Advertisement
E-Paper

ভাঙড় ভোটে ‘বাদশা’ বনাম ‘তাজা নেতা’

কলেজে পড়তে পড়তেই জমি আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন শরিফুল মল্লিক।কতই বা বয়স।মাত্র ২২ বছর।গণআন্দোলনে তার নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা দেখে অভিভূত গ্রামবাসীরা।

সোমনাথ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ২০:৪৭
ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীর পদে লড়ছেন আরাবুল ইসলাম (বাঁ দিকে)। তার বিরুদ্ধে লড়ছে শরিফুল মল্লিক (ডান দিকে)।

ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীর পদে লড়ছেন আরাবুল ইসলাম (বাঁ দিকে)। তার বিরুদ্ধে লড়ছে শরিফুল মল্লিক (ডান দিকে)।

একজন ‘তাজা নেতা’। অন্যজন ভাঙড়ের ‘বেতাজ বাদশা’।একজনের চোখে পালাবদলের স্বপ্ন।অন্যজনের কাছে মুখরক্ষার লড়াই।

কলেজে পড়তে পড়তেই জমি আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন শরিফুল মল্লিক।কতই বা বয়স।মাত্র ২২ বছর।গণআন্দোলনে তার নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা দেখে অভিভূত গ্রামবাসীরা।এই ‘তাজা নেতা’ই এখন জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির অন্যতম মুখ।

আর অন্যদিকে রয়েছেন আরাবুল ইসলাম। ভাঙড় থেকে সিপিএমকে উপড়ে ফেলার কারিগড়।তৃণমূলের মুখ(যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে আরাবুলের থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন নেতৃত্বরা)। মাঠে-ময়দানের রাজনীতির লোক। বিধায়কও ছিলেন। ভোট করাতে এতটাই পটু, যে কলকাতার ভোটেও ‘ডাক’ পড়ে আরাবুল বাহিনীর।

ভাঙড়ে ভোটের নজর এখন এই দু’জনের ওপরেই। ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীর পদে লড়ছেন আরাবুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে লড়ছে শরিফুল মল্লিক। ভোটের ফলাফলে পরিষ্কার হয়ে যাবে মানুষ কাকে চায়!

ফতেমা বিবি

হাফিজুল মোল্লা খুনের পর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শ্রীঘরে আরাবুল। কিন্তু তার অনুগামীরা ভোট করাতে নাকি এখনও সক্রিয়। যদিও বিষয়টি গুরুত্ব দিতে চাইছে না জমি রক্ষা কমিটি। তাদের দাবি, ৯ আসনে ধুয়ে সাফ হয়ে যাবে আরাবুলের সাম্রাজ্য। ভোটের ঠিক আগে অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী প্রার্থীরা। শরিফুল এক মাত্র পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী। বাকি ৮ জন গ্রাম পঞ্চায়েতে দাঁড়িয়েছেন। এই ৯ আসনই এখন আরাবুলের কাছে মুখরক্ষার লড়াই।

আরও পড়ুন:

দিনভর বৈঠক, ভাঙড় থানায় বসেই ঘুঁটি সাজাচ্ছেন আরাবুল ইসলাম

পঞ্চায়েতের অবশিষ্ট প্রতিযোগিতায় কোন দল কোথায় দাঁড়িয়ে

ভাঙড়-২ ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৫৯ আসনে বিরোধীরা কেউ মনোনয়ন জমা দিতেই পারেননি। জমি কমিটির প্রার্থীরা আদালতেও যান। হোয়াটস অ্যাপে মনোনয়ন পাঠিয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়ে সেই প্রক্রিয়াকে বৈধতা দেয় আদালত। তার পর থেকেই আরাবুল এই ৯ আসন নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছিলেন।

সরিফুলের বক্তব্য, “মানুষ আমাদের পাশে রয়েছে। আরাবুলের অত্যাচারে গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত। অনেক আটকানোর চেষ্টা হয়েছে। আমরা লড়াইয়ে আছি। জয় আমাদেরই হবে।”

ফতেমা বিবি দাঁড়িয়েছেন ভাঙড়ের দক্ষিণ গাজিপুরে। আরাবুল বাহিনী তাঁর দুই ছেলেকে অপহরণ করেছে। পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়, ভোটের ময়দান থেকে সরে দাঁড়াতে। না হলে দুই ছেলেকেই খুন করা হবে। তাও ভয় পাননি ফতেমা। সরে দাঁড়ানো তো দূরের কথা, ফতেমা বলেন, ‘‘ক্ষমতা থাকলে লড়ে দেখান। ভোটের ময়দান থেকে সরব না।’’ তিনি জয় নিয়ে আশাবাদী।

আর এক লড়াকু যুবক এন্তাজুল খান। জমি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে দাদা মফিজুল খান খুন হয়েছেন। এন্তাজুল গাজিপুর উত্তরের প্রার্থী। ভোটে জিতেই আরাবুলের শেষ দেখতে চান। এ ছাড়াও লড়াইয়ে রয়েছেন খামারআইট থেকে আজিজুল মোল্লা, মাছিভাঙা থেকে ইসরাফিল মোল্লা, টোনা মুনসীপাড়ায় সালোয়ারা বিবি, উত্তর গাজিপুরের পূর্ব পাড়ায় জাহানারা বিবি, উড়িয়াপাড়া দক্ষিণে সুলতান মোল্লা। জমি রক্ষা কমিটির প্রার্থীরা লড়াইয়ে থাকলেও, রীতিমতো সন্ত্রাসের পরিবেশ রয়েছে এলাকাতে। আরাবুলের ছেলে হাকিবুল উত্তর গাজিপুর আসন থেকে জিতে পোলের হাট-২ অঞ্চলের পঞ্চায়েত প্রধান। তা সত্ত্বেও মাছিভাঙা, মাঝের পাড়া, উত্তর গাজিপুর ও দক্ষিণ গাজিপুরের আরাবুল অনুগামী তৃণমূল প্রার্থীরা জয় পাবেন কিনা তা সময়ই বলবে।

West Bengal Panchayat Elections 2018 Bhangar Arabul Islam Shariful Mallik Panchayat Poll Violence শরিফুল মল্লিক আরাবুল ইসলাম
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy