Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

নগ্ন করে নিগ্রহ চিত্র-সাংবাদিককে

সোমবার আলিপুর ট্রেজারি বিল্ডিংয়ে কলকাতা পুলিশের সামনে থেকে এক চিত্র-সাংবাদিককে মারতে মারতে তুলে নিয়ে গিয়ে উলঙ্গ করে যে-ভাবে মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে, তার নজির মেলা ভার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০৩
Share: Save:

নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাঁরা নেই। কোনও দলের হয়েও ছবি তুলছেন না। চিত্র-সাংবাদিকেরা তবু ভোট-হামলার শিকার। কেন? উঠছে প্রশ্ন।

জেলায় জেলায় হামলার ছবি তুলতে গিয়ে মারধর খেতে হচ্ছে, কেড়ে নেওয়া হচ্ছে ক্যামেরাও। কারও বা মোবাইল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি বয়ে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সোমবার আলিপুর ট্রেজারি বিল্ডিংয়ে কলকাতা পুলিশের সামনে থেকে এক চিত্র-সাংবাদিককে মারতে মারতে তুলে নিয়ে গিয়ে উলঙ্গ করে যে-ভাবে মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে, তার নজির মেলা ভার।

‘‘ক্যামেরাটা তুলতেই রে-রে করে তেড়ে এল ওরা। শুরু হল কিল-ঘুসি। একটা ঘরে নিয়ে গিয়ে তল্লাশির নামে আমাকে প্রায় উলঙ্গ করে দু’ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। হুমকি দেওয়া হয়, আমার ওই অবস্থার ছবি ফেসবুকে আপলোড করে দেওয়া হবে। অন্য চিত্র-সাংবাদিকেরা ওই ঘরে চলে আসায় আমি রক্ষা পাই,’’ মঙ্গলবার বললেন মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ওই চিত্র-সাংবাদিক। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা হয়েছে তাঁর।

শাসক দলের বিতর্কিত নেতা অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট) বলেছেন, রাস্তায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন। চিত্র-সাংবাদিকেরা সেই ‘উন্নয়ন’-এর হাতেই আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। সোমবারের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক চিত্র-সাংবাদিক বলেন, ‘‘পুলিশের সামনেই নিগ্রহ চলছে। সব দেখেও পুলিশকর্মীদের কেউই এগিয়ে আসছেন না।’’

মনোনয়ন পর্বে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের উপরে হামলার ছবি তোলায় চিত্র-সাংবাদিকেরা কোপে পড়ছেন বলে অভিযোগ। হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। পূর্ব মেদিনীপুরের এক চিত্র-সাংবাদিক জানান, হকি স্টিক দিয়ে পেটানোর ছবি তোলায় তাঁকে তাড়া করা হয়েছিল। একটি দোকানে লুকিয়ে পড়েও রক্ষা পাননি তিনি। সেখান থেকে টেনে বার করে চড়থাপ্পড় মারা হয় সমানে। ক্যামেরা থেকে কার্ড বার করে সব ছবি মুছে দেওয়া হয়। ‘‘পরে রিকভারি সফটওয়্যার দিয়ে কিছু ছবি বার করে ছাপা হয় পরের দিনের কাগজে। ওরা বাড়িতে চড়াও হয়ে হুমকি দেয় পরিবারের সকলকে,’’ বললেন ওই চিত্র-সাংবাদিক।

দুর্গাপুর, নলহাটি, মহম্মদবাজার, রঘুনাথগঞ্জ, কোচবিহার-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গুলি-বোমা-তিরের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে জখম হয়েছেন সাংবাদিক, চিত্র-সাংবাদিকেরা।

কী করছে প্রশাসন? ‘‘আমরা তো এ-সব জানতেই পারছি না। কেন আমাদের জানানো গেল না, খোঁজ নিচ্ছি,’’ বললেন এক নবান্ন-কর্তা। কোনও মন্তব্য করতে চাননি তথ্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE