Advertisement
E-Paper

এক হাঁটু কাদাজলে লুকিয়েও রেহাই মিলল না আরাবুল ইসলামের

জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, আরাবুল প্রথমে নড়তে চাইছিলেন না। অন্তত ৪৫ মিনিট ওই ভাবেই বসেছিলেন।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ০৩:৩৬
জালে: ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বারুইপুর হাসপাতালের পথে আরাবুল ইসলাম। শনিবার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

জালে: ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বারুইপুর হাসপাতালের পথে আরাবুল ইসলাম। শনিবার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

ঘন অন্ধকারে জলায় এক হাঁটু কাদার মধ্যে তিনি বসেছিলেন!

গোটা রাজ্য তখন সরগরম। দুপুরে ভাঙড়ে ভোটের মিছিলে গুলিতে খুন হয়েছেন হাফিজুল মোল্লা। অভিযোগের তির আরাবুল ইসলামের দিকে। সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি কোথায়?

শুক্রবার রাতে রাজ্য পুলিশের পদস্থ কর্তারা যখন হাজির কাশীপুর থানায়, ভাঙড়ের উত্তর গাজিপুরে আরাবুলের বাড়ি ঘিরে চলছে তল্লাশি— তখন ওই তৃণমূল নেতা ঘাপটি মেরেছেন বাড়ির কিছুটা দূরে, মাঠ লাগোয়া জলায়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। কাদামাখা আরাবুলের জামার কলারে এসে পড়ে পুলিশের হাত।

স্বামীহারা: ভাঙড়ে নিহত হাফিজুলের স্ত্রী সাবিরা বিবি। শনিবার। ছবি: সুমন বল্লভ।

জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, আরাবুল প্রথমে নড়তে চাইছিলেন না। অন্তত ৪৫ মিনিট ওই ভাবেই বসেছিলেন। এক অফিসার তাঁকে বলেন, ‘‘আপনার মাথার উপরে অনেক নেতা আছেন জানি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতার করতে বলেছেন। তাঁর উপরে তো কেউ নেই।’’ এর পর আরাবুল উঠে দাঁড়ান। কাদামাখা অবস্থায় তাঁকে গাড়িতে তোলা হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কারও মাথা থেকে হাত সরিয়ে নিলে কী হয়, আরাবুলই তার উদাহরণ।’’ আরাবুল অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ। শনিবার তাঁকে বারুইপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ১০ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আদালতে যাওয়ার পথে আরাবুলের দাবি, ‘‘কাল যখন গুলি চলছে, তখন আমি নতুনহাটে ছিলাম না। আমার কোনও লোকও ছিল না। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ, তদন্ত করে প্রকৃত দোষীকে শাস্তি দিন। জমি রক্ষা কমিটি পরিকল্পনা করেই ওই ঘটনা ঘটিয়েছে।’’ জমি রক্ষা কমিটির পক্ষে নকশাল নেতা অলীক চক্রবর্তী এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় আরাবুল সরাসরি জড়িত। ওই সময় আরাবুল ও তাঁর ছেলের গাড়ি তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে ছিল। কার্যালয় থেকেই গুলি চলে।’’

হাফিজুল খুনে আরাবুল ছাড়াও তাঁর ছেলে হাকিবুল ও ভাই আজিজুর-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। তবে আর কেউ এখনও ধরা পড়েননি। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে মিছিলটি যখন নতুনহাট এলাকায় এসে পৌঁছয় তখন তৃণমূল কার্যালয়ে ছিলেন আজিজুর ও আরাবুল অনুগামীরা। দু’পক্ষের মধ্যে বোমা-গুলির লড়াই হয়। গুলিবিদ্ধ হন হাফিজুল মোল্লা। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

Arabul Islam West Bengal Panchayat Elections 2018 TMC Bhangar আরাবুল ইসলাম
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy