মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেদের মহাযজ্ঞের কর্মসূচির কথা জানিয়েছে ‘অলখ অখিল রাষ্ট্রীয় সনাতন সংসদ’। —নিজস্ব চিত্র।
২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনকে ঘিরে সাজ সাজ রব। লোকসভা ভোটের আগে এই মন্দির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করেই বিজেপি দেশে জোর হিন্দুত্বের হাওয়া তুলতে চাইছে বলেই আলোচনা শুরু হয়েছে, জাতীয় রাজনীতির কারবারিদের মধ্যে। তার আগেই বাংলায় এক ‘মহাযজ্ঞ’-এর আয়োজন করা হচ্ছে। আগামী শুক্রবার ১২-১৩ জানুয়ারি হুগলি জেলার তারকেশ্বরে লোকনাথ মন্দিরের মাঠে হবে এই মহাযজ্ঞ। জানা গিয়েছে, সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েছেন তিন শঙ্করাচার্য।
মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেদের এই কর্মসূচির কথা জানিয়েছে ‘অলখ অখিল রাষ্ট্রীয় সনাতন সংসদ’। সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, ৫২৭ দিন ধরে এই কর্মসূচির প্রস্তুতি নিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের লক্ষ্য ছিল, ৫১টি শক্তিপীঠ, ১২টি জ্যোর্তিলিঙ্গ ও ১৮টি মহাশক্তিপীঠের মাটি ও জল তারকেশ্বরে এনে এই যজ্ঞস্থল তৈরি করা। তিব্বতের মা দাক্ষায়ণী, শ্রীলঙ্কার জাফনার নয়নতিভুতে মা শঙ্করী বা লঙ্কিনী এবং পাকিস্তানে অবস্থিত হিংলাজ মন্দিরের মাটি ও জল আনতে পারেননি তাঁরা। বাকি প্রায় সব জায়গা থেকেই মাটি ও জল এনে মহাযজ্ঞের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন সংগঠনের কর্মকর্তারা। শুক্রবার তারকেশ্বর মন্দিরে মহাদেবের রুদ্রাভিষেক দিয়ে শুরু হবে ‘মহাযজ্ঞ’-র অনুষ্ঠান। এই উপলক্ষেই এখানে তৈরি হয়েছে ৫১টি হোমকুণ্ড।
সংগঠনের তরফে এক হাজার আট মহামণ্ডলেশ্বর স্বামী সুন্দরগিরি মহারাজ বলেছেন, ‘‘আমরা শঙ্করাচার্যদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। ইতিমধ্যে কাশীর শংকরাচার্য স্বামী নরেন্দ্রানন্দ স্বরস্বতী, প্রয়াগরাজের পীঠাধিশ্বর স্বামী বাসুদেবানন্দ সরস্বতী এবং জ্যোতিষ পীঠাধিশ্বর স্বামী অবিমুক্তাশ্বরানন্দ মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে আসবেন বলে সম্মতি দিয়েছেন।’’ মহাযজ্ঞের আগের দিনই তারকেশ্বরে এসে পৌঁছাবেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজ, ইসকনের সম্পাদক জগদ্ধাত্রীয় প্রভু এবং রিষড়া প্রেম মন্দিরের স্বামী নির্গুণানন্দ।
সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত তারকেশ্বর মন্দিরে সেবাইত প্রদ্যোৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এটা অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয় যে, এমন একটি মহাযজ্ঞের সাক্ষী থাকার সুযোগ হচ্ছে। অনেক অনেক বছর আগে যখন বনজঙ্গলে ঘেরা থাকত দেশ, তখন ইচ্ছা থাকলেও কাশী গিয়ে কাশী বিশ্বনাথের দর্শন অনেকেই করতে পারতেন না। তাঁরা তারকেশ্বরে এসে বাবা ভোলানাথের দর্শন করতেন এবং তারকেশ্বরকে ‘বাংলার কাশী’ বলা হত। আমরা চাই, এই মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠান ঘিরে আবারও সেই মহাত্ম্য ফিরে আসুক তারকেশ্বর মন্দিরে।’’
দু’দিন ব্যাপী এই মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি রামমন্দিরের উদ্বোধনের কোনও যোগাযোগ নেই বলেই দাবি করেছেন সংগঠকরা। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, আগে তাঁরা ২২-২৩ জানুয়ারি এই মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠান করবেন বলে স্থির করেছিলেন। কিন্তু, ২২ তারিখ রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিন হিসেবে ঘোষিত হওয়ায় নিজেদের মহাযজ্ঞের দিন এগিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy