে এখন দম ফেলার ফুরসত নেই জেলা নেতাদের। দফায় দফায় হচ্ছে বৈঠক। মঙ্গলবারও মেদিনীপুরে ফের তৃণমূলের এক বৈঠক হয়েছে। দলের এক সূত্রে খবর, বৈঠকে ডাকা হয়েছিল মেদিনীপুর এবং খড়্গপুর শহরের নেতৃত্বকে। মঙ্গলবারের সভায় দুই শহরের নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে, আর দেরি করা যাবে না। দ্রুত শহর এবং আশেপাশের এলাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাটআউট, ছবিতে সাজিয়ে দিতে হবে। দুই শহরের নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকের কথা মানছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। বিজেপির সঙ্গে টক্কর দিতেই কি পাল্টা প্রচার? অজিতবাবু অবশ্য তা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “২১ জুলাইয়ের সমাবেশের সমর্থনে জেলা জুড়েই প্রচার চলছে। এই দুই শহরেও প্রচার হচ্ছে। বৈঠকে সবদিক দেখে নেওয়া হয়েছে। এটা প্রস্তুতি বৈঠক।” প্রধানমন্ত্রীর সভার আগে ফের মেদিনীপুরে তৃণমূলের এক বৈঠক হতে পারে। তৃণমূলের এক জেলা নেতা মানছেন, “একটা বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি দেখতেই এই বৈঠক হবে।” দেখা হতে পারে জেলা কতটা ‘মমতাময়’ হল তা-ও! আগামী সোমবার মেদিনীপুরে কৃষক সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর। তাই তৃণমূলের নজর বেশি এখানেই। দলের এক নেতার কথায়, “কয়েকদিন পরে যেদিকেই তাকানো হবে, শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দেখা যাবে!”
কয়েকদিন আগে পুরুলিয়া এবং বীরভূম সফরে এসেছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তাঁর সফরের সময়েও দেখা গিয়েছিল অমিতের যাত্রাপথে ছড়িয়ে রয়েছে তৃণমূলনেত্রীর ছবি। সঙ্গে হিন্দিতে লেখা স্লোগান। তৃণমূল সূত্রের খবর, হিন্দিতে লেখা স্লোগান দেখা যাবে মেদিনীপুরেও। তবে একেবারে শেষপর্যায়ে।
বিজেপি অবশ্য জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর সভা ঘিরে মেদিনীপুর সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে দলেরও। শহরের সব পথই দলের ফ্লেক্সে, নরেন্দ্র মোদীর ছবিতে মুড়ে দেওয়া হবে। থাকবে প্রধানমন্ত্রীর কাটআউটও। তবে এত আগেভাগে নয়। সবই হবে শেষের দিকে। বুধবার থেকেই অবশ্য মোদীর সভাস্থলের মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হয়েছে। কাজ পরিদর্শনে এ দিন কলেজ-কলেজিয়েট স্কুল মাঠে আসেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। তৃণমূল তো দলের পতাকা- ফেস্টুনে মেদিনীপুরকে মুড়ে দেওয়া শুরু করেছে? রাজু বলেন, “আসলে তৃণমূল মোদীজি, অমিত শাহকে ভয় পাচ্ছে। ” তাঁর কটাক্ষ, “আমাদের মনে হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদীজিকে আগাম অভিনন্দন জানাচ্ছেন। আগাম স্বাগতম জানাচ্ছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy