Advertisement
E-Paper

এখানে হিংসা কোথায়! এক বেঞ্চে খোশগল্প তিন প্রার্থীর

বুথের পাশে একটি বেঞ্চে বসে এক জন বলে উঠলেন, ‘‘পিসি সকাল থেকে দেখিনি তো তোমাকে? কখন এলে?” শুনে অন্য জনের জবাব, “এই তো কিছুক্ষণ আগে এলাম। জলখাবার খেয়ে বেরিয়েছিস তো?”

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০৬:৫৯
আড্ডা: তিন দলের তিন প্রার্থী। মেমারির আমাদপুরে। ছবি: উদিত সিংহ

আড্ডা: তিন দলের তিন প্রার্থী। মেমারির আমাদপুরে। ছবি: উদিত সিংহ

ততক্ষণে খবর ছড়িয়েছে, হিংসার বলি এত জন। শাসক-বিরোধী সংঘর্ষের ছবি দেখাতে শুরু করেছে টিভি চ্যানেলগুলি। কিন্তু তাঁদের দেখে কে বলবে, তাঁরা প্রতিপক্ষ?

বুথের পাশে একটি বেঞ্চে বসে এক জন বলে উঠলেন, ‘‘পিসি সকাল থেকে দেখিনি তো তোমাকে? কখন এলে?” শুনে অন্য জনের জবাব, “এই তো কিছুক্ষণ আগে এলাম। জলখাবার খেয়ে বেরিয়েছিস তো?”

প্রথম জন সিপিএম প্রার্থী জুলি নাথ। তাঁর পাড়াতুতো পিসি তৃণমূলের প্রার্থী কেয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘পিসি-ভাইঝি’র সঙ্গে একই বেঞ্চে বসে চা খাচ্ছিলেন বিজেপি প্রার্থী মিতা মণ্ডলও। তাঁর কথায়, “সকাল থেকে এই বেঞ্চেই তিন জন মিলে গল্প করছি। চা খাচ্ছি। আমাদের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই।” এই তিন জনই পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ১ ব্লকের আমাদপুর পঞ্চায়েতের প্রার্থী। এরই মধ্যে মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম প্রার্থী সুতপা চক্রবর্তী এসে বলে উঠলেন, “আমাকে বাদ দিয়ে কী গল্প হচ্ছে? তোদের সঙ্গেই বসি।”

মেমারির প্রতিটি বুথ নিয়েই বিরোধীরা অভিযোগ করেছে। কিছুটা দূরে ছোট মোশগড়িয়া গ্রামে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে পালানোর ঘটনা ঘটছে। তখন আমাদপুর উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ৩ নম্বর সংসদে এ এক অন্য ছবি। লম্বা লাইনের মধ্যেই এক প্রসূতি ভোট দিতে এলেন। তাঁকে বুথে
ঢুকতে বাধা দিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার। সেই দেখে ছুটে এলেন তিন প্রার্থী। এক সঙ্গে দাবি করলেন, “অসুস্থ, প্রসূতি বা বয়স্কদের আগে বুথে ঢুকতে দিতে হবে। তাঁদের ভোটাধিকার সবার আগে।” লাইনে দাঁড়ানো অনেকেই তখন তিন দলের প্রার্থীকে দেখে বেশ অবাক।

বিরোধীদের যেখানে ‘সন্ত্রাসের’ এত অভিযোগ, সেখানে আপনি তৃণমূল প্রার্থীর সঙ্গে গল্পে মশগুল? জুলি বললেন, “তৃণমূল প্রার্থীকে আমি পিসি বলে ডাকি। একই পাড়ায় থাকি। তাই আমাদের খুব ভাব। ভোটের জন্য সে ভাব বদলাবে কেন?” পাশে বসে থাকা বিজেপির মিতা জানালেন, তিনি অন্য পাড়ায় থাকলেও প্রত্যেকেরই মুখ চেনা। ভোটের দিন জুলি-কেয়ার সঙ্গে তাঁরও ‘ভাব’ হয়ে গিয়েছে।

জুলির স্বামী পুলক নাথ কিংবা মিতার স্বামী আশিস মণ্ডলের কথায়, “মিলেমিশে থাকাটাই তো ভাল।” শাসকদলের প্রার্থী কেয়াদেবীও বলছেন, “প্রত্যেকের সংসার রয়েছে। পরিজন-পড়শি রয়েছে। সেখানে নিজেদের মধ্যে ভাব-ভালবাসা থাকটাই তো স্বাভাবিক।”

West Bengal Panchayat Elections 2018 Panchayat Poll Memari TMC BJP CPIM Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy