Advertisement
E-Paper

দিনভর বৈঠক, ভাঙড় থানায় বসেই ঘুঁটি সাজাচ্ছেন আরাবুল ইসলাম

বারুইপুর জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়,“শুক্রবার বাড়ির পিছনের মাঠ থেকে পাকড়াও হওয়ার পরে মেজাজ একটুও ভাল ছিল না তাঁর। বারুইপুর থানাতে নিয়ে যাওয়ার পর কারুর সঙ্গেই বিশেষ কথাবার্তা বলেননি। রাতে বিরিয়ানি, রুটি মাংসের আয়োজন থাকলেও মুখে তোলেননি কিছুই। খালি বাড়ির অভ্যেস মত প্যান্ট-শার্ট ছেড়ে লুঙ্গি পরে নেন। গায়ে জড়িয়ে নেন গামছা।”

সিজার মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ১৯:৪৯

রাত পোহালেই ভোট। অথচ জীবনে প্রথমবার নির্বাচনী ময়দান থেকে দূরে থানার চার দেওয়ালের মধ্যে কাটাতে হচ্ছে পোড় খাওয়া “ভোট ম্যানেজার” আরাবুল ইসলামকে। কিন্তু তাতে আদৌ দমে যাওয়ার পাত্র তিনি নন। ভাঙড় থানাকেই ‘ক্যাম্প অফিস’ বানিয়ে সোমবারের লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আরাবুল।

বারুইপুর জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়,“শুক্রবার বাড়ির পিছনের মাঠ থেকে পাকড়াও হওয়ার পরে মেজাজ একটুও ভাল ছিল না তাঁর। বারুইপুর থানাতে নিয়ে যাওয়ার পর কারুর সঙ্গেই বিশেষ কথাবার্তা বলেননি। রাতে বিরিয়ানি, রুটি মাংসের আয়োজন থাকলেও মুখে তোলেননি কিছুই। খালি বাড়ির অভ্যেস মত প্যান্ট-শার্ট ছেড়ে লুঙ্গি পরে নেন। গায়ে জড়িয়ে নেন গামছা।”

পুলিশ সূত্রে খবর, গরমে রাতে ভাল ঘুমও হয়নি তাঁর। সকালে উঠেই খোঁজ করেন চায়ের। ততক্ষনে অবশ্য বেশ খোশ মেজাজে তিনি। শনিবার বেশি রাতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ভাঙড় থানায়। সেখানে পৌঁছতেই নাকি তাঁর চোখে-মুখে আরও স্বস্তি ফুটে ওঠে। পুলিশ সূত্রের খবর, নিজেই রাতে বলেন যে গরমে হালকা কিছু খাবেন। সেই মত কম তেল মশলায় রান্না মাছের ঝোল-ভাত দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন, পঞ্চায়েতের অবশিষ্ট প্রতিযোগিতায় কোন দল কোথায় দাঁড়িয়ে

তবে রবিবার সকাল থেকে আরাবুলের কার্যকলাপ অনেকটাই বদলে গিয়েছে বলে দাবি এক পুলিশ আধিকারিকের। সূত্রের খবর, ততক্ষনে আরাবুলের কাছে খবর পৌঁছে গিয়েছে যে, তাঁর অনুপস্থিতিতে ভাঙড়ের কোনও তৃণমূল নেতাই ভাঙড়-২ এলাকার নির্বাচনের দায়িত্ব নিতে রাজি নন। তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলার অধিকাংশ নেতাই এই পরিস্থিতিতে জমি বাঁচাও কমিটির সঙ্গে পোলেরহাট-২ পঞ্চায়েতের ওই আটটি আসনে ‘যুদ্ধ’ করতে নারাজ। আরাবুলের ‘ভুল’-এর দায় ঘাড়ে নিতে রাজি নন কেউ।

দলের কাউকে যে খুব একটা পাশে পাবেন না, তা বুঝতে পেরেই নিজের ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেন আরাবুল। রবিবার সকাল থেকেই আরাবুলের সঙ্গে দেখা করতে থানায় যান এলাকার তাঁর অনুগামী হিসেবে পরিচিতরা। সাতসকালেই থানায় পৌঁছন আরাবুল ঘনিষ্ঠ ভোগালি-২ অঞ্চলের নেতা মোদাস্সর আলি। “দলের নেতা। তাই দেখা করতে গিয়েছিলাম,’’ স্বীকার করেন মোদাস্সর। এর পর একে একে আরাবুল ঘনিষ্ঠ এক ঝাঁক নেতা পৌঁছে যান থানায়। সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে ভোলেননি কাইজার আহমেদও। তবে অতি সন্তর্পনে সাক্ষাৎ এড়িয়ে গিয়েছেন ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ এবং ভাঙড়-২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি আব্দুর রহিম।

আরও পড়ুন, ইটভাঁটা, আবাসন প্রকল্প থেকে পাওয়ারগ্রিড, ‘জমি হাঙর’ খুদের সন্ত্রাসে ফুঁসছে ভাঙড়

গ্রেফতার হলেও যে আরাবুল সহজে জমি ছাড়বেন না তা হাড়ে হাড়ে জানেন জমি বাঁচাও কমিটির নেতারাও। তাই তাঁরাও সতর্ক। রবিবার সকালেই তাজউদ্দিন এবং মোকারেম নামে দু’ই আরাবুল ঘনিষ্ঠকে দক্ষিণ গাজিপুর খেকে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় কমিটির নেতারা। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈকত ঘোষ বলেন, “আমরা দেখছি ওদের সঙ্গে হাফিজুল হত্যার কোনও যোগ আছে কি না। আপাতত ওদের আটক করে জেরা করা হচ্ছে।” সতর্ক পুলিশও। কারণ তাঁরাও জানেন সোমবার বিনা যুদ্ধে কোনও পক্ষই এক ইঞ্চিও মাটি ছাড়বে না।

Panchayat Election 2018 Arabul islam Bhangar আরাবুল ইসলাম TMC Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy