সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে রাজ্যে জঙ্গলের অবস্থা চলছে বলে মন্তব্য করলেন লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, গণতন্ত্রের ছিঁটেফোটাও কোথাও দেখা যাচ্ছে না! পাল্টা কটাক্ষ করে তৃণমূল বলল, সোমনাথবাবুর পুরনো দল সিপিএমেই গণতন্ত্র নেই! আর বামফ্রন্ট জানাল, ভোটের আগেই যা কাণ্ড ঘটছে, তার প্রেক্ষিতে এ বার তাদের ‘অন্য রকম’ কর্মসূচির পথে যেতে হবে। লাগাতার ধর্না-অবস্থানে বসার মতো কর্মসূচি নিয়েই আলোচনা চলছে বাম শিবিরে।
সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলে সোমনাথবাবু বুধবার বলেছেন, ‘‘ক্ষমতার অপপ্রয়োগ হচ্ছে। গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। মনে হচ্ছে, জঙ্গলের অবস্থা! রাজ্যের মানুষ উৎসবের মেজাজে ভোট দেন। কিন্তু এটা কি রক্তের উৎসব হচ্ছে?’’ পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকারও কড়া সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন স্পিকার। বলেছেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন অসহায়ের মতো বসে আছে!
এই পরিস্থিতিতে বামফ্রন্টের বৈঠকে এ দিন আলোচনা হয়েছে, গণতান্ত্রিক পরিবেশ যে রাজ্যে নেই, মানুষের সামনে তা তুলে ধরতেই ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে যেতে হবে। বাম শিবিরের অন্দরের হিসেব, সন্ত্রাসের মোকাবিলা করে গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় ২৮%, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৫৫% এবং জেলা পরিষদে ৮৫% প্রার্থী দিতে পেরেছে বামেরা। তিন স্তরে এমন তিন রকম হাল বেনজির। তার উপরে গোটাপাঁচেক জেলা ছাড়া ভোটের পরিস্থিতিও নেই। ভোট বয়কট করে প্রতিবাদ জানানো যায় কি না, তা নিয়েও চর্চা হয়েছে ফ্রন্ট বৈঠকে। তবে তা করলে বিজেপিকে ময়দান ছেড়়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠবে বলে মনে করছে আলিমুদ্দিন। বৈঠকের পরে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘‘নজিরবিহীন পরিস্থিতি। এই অবস্থায় অন্য রকম কিছু কর্মসূচি নিতে হবে আমাদের।’’ আজ, বৃহস্পতিবার ১৭ বাম দলের বৈঠকে কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে। কলকাতা জেলা ফ্রন্টের মিছিলে যোগ দিয়ে এ দিনই মহম্মদ সেলিম অভিযোগ করেছেন, ‘‘গণতন্ত্রের সমাধি তৈরি করছেন মুখ্যমন্ত্রী!’’
আবার সোমনাথবাবুও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, আপনার তো জনসমর্থন রয়েছে, বুঝতে পারছি। তা হলে এত গণ্ডগোলের দরকার কী? এতে তো মানুষ মনে করছে, ভোট হলে কি ফল অন্য রকম হত?’’ পশ্চিমবঙ্গের ‘বিশেষ পরিস্থিতি’র জন্যই নির্বাচনে আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে এবং ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের দাবি নিয়েও চর্চা হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রবীণ এই আইনজীবী-নেতা। তাঁর যুক্তি, ‘‘সাধারণ ভাবে নির্বাচনে আদালতের হস্তক্ষেপ সমর্থন করি না। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার প্রশ্নে আদালত পাশে দাঁড়াতেই পারে।’’
প্রবীণ বাম নেতার এই বক্তব্য শুনে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘বয়স হলে অনেকে এ ধরনের কথা বলেন! যে দলটা উনি নিজে করতেন, সেই দলেই গণতন্ত্র নেই বলে সোমনাথবাবু মন্তব্য করেছিলেন। নিজের দলকেই যিনি বুঝতে পারেন না, তিনি রাজ্যের গণতন্ত্র নিয়ে বলেন কী করে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy