Advertisement
E-Paper

১৫ বছরের পুরনো সেই ভয়ই যেন ফিরে এসেছে

গত ১৪ এপ্রিলের গোলমালের সূত্র ধরেই ত্রাসের সেই স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন অনেকে। সে দিন চোপড়ার লক্ষ্মীপুরে এক কংগ্রেস প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো নিয়ে গন্ডগোল বাধে। ঘটনা গড়ায় তৃণমূল-কংগ্রেস সংঘর্ষে।

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ০৩:২৩
শাসকদের সঙ্গে বিরোধীদের টক্করে আতঙ্ক যেন ২০০৩-এর ফিরে এসেছে এ বারের ভোটে।

শাসকদের সঙ্গে বিরোধীদের টক্করে আতঙ্ক যেন ২০০৩-এর ফিরে এসেছে এ বারের ভোটে।

বামেদের তখন রাজ্য জুড়ে অপ্রতিরোধ্য একাধিপত্য। ২০০৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের কয়েক দিন আগে চোপড়ায় এক সিপিএম নেতা খুন হন। পরে পাল্টা খুন হন চার কংগ্রেস কর্মী। সেই পরিস্থিতিতে ভোট বয়কট করেছিল কংগ্রেস। সেই স্মৃতি স্থানীয় প্রবীণদের অনেকেরই মনে এখনও দগদগে। তাঁরা মনে করাচ্ছেন, সে বারে ভোটের দিন পথেঘাটে দাপিয়ে বেড়িয়েছিলেন বাম কর্মীরা। দেড় দশক পর শাসক দলের মুখ বদলেছে। ওই প্রবীণদের বক্তব্য, শাসকদের সঙ্গে বিরোধীদের টক্করে আতঙ্ক যেন ২০০৩-এর ফিরে এসেছে এ বারের ভোটে।

গত ১৪ এপ্রিলের গোলমালের সূত্র ধরেই ত্রাসের সেই স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন অনেকে। সে দিন চোপড়ার লক্ষ্মীপুরে এক কংগ্রেস প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো নিয়ে গন্ডগোল বাধে। ঘটনা গড়ায় তৃণমূল-কংগ্রেস সংঘর্ষে। তাতে গুলি-বোমা চলে বলে অভিযোগ। দু’জন গুলিবিদ্ধ হন। সংলগ্ন লালবাজারে গোলমাল ছড়ালে হুড়োহুড়ির মধ্যে পড়ে গিয়ে একজন মারা যান।

পরদিনই চোপড়ার নারায়ণপুরে এক বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ জমা পড়ে পুলিশের কাছে। আর এক বিজেপি কর্মীর বাড়িতে আগুন ধরানোর অভিযোগও জমা পড়ে। তিন দিনের মাথায় দাসপাড়ায় ফের গুলি-বোমা চলে। চোপড়ায় কয়েক দিন আগেই এক বিজেপি কর্মী খুন হন।

পরের পর গোলমালে ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আগে রাতে মোটরবাইকের আওয়াজে আতঙ্ক তৈরি হত। এ বারেও ফের সেই রহস্যময় আওয়াজ আর আতঙ্ক ফিরে এসেছে। পনেরো বছরের ব্যবধানে ত্রাসের চেনা ছবির মাঝেও অবশ্য দু’টি পঞ্চায়েত ভোট হয়ে গিয়েছে। ২০০৮-এ চোপড়ায় জেলা পরিষদের তিনটি আসনের মধ্যে কংগ্রেস দু’টি, বামেরা একটি পায়। গ্রাম পঞ্চায়েতের আটটির মধ্যে সাতটি আসন জেতে কংগ্রেস। ২০১৩ সালে জেলা পরিষদের দু’টি আসন বামেরা, একটি তৃণমূল দখল করে। পঞ্চায়েত সমিতির ২৪টির মধ্যে ১১টি বামেরা, কংগ্রেস সাতটি, তৃণমূল ছ’টি দখল করে। গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেস তিনটি, বামেরা তিনটি, তৃণমূল দু’টি আসন পায়। দু’পক্ষের তুল্যমূল্য শক্তি থাকায় এই দু’বারের ভোটে বড় কোনও গোলমাল হয়নি।

চোপড়ার প্রবীণ কয়েক জনের মতে, বামেদের সেই একাধিপত্যই বর্তমান শাসক দলের হাত ধরে ফিরে এসেছে। সেই দাপটেই চোপড়ার চুটিয়াখোর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭টি আসনের মধ্যে ১১টিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তারা। কংগ্রেস নেতা অশোক রায় অভিযোগ করেছেন, বোমা-গুলির দাপটেই জিতেছে তৃণমূল।

এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বিজেপি নেতা শাহিন আখতার পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলকে। শাহিন একসময়ে তৃণমূলে ছিলেন। পঞ্চায়েতের ভূমি কর্মাধ্যক্ষ নাজির আহমেদকে খুনের মামলায় তিনি অভিযুক্ত।

শাহিন অবশ্য বলেন, ‘‘সব মিথ্যে। এলাকাবাসী ভোট দিতে পারলে এ বার যোগ্য জবাব দেবেন।’’ পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি অবশ্য এই হুঁশিয়ারিকে পাত্তা দিতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘এখন উন্নয়নে সবাই খুশি। তাই কেউ অশান্তি বাধাতে এলে মানুষ ছেড়ে দেবে না।’’

উত্তর দিনাজপুরের এসপি শ্যাম সিংহেরও দাবি, ‘‘নির্বিঘ্নেই ভোট দিতে পারবেন সকলে।’’

(সহ-প্রতিবেদন: অভিজিৎ পাল)

West Bengal Panchayat Elections 2018 Panchayat Poll TMC BJP CPIM Congres
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy