Advertisement
E-Paper

এটা কি আদৌ ভোট! প্রশ্ন তৃণমূল প্রার্থীর

ভোট কেমন হচ্ছে? প্রশ্ন শুনেই গলা তুললেন নাজিফা, ‘‘এটা কি আদৌ ভোট হচ্ছে? নির্দল প্রার্থীর লোকেরা তো ভোট লুট করছে!’’

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০৭:০৩
গ্রাফিক:শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক:শৌভিক দেবনাথ।

বুথের সামনে জনা কুড়ির লাইন। আর অদূরে গাছতলায় প্রায় তিরিশ জনের জটলা। তার মাঝামাঝি একেবারে একা দাঁড়িয়ে রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী নাজিফা খাতুন।

ভোট কেমন হচ্ছে? প্রশ্ন শুনেই গলা তুললেন নাজিফা, ‘‘এটা কি আদৌ ভোট হচ্ছে? নির্দল প্রার্থীর লোকেরা তো ভোট লুট করছে!’’

পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী তপন মাজির নালিশ আরও চড়া, ‘‘পুলিশের সামনেই দলের এজেন্টকে বুথ থেকে বের করে দিয়ে অবাধে ছাপ্পা মারল নির্দলের লোকজন। যা চলল তাতে শুধু আমি হারব না, দলের ভবিষ্যৎটাও হেরে যাবে।’’

ভোটের সকালে এমনই কথা শুনল কেশপুর। আর সকাল থেকে দেখল লাঠি-দা-টাঙ্গির দাপট। সামলাতে এসে মার খেল পুলিশও।

শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে কোচবিহার, নদিয়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা থেকে দুই বর্ধমান— ভোটের দিনে তৃণমূল বনাম নির্দলদের এই লড়াই দেখল রাজ্য। এই নির্দলরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আসলে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ অংশ।

সকালে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জে দফরপুরের পাঁচটি বুথে তৃণমূলের এজেন্টদের বার করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে নির্দলের বিরুদ্ধে। নদিয়ার তাহেরপুরে নির্দল-তৃণমূলের লড়াইয়ে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয় বিশ্বজিৎ হালদার নামে এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পূর্ব বর্ধমানে সব থেকে বেশি গোঁজ প্রার্থী ছিল ভাতারে। স্থানীয় সন্তোষপুরে নির্দল সমর্থকেরা শাসকদলের প্রার্থী জাহানারা খাতুনকে মারধর করে, পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। মেমারি ২ ব্লকের কুচুট পঞ্চায়েতের ছোটমশাগড়িয়া গ্রামে সকাল থেকেই দাঁড়িয়ে থেকে দাপটে ভোট করিয়েছেন নির্দল প্রার্থী বেবিনা বেগম। ঘণ্টা দুয়েক পরেও তৃণমূল সেখানে এজেন্ট বসাতে পারেনি। পশ্চিম বর্ধমানের কেন্দায় তৃণমূল নেতাদের মারধরের অভিযোগ ওঠে নির্দল প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা ২ পঞ্চায়েতের ঘোষালের আবাদ গ্রামে ভোটের সকালেই কানাই পারুই নামে নির্দল প্রার্থীকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে বুথ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কানাইয়ের সমর্থকেরা বাধা দিলে দু’পক্ষের বোমা-গুলির লড়াই চলে। গুলিতে জখম হন দুখে পাড়ুই, কংস পারুই। মনু পারুইকে কোপায় হামলাকারীরা। হামলার অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূল।

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সহ-সভাপতি তথা জেলা পরিষদ প্রার্থী আব্দুল জলিল আহমেদ হাড়িভাঙায় বুথের ভিতর ঢুকে ‘নির্দল’ প্রার্থী ও কর্মীদের হুমকি দেন বলে অভিযোগ। যদিও আব্দুলের দাবি, “বুথ জ্যামের খবর পেয়ে গিয়েছিলাম।’’ উত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকাতেও তৃণমূল বনাম নির্দল সংঘর্ষ বেধেছে। গোয়ালপোখরের ঝাড়বাড়ি বুথে দু’পক্ষের ১২জন জখম হয়েছেন। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। হুগলির আরামবাগও সাক্ষী থেকেছে দু’পক্ষের বোমা-গুলির লড়াইয়ের। জখম হয়েছেন অন্তত ছ’জন। হাওড়ার বালি-জগাছা ব্লকে তৃণমূলের জেলা পরিষদ প্রার্থী কল্যাণ ঘোষ দিনভরই বুথ দখলের অভিযোগ তুলেছেন। ঠারেঠোরে বুঝিয়েছেন, গোলমাল পাকাচ্ছে দলের বিক্ষুব্ধরাই। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মন্ত্রী অরূপ রায় মেনে নিয়েছেন, ‘‘এমন পরিস্থিতি কাম্য নয়।’’

West Bengal Panchayat Elections 2018 Panchayat Poll Violence TMC BJP Congress CPIM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy