কেউ ছুটছেন বর্ধমান শহরের জাগ্রত সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দিতে। কেউ যাচ্ছেন পড়শি জেলা বীরভূমের পাথরচাপুড়িতে দাতাবাবার মাজারে নতুন চাদর চড়াতে। লক্ষ্য একটাই, এ যাত্রায় যেন ভোটের ডিউটির তালিকা থেকে নাম কাটা যায়।
তালিকায় নাম থাকলেই তো সেই ব্যাগ গুছিয়ে ব্যালট-বাক্স নিয়ে বুথের পথে হাঁটা। রাতে মশার জ্বালাতন। আর সকাল হলে তো কথাই নেই। অশান্তির ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকা দিনভর। এমনিতে এ বার পূর্ব বর্ধমানে গ্রাম পঞ্চায়েতের অর্ধেকের বেশি আসনে ভোটের আগেই জিতে গিয়েছে শাসক দল। কয়েকটি পঞ্চায়েত সমিতিও বিরোধীশূন্য। জেলা পরিষদের ৫৮টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনে তৃণমূল ছাড়া কোনও প্রার্থী নেই। ফলে এ বার ভোটের ডিউটির চাপ অনেকটাই কম।
তাতেও দিকে দিকে খোঁজ চলছে ডিউটি এড়ানোর ফিকিরের। বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদর এলাকার এক স্কুল শিক্ষক কপাল ঠুকে জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, সন্তানসম্ভবা স্ত্রী বাড়িতে একা। মে মাসেই প্রসব হওয়ার কথা। তাঁকে একা ফেলে ভোটের ডিউটিতে যাওয়া কি ঠিক হবে? ওই মাসে জেলার আরও জনা পাঁচেক ভোটকর্মী একই সময়ে বাবা হতে চলেছেন! জেলা নির্বাচন কেন্দ্রের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, আবেদনকারীদের চিকিৎসকের শংসাপত্র জমা দিতে বলা হয়েছিল। মাস কাটতে চলল, সেই শংসাপত্র জমা পড়েনি। নির্বাচন দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘কেউ কেউ তো ভেলোরে ব্লাড-সুগারের চিকিৎসার জন্য তড়িঘড়ি ট্রেনের টিকিটও কেটে ফেলেছেন। এমনও আবেদন পেয়েছি, যাতে বলা হয়েছে, তাঁদের মা-বাবা বা স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য বেঙ্গালুরু থেকে থেকে দিল্লির এইমস পর্যন্ত নাকি যেতে হবে! সব চিকিৎসাই ভোটের মাসে!’’